Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

মোরেলগঞ্জে আমন ক্ষেতে পোকার আক্রমন, কৃষকদের মাথায় হাত কৃষি সংবাদবাগেরহাট

মোরেলগঞ্জে আমন ক্ষেতে পোকার আক্রমন, কৃষকদের মাথায় হাত

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার আমন ক্ষেতে পাতা মোড়ানো লেদা পোকার ব্যাপক আক্রমন দেখা দিয়েছে। নিরসনে ক্ষেতে ঔষধ ছিড়িয়েও কোন কাজ হচ্ছেনা বলে কৃষকরা দাবি করেছে। ফসলহানির আশঙ্কায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কিংবা সংশ্লিষ্টদের তেমন কোন ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়নি। 

উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও ১ পৌর সভায় স্থানীয় আমন ধান ২৩ হাজার ৫২০ হেক্টর ও উফশী জাতের ৩ হাজার ৪৮০ হেক্টর  জমি সহ   মোট ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৮ হাজার ২৭৬ মেট্রিক টন  এর মধ্যে রয়েছে স্থানীয় আমন ধান ৩৮ হাজার ৮১৮ মেট্রিক টন  ও উফশী জাতের ৯ হাজার ৪৫৮ মেট্রিক টন । তবে আমন ক্ষেতে পোকার আক্রমনে চলতি বছরে কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবেনা বলে কৃষকরা জানায়। মাঠের পর মাঠ আমন ধানের  পাতা শুকিয়ে সাদা হয়ে গেছে। দেখতে খড় কুটার মত। আমন ধানের মোচা বের হওয়ার মুহুর্তে পাতা মোড়ানো লেদা পোকার আক্রমন শুরু হয়েছে। অনেক চাষীরা বলছে পামরি পোতা ,কেউ বলছে ফড়িং পোকার আক্রমন। তবে উপজেলা সদর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেছেন, এটা পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমন। এসব পাতা মোড়ানো পোকা ধান গাছের মূল শীষ কেটে ফেলে এবং রাতারাতি ক্ষেতের পর ক্ষেত কেটে ক্ষেত সাবাড় করে দিতে পারে । কৃষকরা এসব ক্ষেতে বিভিন্ন ধরনের ঔষধ ছিড়িয়েও নিয়ন্ত্রনে আনতে পারছেনা।
 
সদর ইউনিয়নের পশ্চিম সরালিয়া গ্রামের ফজলুর রহমান ও লতিফ শেখ জানান, পোকা নিরসনে একাধিকবার এনডিন ব্যবহার করতে হয়েছে। পোকা মোটামুটি নিয়ন্ত্রনে। হোগলাবুনিয়া ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শংকর কুমার দাস জানান, প্রতিটি ইউনিয়নে এ পোকার আক্রমন কম বেশি দেখা দিয়েছে। পোকার আক্রমন দেখা দিলে বিঘা প্রতি ভিতরাকো ১০ গ্রামের ১ প্যাকেট অথবা  কোরাজন ২ প্যাকেট স্প্রে করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছে সদর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাকির হোসেন। উদ্ভিদ সংরক্ষন বিশেষজ্ঞ মেজবাহ আহমেদ বলেন, আগে ভাগে ব্যবস্থা গ্রহন করায় পোকার আক্রমন এখন নিয়ন্ত্রনে । ১৫ দিনে মধ্যে এটা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে চলে আসবে।  উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনুপম রায় জানান, চলতি বছরে ক্ষেতে পোকার আক্রমনের পূর্বেই বিভিন্ন ই্উনিয়নে সচেতনামূলক কৃষক সমাবেশ করা হয়েছে। যার কারনে গতবছরের তুলনায় পোকার আক্রমন অনেক কম।  যেটুকু আছে তাতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোন কারন নেই। তবে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের  ইউনিয়ন পর্যায়ের দায়িত্ব কর্তব্য পালনে অনীহার অভিযোগ অনেক। এরা প্রায়ই অলস সময় পাড় করে। অনেই ইউনিয়নের কৃষকরা পরামর্শ তো দূরের কথা সংশ্লিষ্ট উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের চেনেননা  এবং  কখনো দেখেননি। এদের মধ্যে অনেকে কাগজ বলমে মাঠে থাকলেও বাস্তবে মাটি এবং কৃষকের সাথে কোন সম্পর্কের মিল খুজে পাওয়া যায়নি। অফিসের আসে পাসের রেষ্টুডেন্ট এবং চায়ের দোকানে চায়ের কাপে সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তাদের। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ছে মোরেলগঞ্জ উপজেলার একাধীক ইউনিয়নের কৃষক ও আমন চাষিরা। বেকায়দায় পড়ছে সরকারের কৃষি উন্নয়ননের চাবিকাঠি। মোরেলগঞ্জ উপজেলার শত শত কৃষকদের প্রানের দাবি সংশ্লিষ্টি কর্তৃপক্ষ একটু সজাগ দৃষ্টি দেবেন কি ?