Opu Hasnat

আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার ২০২৪,

গলায় ভর দিয়ে লিখেই পাশ করেছে শফিক নেত্রকোনা

গলায় ভর দিয়ে লিখেই পাশ করেছে শফিক

জন্মের সময়ই দুই হাত ছিল না মো. মাসুদুর রহমান এর। নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার বাকলজোড়া ইউনিয়নের নাগেরগাতি গ্রামের দিনমজুর সাহেব আলীর ছেলে মাসুদ এর পড়াশোনার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি তার শরীরিক প্রতিবন্ধকতা। দুই হাত ছাড়া জন্মগ্রহণ করা ছেলেটি, গলা এবং হাতের কনুই দিয়ে লিখেই এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ৩.৭৬ পয়েন্ট অর্জন করেছে।

রোববার বিকেলে মাসুদের শারীরিক অক্ষমতার কথা তুলে ধরে তার বাবা সাহেব আলী বলেন, মাসুদ ওই এলাকার নবারুন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। অন্যান্য শিশুদের মতো স্বাভাবিকভাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে জন্মের পর থেকে ছেলের ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতাম। কিন্তু তার মেধা, কঠোর পরিশ্রম আর প্রতিনিয়ত ক্লাশে ভালো ফলাফলের কথা শুনে নতুন আশায় বুক বাঁধতে শুরু করি।  

মাসুদ এর মা হামিদা খাতুন বলেন, আর দশজন শিশুর মতো স্বাভাবিকভাবেই খাওয়া-দাওয়া, গোসল সব কিছুই করতে পারেনা মাসুদ। তার পরেও তার অদম্য ইচ্ছায় গলা এবং হাতের কনুই দিয়ে লিখে এ ফলাফল করেছে। আপনারা সবাই তার জন্য দোয়া করবেন। 

নবারুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অশোক কুমার ভাদুড়ী বলেন, “শিক্ষকতা জীবনে মাসুদের মতো মেধাবী শিক্ষার্থী কমই দেখেছি। শুধু লেখাপড়া নয়, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডেও অন্যদের থেকে অনেক ভালো মাসুদ। প্রবল ইচ্ছাশক্তি আর মেধা দিয়েই দুই হাত ছাড়া জন্মগ্রহণ করা মাসুদ এবার এসএসসি পরীক্ষায় ৩.৭৬ পেয়ে সাফল্য অর্জন করেছে শুনে মহান সৃষ্টি কর্তার কাছে কৃতজ্ঞ।

উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো. নাসির উদ্দিন বলেন, আমি ওই স্কুলে পরিদর্শন করতে গিয়ে প্রায়ই কথা বলতাম মাসুদ এর সাথে। সে বলতো পরনির্ভরশীল না হয়ে লেখা পড়া শিখে নিজেই কিছু করে বাবা মায়ের পাশে দাঁড়াতে চায়। নিজের স্বপ্নকে সত্যি করতে, গলা এবং হাতের কনুই দিয়েই লেখা শুরু করেছিল সে। প্রথম দিকে সহজ না হলেও, সকল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করেই পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে মাসুদ। আমি তাঁর জীবনের সাফল্য কামনা করছি। সেই সাথে এলাকার বিত্তবানদের মাসুদের পাশে দাঁড়াতে অনুরোধ জানাই।