Opu Hasnat

আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার ২০২৪,

নড়াইলে স্কুলছাত্রকে রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ নড়াইল

নড়াইলে স্কুলছাত্রকে রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ

নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর ইউনিয়নের বেতেঙ্গা গ্রামে স্কুলছাত্র সজীবকে রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মারাত্মক আহত স্কুলছাত্র সজীব বালা বেতেঙ্গা গ্রামের নৃপেন বালার ছেলে। গুরুতর জখম সজীব বালা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। 

আহত সজীবের পরিবার ও এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, তুচ্ছ ঘটনায় সোমবার (২৫ মে) দুপুরের দিকে প্রতিবেশি শিমুল বিশ্বাস, চিন্ময় বিশ্বাস ও চিন্ময় বিশ্বাসের ছেলে লেলিন বিশ্বাস বেধড়ক মারপিট করে সজীবকে। তাদের লোহার রড ও শাবলের আঘাতে ক্ষত বিক্ষত হয় সজীবের মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ। ঘটনার পর পরই মারাত্মক রক্তাক্ত জখম অবস্থায় সজীবকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৬ মে) আসামীদের বিরূদ্ধে নড়াইল সদর থানায় এজহার দায়ের করা হয়েছে। 

স্থানীয়রা জানায়, চিন্ময় বিশ্বাসের মেয়ে টুম্পা বিশ্বাস (১৫) স্থানীয় তুলারামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণিতে পড়ে। সজীব বালা (১৬) একই বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণিতে পড়ে। একই বিদ্যালয়ে পড়াশুনা, একই পাড়ায় বসবাস ও একসাথে বিদ্যালয়ে যাতায়াতের সুবাদে তাদের মধ্যে প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। তাদের এ সম্পর্ক মেনে নিতে না পারায় চিন্ময় বিশ্বাস, ভাই শিমুল বিশ্বাস ও ছেলে লেলিন বিশ্বাসকে নিয়ে পরিকল্পিত ভাবে সজীব বালার উপর হামলা চালায়। সজীবদের বাড়ির উপর গিয়ে হামলা করলে মার খেয়ে সজীব পালানোর জন্য দৌড় দেয়। তার পিছু নেয়। কিছু দুর গিয়ে আহত সজীব পড়ে গেলে লোহার রড ও শাবল দিয়ে পিটিয়ে তাকে রক্তাক্ত জখম করে। লোকজন বাঁধা দিলেও কোন কথা না শুনে তারা বেধড়ক মারপিট করে। এক পর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়লে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায়। স্থানীয়রা আরোও জানায় চিন্ময় বিশ্বাস ধনাঢ্য এবং সজীবের পরিবার গরীব হওয়ায় এমন আচরন করা হয়েছে সজীবের প্রতি। 

এদিকে টুম্পা বিশ্বাসের (১৫) পরিবারের দাবি তাদের মেয়ে টুম্পাকে সজীব মোবাইলে উত্যক্ত করে। তাই নিয়ে উত্তেজনা বশত: মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। 

সজীবের পরিবারের দাবি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চিন্ময় বিশ্বাসের ভাই রাজিব বিশ্বাসের নির্দেশে তারা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সজীবকে হত্যার জন্যই এ হামলা চালিয়েছে। হামলার সময় চিন্ময় প্রকাশ্যেই ছেলে লেলিনকে বলেছে ওকে খুন কর। সজীব বার বার প্রাণ ভিক্ষা চাইলেও তাদের মন গলেনি। তারা নির্মম নিষ্ঠুর ভাবে পিটিয়ে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। সংবাদ পেয়ে ওই এলাকার দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা এসআই বরুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। উভয় পক্ষের সাথে কথা বলেছেন। 

সজীবের পরিবারের দাবি প্রভাবশালী চিন্ময় বিশ্বাস গুরুতর আহত সজীবকে ঠিকমত চিকিৎসা করার সুযোগ না দিয়ে মঙ্গলবার (২৬ মে) যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপতাল হতে বাড়িতে নিয়ে আসতে বাধ্য করেছে। বুধবার (২৭ মে) সজীবের বাবা নৃপেন বালাকে জোর করে স্থানীয় তুলারামপুর ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে বিষয়টি মিমাংসা জন্য চাপ দেয়। 

ইউপি চেয়ারম্যান বুলবুল আহমেদ জানিয়েছেন, আমলযোগ্য অপরাধ হওয়ায় এবং থানায় এজহার দাখিল করায় তিনি কোন সালিশ করেননি। দু’পক্ষকে পুনরায় দ্বন্দ্ব না করে আহত সজীবকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়ার অনুরোধ করেছেন। 

নড়াইল সদর থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন এজহার পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।