Opu Hasnat

আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার ২০২৪,

নিজের লেখা বই বিক্রি করতে পিটিআই সুপারের অভিনব পন্থা ঝিনাইদহ

নিজের লেখা বই বিক্রি করতে পিটিআই সুপারের অভিনব পন্থা

করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে সরকারী অফিস আদালত যখন বন্ধ তখন প্রশিক্ষন ভাতা প্রদানের কথা বলে ঝিনাইদহ পিটিআই’র সুপার আতিয়ার রহমান নিজের লেখা একটি অখ্যাত বই জোর পুর্বক শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে পিটিআইতে প্রশিক্ষণরত শিক্ষকদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন, প্রতি বছর “বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষায় কিছু ভাবনা ও করণীয়” শীর্ষক লেখা বইটি সুপার আতিয়ার রহমান বিক্রি করে থাকেন। বই না কিনলে শিক্ষকদের ফেল করার হুমকী দেখান। 

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, বর্তমান সুপার যোগদানের পর থেকে নানা ফন্দি ফিকির খাটিয়ে প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন। শিক্ষকদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে প্রশিক্ষণ ভাতা থেকে টাকা কেটে রেখে তিনি পকেটস্থ করতেন। 

২০১৭/১৮ অর্থ বছরের এক শিক্ষার্থী জানান, সুপার আতিয়ার রহমান ভাতা থেকে টাকা কাটার পরও সংস্থাপন চার্জ, পিটিআই মসজিদে এসি লাগানোর জন্য টাকা আদায়, বাগান পরিচর্চাার জন্য ও বিভিন্ন দিবস পালনের জন্য টাকা আদায় করে থাকেন। তিনি বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের পরীক্ষার রেজাল্ট জালিয়াতি করেন বলেন অভিযোগ। 

কালীগঞ্জের এক শিক্ষক অভিযোগ করেন, সুপার আতিয়ার রেজাল্ট জালিয়াতি করে তার কাছে টাকা দাবী করেন। এরপর তিনি তার ফলাফল চ্যালেঞ্জ করে দেখেন তিনি পাস করেছেন। সুপার কম্পিউটার কারসাজি করে নকল মার্কসীট তৈরী করে শিক্ষকদের কাছে টাকা দাবী করতেন। এছাড়া তিনি পিটিআই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র ভর্তির নামেও তিনি টাকা হাতিয়ে নিতেন। এ নিয়ে পত্রিকায় তথ্য ভিত্তিক সংবাদ প্রকাশিত হলে দুর্নীতিবাজ সুপারকে বাগেরহাট বদলী করেন। এরপর তিনি ঝিনাইদহের এক এমপির কাছ থেকে ডিও লেটার নিয়ে বদলী ঠেকাতে সমর্থ হন। তার এই দুর্নীতি নতুন কিছু নয়। 

করোনা আতংকের মধ্যে সুপার আতিয়ার রহমান গত ৭ মে ৬ উপজেলা থেকে প্রশিক্ষন নেওয়া প্রাথমিক বিদ্যায়ের প্রায় দুই’শ শিক্ষককে একত্রিত করে নিজের লেখা বই বিক্রি করেছেন। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ডিপিএড শিক্ষার্থীরা এ অভিযোগ করে বলেন, এ সময় কোন সামাজিক দুরত্ব বজায় ছিল না। কয়েকজন শিক্ষক ও ডিপিএড শিক্ষার্থী জানান গণপরিবহন বন্ধের এই সময়ে তাদের প্রশিক্ষণ ভাতা না দিলেও হতো। ভাতা গ্রহণের জন্য জেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে পিটিআই এ আসতে তাদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। তাদের ভাষ্য পিটিআই সুপার আতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হলেও অজ্ঞাত কারণে তা ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে। 

এ বিষয়ে সুপার আতিয়ার রহমান তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ডিপিএড শিক্ষার্থীদের চাপে পড়েই তিনি প্রশিক্ষণ ভাতা দিতে বাধ্য হয়েছেন। শিক্ষকরা সবাই স্বেচ্ছায় তার লেখা বইটি কিনেছেন এবং কাউকে তিনি চাপ প্রয়োগ করেননি বলে জানান। তিনি খুলনা বিভাগের সেরা পিটিআই সুপার এবং জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ পিটিআই সুপার নির্বাচিত হওয়ায় কুচক্রি মহল তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন বলে মনে করেন।