Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

করোনা যুদ্ধা মুন্সীগঞ্জের কলম সৈনিক মাহাবুব আলম বাবু মিডিয়ামুন্সিগঞ্জ

করোনা যুদ্ধা মুন্সীগঞ্জের কলম সৈনিক মাহাবুব আলম বাবু

৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ আমি করতে পারিনি, করোনা সংক্রমণ রোধ আমার কাছে নতুন এক মুক্তিযুদ্ধ। করোনার বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে আমি মারা গেলে আমার পরিবারের সকলেই বিশেষ করে আমার মেয়েরা যেন গর্ববোধ করে। বীরের মতো অকোপটে এমনটাই বললেন মুন্সীগঞ্জে করোনা যুদ্ধে ছুটে চলা এক বীর কলম সৈনিক মাহাবুব আলম বাবু। যিনি বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস প্রার্দূভাব এড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছেন। 

মুন্সীগঞ্জের সিনিয়র এই সাংবাদিকের নানা মুখি উদ্যোগে জনসাধারনের মাঝে স্থানীয় সাংবাদিকদের কর্মকান্ড নিয়ে ইতিবাচক মনভাব তৈরি হয়েছে। কি করেন নি তিনি ! মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রামক রোধে স্কুল কলেজ বন্ধের দিন ১৮ মার্চ থেকে মানব সেবায় বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেন তিনি। দৈনিক আমাদের অর্থনৈতির মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

গেলো ২৬ মার্চ থেকে প্রকাশ পায় শুরু হয় তার খাদ্য উপহার ও জীবানুনাশক স্পে অভিযান যা আজ ৭ মে পর্যন্ত অব্যাহত রেখেছেন তিনি। যার মধ্যে কর্মহীন দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারে বাড়ী বাড়ী পৌছে দিচ্ছেন খাদ্য উপহার। প্রতিটি খাদ্য সামগ্রীর প্যাকেটে থাকছে- চাল, আটা,  তেল, মুসুরি ডাল, মাক্স, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হ্যান্ড গ্লাপ্স।

পাশাপাশি জীবন বাজি রেখে শহর থেকে গ্রাম বা পাড়া মহল্লার আনাচে কানাচে করে যাচ্ছেন জীবানুনাশক স্পে। এতে করে সাধারণ মানুষের ভাইরাস সংক্রমন রোধে ব্যাপক ভুমিকা পালন করছে। 

তার এমন উদ্যোগে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্ধিপনা লক্ষ করা গেছে। কোথাও স্বশরীরে চালিয়ে যাচ্ছেন জীবানুনাশক স্প্রে কার্যক্রম, আবার কখনো বিভিন্ন পাড়ামহল্লার যুবকদের অনুপ্রেরনা দিচ্ছেন এবং তাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন জীবানুনাশকসহ স্পে মেশিন। 

‘পরিবারের পাশে থাকি’ এ স্লোগান বুকে ধারন করে তিনি ইতোমধ্যে নির্দিষ্ট পরিবারের কাছে উপহারের খাদ্যসামগ্রী পোছে দেয়ার প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে কার্যক্রম ভালো ভাবেই শেষ করেছেন । এখন চলছে তৃতীয় ধাপের প্রস্তুতি। 

শুধু কর্মহীন দরিদ্র বা মধ্যবিত্তই নয় পাশাপাশি অব্যাহত রেখেছেন ভাসমান ও ছিন্নমূলদের মাঝে সরাসরি খাদ্যসামগ্রী বিতরণ। তার এমন উদ্যোগে যেসব এলাকা বা পাড়া মহল্লা উপকৃত হয়েছে তার মধ্যে নয়াগাঁও, গজারিয়াকান্দি, গুহেতকান্দি, মুন্সীরহাট, পঞ্চসারসহ, মুন্সীগঞ্জ পৌরএলাকার মুন্সীগঞ্জ সদর থানা, মাতৃস্বাস্থ্য কেন্দ্র, পুলিশ সার্কেল অফিস, মালপাড়া, জগধাত্রীপাড়া,  বাগমামুদালীপাড়া বটতাল, খালইস্ট, ইসলামপুর, শ্রীপল্লি, ইদ্রাকপুর, মানিকপুর, জমিদারপাড়া, সদররোড়, জুবলিরোড, কলেজপাড়া, সুপারমার্কেট, হাসপাতাল রোড, থানারপুল মোড়, হাটলক্ষীগঞ্জ, থানাকাউন্সিল, কোর্টগাও, কাচারী, বাজার এলাকসহ বিভিন্ন পাড়া মহল্লার ডাস্টবিন, মসজিদ, মন্দির, প্রেসক্লাব, ওষুধের দোকানসহ বাসাবাড়িতে প্রায় ২শতাধিক জীবানুনাশক স্প্রে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন এ কলম সৈনিক।

তার এমন মহতি উদ্যোগের বিষয় যানতে চাইলে সাংবাদিক মাহাবুব আলম বাবু বলেন, মুক্তিযুদ্ধ করতে পারিনি, করোনা সংক্রমণ রোধ আমার কাছে নতুন এক মুক্তিযুদ্ধ। করোনার বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে আমি মারা গেলে আমার পরিবারের সকলেই বিশেষ করে আমার মেয়েরা যেন গর্ববোধ করে। 

তিনি আরো বলেন, আমার পরিবার, বন্ধুবান্ধব থেকে শুরু করে সহকর্মি সাংবাদিক, শিক্ষক, ডাক্তার, আইনজীবী, বাবসায়ী, ইমাম,গৃহিণী, প্রবাসীসহ সাধারণ মানুষের আংশগ্রহণ ও ভালবাসায় সিক্ত হচ্ছি। সম্মিলিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে জীবানুনাশকসহ ৩শতাধিক স্প্রেকর্ক ও খাদ্য সামগ্রী নিয়ে এ সময়ে প্রায় সাড়ে শতাধিক পরিবারের কাছে যেতে পেরেছি। দিন-রাত টানা ৩১ দিন ধরে চলমান অক্লান্ত কার্যক্রমের ফলে ‘নিজ পরিবারকে সময় দিতে পারছিনা। ফলে কিছুতেই ঘরবন্দী হতে পারছিনা। নিজের শতকষ্ট হলেও মানুষ যাতে ভালো থাকে সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছি। আমি মনে করে প্রতিটা মানুষ আমার পরিবারে সদস্য । তাই বর্তমানে নতুন ধারনার আলোকে-“পরিবারের পাশে থাকি”-এর কার্যক্রম শুরু করেছি যা সংকটকালিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলেও যানান করোনা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া নির্ভিক কলম সৈনিক মাহাবুব আলম বাবু।