ছেউড়িয়ায় ভেঙ্গেছে সাধুর হাট কুষ্টিয়া /  বিশেষ সংবাদ / 
ফকির লালন শাহ্ এর তিরোধান দিবসে ৫ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠান শেষ হচ্ছে আজ। এরইমধ্যে বাউলরা আখড়াবাড়ি ছেড়ে রওনা হয়েছেন নিজ নিজ আশ্রমের উদ্দেশ্যে। তারা বলছেন দেশব্যাপী এই মহামিলনের শিক্ষা মানবপ্রেম ছড়িয়ে দেবেন।
আজ মঙ্গলবার সকালে আখড়াবাড়ী ঘুরে দেখা গেছে, দুর-দূরান্ত থেকে আসা বাউলরা অনেকেই নিজ নিজ আস্তানা ছেড়ে বিছানাপত্র গুছিয়ে রওনা হয়েছে।
তবে যাওয়ার আগে আঁখড়া বাড়ির পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। গুরুকে বারবার প্রনাম ও নানা রকম ভক্তি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিদায় নেন শিষ্যরা। গুরু ভক্তি আর সিদ্ধ মন নিয়ে বিদায় নেয়ার সময় অনেক বাউল তাদের চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। আবার দেখা হবে সাঁইজির উদাসী ডাকের টানে।
তাদের আবার দেখা হবে লালনের দোল উৎসবে। সাধুরা জানালেন আত্মিক শান্তি ও মনোবাসনা পূর্ণ শেষে তারা ফিরছে নিজ নিজ গন্তব্যে।
অহিংস মানবতা প্রতিষ্ঠায় আপন মোকামে গুরুর চরণ ছুয়ে দিক্ষা নিয়ে ভক্তি নিবেদন করে শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছে অনেক বাউল। সমাজ-ইতিহাসের ধারায় বিচার করলে বলা যায়, গ্রামবাংলার মানবতাবাদী মুক্তবুদ্ধির আন্দোলনের প্রাণপুরুষ ছিলেন লালন ফকির। সামাজিক ভেদনীতি, শ্রেনী-বৈষম্য, বর্ণ, শোষণ, জাতপাতের কলহ, সমস্ত-নিগ্রহও সা¤প্রদায়িক বিরোধের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন উচ্চকন্ঠ। লালনের নাম আজ দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্বের প্রতিটি দেশে উচ্চারিত হয়। একজন গ্রাম্য নিরক্ষর সাধকের এ অর্জন ও প্রতিষ্ঠা স্বভাবতই বিস্ময় জাগায় মনে। মানুষের প্রতি মানুষের শোষন-বঞ্চনা-অবিচারের চির অবসান কামনা করে সমাজমনস্ক সাধক লালন শ্রেনীহীন শোষনমুক্ত এক মানবসমাজের স্বপ্ন দেখেছেন।
এদিকে লালন তিরোধান উৎসবের সাধুদের হাট ভাঙ্গলেও অনুষ্ঠান চলবে আজ রাত অবধি। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭ টায় ৫ম দিনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আবদুস সামাদ।