Opu Hasnat

আজ ২৯ নভেম্বর বুধবার ২০২৩,

নড়াইলে চাঁদা দাবির সংবাদ প্রকাশ করায় যুগান্তরের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা নড়াইল

নড়াইলে চাঁদা দাবির সংবাদ প্রকাশ করায় যুগান্তরের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা

যুগান্তরের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও এক প্রধান শিক্ষক’র নামে মানহানি মামলা হয়েছে। নড়াইল সদর উপজেলার বামনহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতির বিরূদ্ধে চাঁদা না পেয়ে অন্যায়ভাবে প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করার সংবাদ প্রকাশ করায় যুগান্তর পত্রিকার বিরূদ্ধে মানহানি মামলা দায়ের করেছেন ওই সভাপতি সুশান্ত বিশ্বাস। গত ২২ সেপ্টেম্বর ‘নড়াইলে চাঁদা না দেয়ায় শিক্ষক বরখাস্ত’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করায় যুগান্তরের বিরূদ্ধে বিদ্যালয়ের সভাপতি সুশান্ত বিশ্বাস বাদী হয়ে ১৪ অক্টোবর  নড়াইল বিজ্ঞ আমলী আদালতে এ মামলা দায়ের করেছেন।  মামলা নং-এমপি ১১০/১৫। মামলায় আসামীরা হলেন- যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, যুগান্তরের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি মোঃ শাহীদুল ইসলাম শাহী এবং ওই বিদ্যালয়ের বরখাস্তকৃত শিক্ষক দীপক কুমার সাহা। বিজ্ঞ বিচারক বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য নড়াইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।

জানা যায়, প্রধান শিক্ষক দীপক কুমার সাহা ৮ সেপ্টেম্বর নড়াইল জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি/সম্পাদক বরাবর লিখিত অভিযোগ করে জানান, তার নিকট ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছেন বামনহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি সুশান্ত কুমার বিশ্বাস। চাঁদা না দেয়ায় প্রধান শিক্ষককে ১৭ সেপ্টেম্বর সাময়িক বরখাস্ত করে ২১ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে এ বরখাস্তের নোটিশ ঝুঁলিয়ে দেন। যথাযথ রেজুলেশনসহ যাবতীয় নিয়মনীতিকে উপেক্ষা করে তাকে অন্যায়ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক আরোও অভিযোগ করেন, তার বিরূদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র ষড়যন্ত্র করে আসছে। তাছাড়া সুশান্ত বিশ্বাস বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ার জন্য ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে তার পক্ষে কাজ করতে প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করেছিলেন। সে অন্যায় আবদার রক্ষা করতে না পারায় তিনি ক্ষুব্ধ হন। লিখিত অভিযোগ ও সরেজমিনে গিয়ে অভিভাবকদের মতামতের প্রেক্ষিতে যুগান্তর সহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর ২৭ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড এর চেয়ারম্যান বরাবর একই বিষয় উল্লেখ করে আরো একটি লিখিত অভিযোগ করেন বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক দীপক কুমার সাহা। এছাড়া তাকে অবৈধভাবে বরখাস্তের বিরূদ্ধে ৪ অক্টোবর নড়াইল সদর জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন দীপক কুমার সাহা। এই বরখাস্তের বিরূদ্ধে প্রতিকার চেয়ে এবং সুশান্ত কুমার বিশ্বাসের বিরূদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ অভিভাবক মহল ৬ অক্টোবর জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারকলিপি দেন। এরই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ রবিবার (১৮ অক্টোবর) নড়াইল সদর বিজ্ঞ আমলী আদালতে দীপক কুমার সাহা বাদী হয়ে সভাপতি সুশান্ত বিশ্বাস সহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযোগ আমলে নিয়ে বিজ্ঞ বিচারক ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সদর থানার ওসিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। উল্লেখিত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে যুগান্তর সহ বিভন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি প্রকাশের পর বিদ্যালয়ের সভাপতি সুশান্ত বিশ্বাসের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১১ অক্টোবর যুগান্তর পত্রিকায় ওই সংবাদের একটি প্রতিবাদ লিপিও ছাপা হয়। এরপরও আলোচিত সভাপতি যুগান্তরের বিরূদ্ধে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে, যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সহ তিন জনের বিনূদ্ধে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা করায় তীব্র নিন্দা ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন- স্থানীয় সাংবাদিক জহির ঠাকুর, কাজী হাফিজুর রহমান, মির্জা মাহামুদ রন্টু, হুমায়ুন কবীর রিন্টু, মাসুমার রহমান, আলমগীর খান, ইকবাল হোসেন, কৃপা বিশ্বাস, আল মাসুম আজাদ উজ্জ্বল, রফিকুল ইসলাম পিনু, জগলুল হায়দার লিটন প্রমূখ।