Opu Hasnat

আজ ২০ এপ্রিল শনিবার ২০২৪,

কুষ্টিয়ায় এক পুলিশ সদস্যসহ করোনায় আক্রান্ত ৩ কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ায় এক পুলিশ সদস্যসহ করোনায় আক্রান্ত ৩

কুষ্টিয়া জেলায় আরো এক নতুন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে একদিনে জেলায় তিনজন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন পুলিশ সদস্য, একজন ব্যাংক কর্মকর্তা। অপরজন ষাটোর্দ্ধ বৃদ্ধ।

বুধবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে জেলায় তিনজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

জেলায় আক্রান্তরা হলেন- কুষ্টিয়া শহরের ২৩৮, মীর মোশাররফ হোসেন সড়ক, আড়–য়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা মাহাবুব আহম্মেদ চপ্পল (৩০), খোকসা উপজেলার ওসমানপুর এলাকার রতন কাজীর ছেলে পুলিশ সদস্য আতাউল হোসেন শিপন (৩৫) এবং কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের গট্টিয়া গ্রামের মৃত শুকুর আলীর ছেলে কৃষক আক্কাস আলী (৬৯)।

কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডাঃ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, আক্রান্ত মাহাবুব আহম্মেদ চপ্পল মাদারীপুর জেলায় সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অফিসার পদে কর্মরত আছেন। গত ২৫ মার্চ তিনি মাদারীপুর থেকে কুষ্টিয়ায় নিজ বাড়িতে আসেন। 

এদিকে করোনা উপসর্গ সন্দেহে পুলিশ সদস্য আতাউল মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) রাতে ঢাকা থেকে খোকসায় তার নিজ বাড়িতে কর্মস্থল থেকে পালিয়ে আসেন। তিনি ঢাকা এসবিতে কর্মরত। 

অন্যজন কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের গট্টিয়া গ্রামের আক্কাস আলী স্থানীয়ভাবে তৈরী ছোট মেশিন দিয়ে বাড়ি বাড়ি ধান মাড়াই এর কাজ করেন। 

গত কদিন ধরে চপ্পল ও আক্কাস আলীর জ্বর, ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায়, গত ২০ এপ্রিল বিকেলে দুজনের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরের দিন ২১ এপ্রিল সকালে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। 

বুধবার (২২ এপ্রিল) সকালে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনাভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব থেকে জানানো হয় যে তারা দুজনেই করোনা ভাইরাস পজেটিভ। 

অন্যদিকে পুলিশ সদস্য আতাউলের করোনা উপসর্গ দেখা দিলে তিনি স্বেচ্ছায় ঢাকা থেকে খোকসায় আসার আগে মঙ্গলবার সকালে আইইডিসিআর’র পিসি ল্যাবে পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়ে আসেন। রাতে তার মোবাইলে ম্যাসেজ আসে তার করোনা পজেটিভ। তারপর তিনি বুধবার (২২ এপ্রিল) আমাদেরকে অবহিত করেন। 

আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যাপারে সিভিল সার্জন জানান, করোনায় আক্রান্ত শহরের আড়ুয়াপাড়ার বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা ও খোকসা উপজেলার ওসমানপুর গ্রামের পুলিশ সদস্যকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা সেবা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে কুমারখালীর আক্কাস আলীর বয়স বিবেচনা এবং তার আগে থেকে এ্যাজমার সমস্যা থাকায় তাকে হাসপাতালের আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে। 

এছাড়া করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাড়িসহ আশে পাশের কয়েকটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। সেই সাথে আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

সিভিল সার্জন আরো জানান, কুষ্টিয়া জেলায় ৩৩৯ জনের করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫৫ জনের নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে। বাকিদের রিপোর্ট এখনো আসেনি। 

এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা কুষ্টিয়া জেলায় আরো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হওয়ার আশংকা করছেন। 

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ থেকে প্রায় ২২শ’র বেশি মানুষ গত দুসপ্তাহে কুষ্টিয়ায় এসেছেন। এদেরকে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হলেও তারা তা না মেনে লোকালয়ে চলাফেরা করছেন। 

সিভিল সার্জন জানান, আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) থেকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে করোনাভাইরাস সনাক্তের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে।