মুক্তি পেলেন খালেদা জিয়া রাজনীতি / 
দীর্ঘদীন কারাবন্দি থাকার পর অবশেষে মুক্তি পেলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে কারাগারে নেওয়া হয়।
বুধবার (২৫ মার্চ) বিকেল সোয়া চারটার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) কেবিন ব্লক থেকে নামিয়ে নিয়ে আনা হয় তাকে। দীর্ঘদিন তিনি এখানে কারান্তরীণ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। বিএসএমএমইউ হাসপাতালে খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়াকে গ্রহণ করেন। এর আগে খালেদা জিয়ার রুমের ভেতরে যান ভাই শামীম ইস্কান্দার, ভাইয়ের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, ভাইয়ের ছেলে অভিক ইস্কান্দার, তারেক রহমানের স্ত্রীর বড় বোন শাহিনা জামান খান ও শামা ওবায়েদ।
এর আগে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের নথি প্রথমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যায়। সেখান থেকে আসে বিএসএমএমইউতে। এরপর খালেদাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
মুক্তি পাওয়ার পর খালেদা জিয়াকে তার গুলশানের বাসা ফিরোজা ভবনের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের কথা জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি জানান, মানবিক দিক বিবেচান করে তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে ৬ মাসের জামিন দেওয়া হয়।
এদিকে, জামিনের আদেশ হওয়ার পর থেকে বিএনপির নেতাকর্মী ও সংবাদকর্মীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অপেক্ষায় থাকেন। মঙ্গলবার বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আসা যাওয়া করতে দেখা গেছে। বুধবার সকাল থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ছিলেন।
বিএসএমএমইউ-এর তিন নম্বর প্রবেশ গেট থেকে রোগী, সংবাদকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
সকাল থেকেই বিএসএমএমইউতে ছিলেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ।
কারামুক্তির পর খালেদা জিয়াকে কোথায় চিকিৎসা দেওয়া হবে? জানতে চাইলে এজেডএম জাহিদ বলেন, ‘আপাতত তিনি বাসায় যাবেন। এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন, কোথায় চিকিৎসা নেবেন।’
বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী করোনা পরিস্থিতির জন্য বিএসএমএমইউ এলাকায় নেতাকর্মীদের গিয়ে ভিড় না করার আহ্বান জানিয়েছেন। সে কারণে নেতাকর্মীদের তেমন একটা ভিড় লক্ষ করা যায়নি।
এর আগে, মঙ্গলবার বিকেলে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার কারামুক্তির বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, ‘মানবিক দিক বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দুই শর্তে তাকে মুক্তি দেওয়ার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শর্তগুলো হলো, খালেদা জিয়া বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং বিদেশ যেতে পারবেন না।’
জিয়া এতিমখানা ট্রাষ্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাষ্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদন্ড নিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে বন্দি ছিলেন খালেদা জিয়া।