Opu Hasnat

আজ ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ২০২৪,

দুর্যোগের এসময়ে গণমাধ্যমকর্মীদের চাকুরিচ্যুতি দুঃখজনক : তথ্যমন্ত্রী মিডিয়া

দুর্যোগের এসময়ে গণমাধ্যমকর্মীদের চাকুরিচ্যুতি দুঃখজনক : তথ্যমন্ত্রী

গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরিচ্যুত না করতে মালিকপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বৈশ্বিক এই দুর্যোগের সময় কোনো ধরনের চাকুরিচ্যুতির ঘটনা অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক। 

সোমবার (২৩ মার্চ) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) নবনির্বাচিত নেতাদের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি একথা বলেন।

সম্প্রতি এসএ টিভি থেকে ২৭ জন ও আগামী নিউজ থেকে সাত জন গণমাধ্যমকর্মীকে চাকুরিচ্যুতির প্রতিবাদ ও তাদের পুনর্বহালের জন্য ডিইউজের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু উত্থাপিত দাবির প্রেক্ষিতে তথ্যমন্ত্রী একথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের জন্য সম্প্রচার আইন হবে, গণমাধ্যমকর্মী আইন হবে। গণমাধ্যমকর্মী আইন মন্ত্রিসভা হয়ে আগামী পার্লামেন্টে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। যদি এটি সেখানে পাস হয়, তবে ইলেক্ট্রনিক-প্রিন্ট-অনলাইনসহ সব মিডিয়ার সাংবাদিকরা আইনি সুরক্ষা পাবেন। পাশাপাশি সম্প্রচার আইন তৈরিতেও আইন মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে। এই দুটি আইন হলে সব গণমাধ্যমকর্মীর আইনি সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে। সবারই আইনি সুরক্ষা প্রয়োজন। আশা করি, খুব শিগগিরই গণমাধ্যমকর্মী আইনটি করতে পারবো।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ইতোপূর্বে আমি ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতাসহ অন্যদের বলেছিলাম, গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স করতে। মিডিয়া হাউজগুলো গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স করলে হাউজের জন্যই ভালো। গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স করলে কোনও সংবাদকর্মী অসুস্থ হলে কিংবা কোনও ধরনের দুর্ঘটনা বা অন্যকোনও কারণে তার কোনও অসুবিধা হলে, সে ক্ষেত্রে গ্রুপ ইন্স্যুরেন্সের মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া যায়। শুধু মিডিয়া হাউজগুলোই নয়; আমি মনে করি, এ ক্ষেত্রে সাংবাদিক ইউনিয়নগুলোও যোগ দিতে পারে।’

নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নবম ওয়েজ বোর্ড নিয়ে অনেক কথাবার্তা হয়েছে। এটি একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়েছে। এগুলো চাইলেই আমার পক্ষে এককভাবে করা সম্ভব নয়। আপনাদের বিষয়গুলো আমি জানি। যে ওয়েজ বোর্ডটি ঘোষণা হয়েছে, সেটি বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে যে কমিটি গঠন করা দরকার ছিল, সেই মনিটরিং কমিটি আমরা করে দিয়েছি। সেখানে সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিনিধিও থাকবেন। ওই কমিটি বিষয়টি মনিটর করবে। আশা করি, বিভিন্ন সংবাদপত্র নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করবে।’

সেইসঙ্গে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের পাশাপাশি সাংবাদিক সমাজকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।  
 
হাছান বলেন, ‘এখন বৈশ্বিক দুর্যোগ। এই দুর্যোগের মধ্যে সবাই অত্যন্ত উৎকণ্ঠিত। এই সময় কারো উৎকণ্ঠা বাড়ানো সমীচীন নয়। এই সময় কোনো ধরনের চাকুরিচ্যুতি অনভিপ্রেত, দুঃখজনক। এই সময়ে গণমাধ্যম সংস্থার মালিক পক্ষের কোন কারণে যদি অসুবিধাও হয়, তাহলেও চাকুরিচ্যুতি না করার জন্য আমি অনুরোধ জানাই। আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে এই সময় কাউকে চাকুরিচ্যুত করা অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক।’

ডিইউজের এবারের নির্বাচনে নির্বাচিত নতুন কমিটিসহ পুরো সাংবাদিক সমাজকে অভিনন্দন ও করোনাভাইরাস নিয়ে অত্যন্ত সজাগ থাকার জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জাতি ও সমাজকে সঠিকখাতে প্রবাহিত করার ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা ইতোমধ্যেই অনেক উদ্যোগী ভূমিকা নিয়েছেন। আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ করে আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য পদক্ষেপ নেবো।’

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি এম. এ কুদ্দুস, যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক জিহাদুর রহমান জিহাদ, দপ্তর সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক দুলাল খান, জনকল্যাণ সম্পাদক সোহেলী চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক আসাদুজ্জামান, নির্বাহী পরিষদ সদস্য রাজু হামিদ প্রমুখ বৈঠকে অংশ নেন। ডিইউজে নেতৃবৃন্দ তাদের দাবিসম্বলিত একটি পত্র এসময় তথ্যমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।