খাগড়াছড়ি জেলা নির্বাচন অফিস, নতুন ভবনেও পুরনো দুর্ভোগ খাগড়াছড়ি / 
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা নির্বাচন অফিস দেশের অন্যান্য জেলার ন্যায় নির্বাচন কমিশনের অধিনে জেলা সার্ভার ষ্টেশনটি নির্মিত হয়েছে। যা খাগড়াছড়ি জেলা সদরের নারানখাইয়া এলাকার এলজিইডি ভবনের সামনে ব্যাপক সাজ সজ্জার মধ্যে এ সার্ভার ষ্টেশন ভবনটি নির্মিত হয়ে রীতিমত কার্যক্রম শুরু করেছে ২০১৪সালের দিকে। সার্ভার ষ্টেশনটি ভিতর বাহিরে ব্যাপক সাজ-সজ্জা পরিলক্ষিত হওয়ায় জেলাবাসী ভেবেছিল এবার কিছুটা হলেও দুর্ভোগ কমবে। অথচ এ ভবনে সেবা নিতে এসে প্রতিনিয়ত পুরানো সেসব দূর্ভোগ পোহাচ্ছে স্থানীয়রা।
সরেজমিনে জানা যায়, জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল সংশোধনী করতে গিয়ে মাসের পর মাস এ সার্ভার ষ্টেশনে আসা-যাওয়া করতে হয় ভ‚ক্তভোগীদের। জন্ম তারিখ, হারিয়ে যাওয়া পরিচয় পত্রের পরিবর্তে নতুন পরিচয়পত্র উত্তোলন, নামসহ অন্যান্য তথ্যাদি সংশোধনও এ সার্ভার ষ্টেশন থেকে পূর্ণ সেবা পাওয়া পুরোপুরি ভাবেই অসম্ভব। শুধুমাত্র নতুন ভোটার হওয়ার জন্য যতটুকু সরকারি সেবা প্রয়োজন ততটুকু দেওয়া হচ্ছে এ সার্ভার ষ্টেশন থেকে। তাও জনবল সংকটে ভ‚গছে প্রতিষ্ঠানটি। অন্যান্য সকল সেবা পেতে হলে অপেক্ষা করতে হয় দিনের পর দিন, মাসের পর মাস।
খাগড়াছড়ি জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, জন্ম তারিখ সংশোধনের ক্ষেত্রটি একটু ¯পর্শকাতর। কেননা, তৎসময়ে অনেক প্রতিনিধি ভোট ব্যাংক বৃদ্ধির জন্য নাবালকদেরও কৌশলে ভোটার করিয়েছেন। ফলে একাডেমিক যোগ্যতার সাথে বাস্তবে জাতীয় পরিচয়পত্রের সাথে অসামঞ্জ্যপূর্ণ থাকায় ওই সকল ভোটাররা তা সংশোধনে ভীড় জমানোর চিত্রটি ব্যাপক আকার ধারন করেছে।
তবে খাগড়াছড়ি জেলায় এ সমস্যা খুবই কম বলে জানান জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ নুরুল আলম। ফলে জন্ম তারিখ সংশোধনে উপজেলা নির্বাচন অফিসার সকল নথিপত্র যাচাই বাছাই করে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করার পর তা জেলা অফিস ঢাকায় প্রেরণ করে থাকে। এর পর ঢাকা থেকে যখন পৌছে তখনি পৌছে দেয়া হয় ভ‚ক্তভোগীদের নিকট সেবা। যা ১৫দিনও সময় লাগতে পারে, মাসও শেষ হতে পারে। এভাবেই হারিয়ে যাওয়া আইডি কার্ড উদ্ধার, ভোটারের ঠিকানা পরিবর্তনসহ সকল প্রকার সেবা এ সার্ভার ষ্টেশন থেকে সরাসরি দেয়া হয় না।
এ সার্ভার ষ্টেশনে শুধুমাত্র তৎসংশ্লিষ্ট নথিপত্র সংগ্রহ করে ঢাকায় সরবরাহ করার কাজই চলছে প্রতিনিয়ত। এ কারনে রঙে ভরা সার্ভার ষ্টেশন নির্মিত হলেও পুরনো দূর্ভোগে পিষ্ট হচ্ছে জেলাবাসী। এই গেল ভোটারদের ভোগান্তি।
প্রত্যক্ষ সরেজমিনে জানা গেছে, জেলা সার্ভার ষ্টেশনটি বছর খানেক আগ থেকে কার্যক্রম শুরু হলেও এখনও ভবনটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়নি। গাড়ীর গ্যারেজ আছে, জেলা নির্বাচন অফিসারের জন্য গাড়ী নেই। এছাড়াও চরম জনবল সংকটে রয়েছে এ সার্ভার ষ্টেশনটি।
অফিস সূত্র জানায়, উপজেলা নির্বাচন অফিসারের পদে ৮জনের মধ্যে ৫জন রয়েছে। তন্মধ্যে পানছড়ি, মহালছড়ি ও ল⊃2;ীছড়ি উপজেলা নির্বাচন অফিসগুলো চলছে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাচন অফিসার দিয়ে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ অফিস সহকারী কাম-ক¤িপউটার পদে খাগড়াছড়ি সদর, মাটিরাংগা, মহালছড়ি ও রামগড়ে এ পদে কোন জনবল নেই। এমএলএসএস পদে লক্ষীছড়ি ও পানছড়িতে দু’টি পদই শূণ্য রয়েছে। সার্ভার ষ্টেশনে ১০টি পদের মধ্যে ৬পদে লোকবল রয়েছে। তন্মধ্যে উচ্চমান সহকারী, অফিস সহকারী ও এমএলএসএস পদে কোন লোকবল নেই।
তবে সূত্রটি আরও জানায়, ডিজিটাল আইডি কার্ড কার্যক্রম ও স¤প্রতি ভোটার হালনাগাদের জন্য ৮উপজেলায় খন্ডকালীন ভাবে ১ মাসের জন্য ৮জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগের মধ্যে দিয়ে হালনাগাদ কার্যক্রম চলছে।
এসকল বিষয়ে জানতে চাহিলে জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ নুরুল আলম দূর্ভোগের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, নির্দেশনানুযায়ী এসকল সেবা দিতে সার্ভার ষ্টেশন শুধুমাত্র তথ্য সংগ্রহ ও তৎসংশ্লিষ্ট নথিপত্র সংগ্রহ করে সুপারিশ সহকারে ঢাকায় পাঠানো হয়। এতে নিম্মে ১৫দিন সর্বোচ্চ ৩০দিনের মতোই সময় লাগে। তিনি আরও জানান, সার্ভার ষ্টেশন সহ পুরো জেলায় লোকবল সংকটে ভ‚গছে প্রতিষ্ঠানটি। এসব জনদূর্ভোগ কমাতে তিনি জরুরী ভাবে জেলা ভিত্তিক স্থানীয় বিকেন্দ্রীয়করণ মতামত দেন। জেলা ভিত্তিক বিকেন্দ্রীয়করণ করা হলে নির্বাচন কমিশনের সকল সেবা সহজেই পাবে সাধারন ভোটাররা।