Opu Hasnat

আজ ২০ এপ্রিল শনিবার ২০২৪,

সাংবাদিকরা রিপোর্ট পেলে ছাপাবে, এটাই স্বাভাবিক : হাইকোর্ট আইন ও আদালত

সাংবাদিকরা রিপোর্ট পেলে ছাপাবে, এটাই স্বাভাবিক : হাইকোর্ট

সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতের উপস্থাপনের আগেই গণমাধ্যমে কীভাবে প্রকাশ পেল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। ওই দম্পতি হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি তানভীরের মামলা বাতিলের আবেদনের শুনানিতে বুধবার (৪ মার্চ) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ প্রশ্ন উত্থাপন করেন।

আদালতে তানভীরের আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাগর-রুনি হত্যা মামলার অগ্রগতি প্রতিবেদন হাইকোর্টে উপস্থাপনের পর আদালত বলেন, ‘এ রিপোর্ট মিডিয়ায় কীভাবে গেল? হয় অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, বা তদন্ত সংস্থার কাছ থেকে এ রিপোর্ট ছুটেছে। কোর্টে উপস্থাপনের আগেই এভাবে মিডিয়ায় রিপোর্ট প্রকাশ পেলে জনমনে এক ধরনের পারসেপশন (ধারণা) তৈরি হয়।’
জবাবে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার বলেন, ‘আমিও সাংবাদিক ছিলাম আমি কাউকে কোনো রিপোর্ট দেইনি। যে কারণে আমার সাংবাদিক বন্ধুরা আমাকে দেখতে পারেন না।’

তখন আদালত বলেন, ‘সাংবাদিকদের কাজই হলো খবরের পেছনে ছোটা। তারা খবর সংগ্রহ করতে ছুটবেই। আমরা তো সাংবাদিকদের কোন দোষ খুঁজে পাচ্ছি না।’

এ সময় অমিত তালুকদার বলেন, ‘এভাবে রিপোর্ট প্রকাশ আদালত অবমাননার শামিল।’ 
জবাবে আদালত বলেন, ‘সাংবাদিকরা রিপোর্ট পেলেই ছাপাবে, এটাই স্বাভাবিক। যদি ওই রিপোর্টের সঙ্গে তদন্ত প্রতিবেদনের মিল না থাকে, তখন তাদের (সাংবাদিকদের) দোষারোপ বা ধরার সুযোগ থাকে। রিপোর্ট আদালতে দাখিলের আগেই যে সাংবাদিকদের হাতে গেছে, এজন্য দোষ তো কাউকে না কাউকে স্বীকার করতেই হবে।’

এর পর আদালত এ মামলার শুনানি করেন। শুনানিতে আদালত এ মামলা হাইকোর্টের এই বেঞ্চ শুনতে পারবেন না বলে যুক্তি দেখান। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আপত্তির কারণে মামলাটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন আদালত।

এর আগে গত ১৪ নভেম্বর এই মামলার সন্দেহভাজন আসামি তানভীরের জামিনের বিষয়ে রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।

আদালত তার রায়ে বলেন, সামগ্রিক ঘটনা ও আইনগত অবস্থা বিবেচনায় সাগর-রুনি হত্যা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না হওয়া পর্যন্ত নিম্ন আদালতে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে সন্দেহভাজন আসামি মো. তানভীর রহমানকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।

একই সঙ্গে সামগ্রিক অবস্থা ও পরিস্থিতি বিবেচনায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে আজ ৪ মার্চ বা তার আগে এ মামলার তদন্তের সর্বশেষ অবস্থা এবং অপরাধের সঙ্গে বর্তমান আসামি তানভীরের সম্পৃক্ততার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন হলফনামাসহ দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব এ মামলার তদন্তের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে গত ২ মার্চ হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করে।