Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

জনবান্ধব পুলিশিং সেবার প্রত্যয়ে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার ফরিদপুর

জনবান্ধব পুলিশিং সেবার প্রত্যয়ে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার

একটি জনবান্ধব পুলিশিং ব্যবস্থা গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয়ে কাজ করে চলছেন অবিরত ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোঃ আলিমুজ্জামান বিপিএম সেবা। তার এই কর্মকে বাস্তবে বাস্তবায়িত করার জন্য তার টিমকে সাথে নিয়ে দিনরাত তিনি পথে প্রান্তরে কাজ করছেন। ঘটনা ঘটার দ্রুত সময়ের মধ্যে তিনি সেখানে উপস্থিত হয়ে নিজেই কাজ শুরু করেন ঘটনার পিছনের ঘটনা তুলে নিয়ে আসার কাজে। আর তার এই কাজে তার টিম ও সাধারন মানুষ এক হয়ে তাকে হাত বাড়িয়ে তথ্য উদঘাটনেও সাহায্য করে থাকেন। এরই মাঝে জেলার বড় বড় সব ক্লুলেস অপরাধ যেকোন বিষয় প্রযুক্তির সহযোগিতায় অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে তিনি সামনে তুলে নিয়ে এসেছেন। তার এই সময়ে তার হাত থেকে কোন অপরাধী এ পর্যন্ত পার পেয়ে যেতে পারেনি। যা এই জেলার বাসিন্দাদের একটি নিঘূম রাত কাটানোর এখন বড় বন্ধু পুলিশ সুপার মোঃ আলিমুজ্জামান। 

এরই মাঝে একটি শ্লোগান তিনি ধারন করে কাজ করছেন “মুজিব বর্ষের অঙ্গিকার, পুলিশ হবে জনতার”। তিনি এটি শুধু শ্লোগানের মধ্যে রাখতে চান না তিনি শ্লোগানের বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিঙ্গ।  তার সময়ে ফরিদপুরের পুলিশ বাহিনী অন্য যেকোন সময়ের থেকে আরো বেশি তৎপর ও বন্ধু বৎসল। পুলিশের পিছনের সেই ইমেজ কে তারা পিছনে ফেলে এখন কাজ করছেন মানুষের জন্য। যা এরই মধ্যে সুনাম কুড়িয়েছে সারা দেশে। 

সৃজনশীল কার্যক্রম আর নানামুখী উন্নয়ন প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোঃ আলিমুজ্জামান বিপিএম সেবা। তাঁর নেতৃত্বে অনন্য উচ্চতায় এখন ফরিদপুর জেলা পুলিশ।

অপরাধ দমনে সাহসী ভূমিকা : 
যৌন হয়রানি, জঙ্গিবাদ, মাদক বাণিজ্য, হত্যা, সড়কে ডাকাতি মামলাসহ সব ধরনের অপরাধ দমনে তাঁর সাহসী ভূমিকা নজর কেড়েছে বাংলাদেশ পুলিশের। পুলিশি সেবাকে জনবান্ধব করাসহ অসংখ্য ইতিবাচক উদ্যোগের মধ্য দিয়ে তিনি এগিয়ে চলছেন সামনের দিকে। জেলার বড় বড় সব ক্লুলেস হত্যাসহ অপরাধ যেকোন বিষয় প্রযুক্তির সহযোগিতায় অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে তিনি সামনে তুলে নিয়ে এসেছেন। তার এই সময়ে তার হাত থেকে কোন অপরাধী এ পর্যন্ত পার পেয়ে যেতে পারেনি। এক্ষেত্রে মধুখালীর লিপি হত্যা ও শিশুসহ কয়েকটি ঘটনা, ফরিদপুর সদর উপজেলার ফাতেমা হত্যা, বেড়িবাধে এক নারী হত্যা, ইজিবাইক চালক হত্যা, ভাঙ্গার গোলচত্বরে গাড়ীর হেলপার হত্যা এসব ক্লুলেস হত্যা তিনি খুব দ্রুত সময়ে উদঘাটন করে অপরাধ দমনে সাহসী ভূমিকা রেখেছেন। প্রতিদিন এ জেলায় হাইওয়ে ডাকাতির ঘটনাসহ বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতির ঘটনা ঘটতো এমন বিষয়কে তিনি এখন বলতে গেলে শ্যুন্যর কোটায় নিয়ে এসেছেন। এক্ষেত্রে বিশিষ্টজনেরা মনে করেন তার সময়ে কোন অপরাধী অপরাধ করে পার পেয়ে যায় নি। এটা একটি অসাধারন সাহসী ঘটনা এই পুলিশ সুপারের সময়ে।  

আর্তমানবতার সেবায় অসহায়ের পাশে : 
ফরিদপুর জেলা পুলিশ তাদের পুলিশ লাইন্স এর পাশে অবস্থিত দেয়ালে অন্যরকম এক উদ্যোগ গ্রহন করেছে। জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আলিমুজ্জামান এর নিজ উদ্যোগে এই আর্তমানবতার সেবায় অসহায়ের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয়েছে। এখানে যে কেউ পারেন তার অব্যবহৃত কাপড়টি এখানে রেখে আর্তমানবতার সেবায় অংশ গ্রহন করতে। ফরিদপুর জেলা পুলিশের এই উদ্যোগ এরই মধ্যে সাধুবাদ জানিয়েছে জেলার সকলস্থরের মানুষ। দেয়ালটিতে বলা হয়েছে “প্রয়োজনীয় কাপড়টি নিয়ে যান, অব্যবহৃত কাপড়টি রেখে যান”। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সময়ে অসহায় মানুষকে সহায়তা করে চলছেন বিভিন্নভাবে। এরআগে তীব্র শীতের সময়ে তিনি মধ্যে রাতে ছুটে গিয়েছেন অসহায় শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র নিয়ে।

যুবকদের মাঝে দেশপ্রেম বোধ : 
দায়িত্ব পালনের সাথে যুবকদের মাঝে দেশপ্রেম জাগিয়ে তুলতে পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের উদ্যোগে বিভিন্ন জায়গায় জায়গায় আয়োজন করা হচ্ছে অপরাধমুক্ত ভাবনা বিষয়ক আলোচনা। একই সাথে মাদকের ভয়াভহতা থেকে কিভাবে তারা দুরে থাকবে সেই বিষয়টি তুলে ধরা হচ্ছে এইসব সভা থেকে। 

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ও পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন : 
দুটি প্রক্রিয়াই ছিলো দালাল বাহিনীর হাতে জিম্মি এতদিন। সেই জিম্মি ব্যবস্থাকে তিনি করেছেন সহজ ও দ্রুততর। এখন একটি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পেতে একজন মানুষকে আর ঘুড়তে হয় না। এক সপ্তাহ ও কোন ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দশদিনের মধ্যে এটা নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। দালাল বাহিনী এর আগে তিন হাজার থেকে পাচঁ হাজার টাকা নিতো এখন এটা নেমে এসেছে মাত্র দুইশ টাকায়। একই সাথে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন এখন হয়েছে অনেক সহজ ও দ্রুততর। এখন সাধারন মানুষকে একটি পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন হয়ে যেতে সময় লাগে মাত্র তিনদিন। এক্ষেত্রে কোন টাকা নেয়া হয় না। যা এর আগে টাকা ছাড়া কোন ভাবেই সম্ভব হতো না। 

নারী, শিশু, প্রতিবন্ধি ও বয়স্ক সহায়তা ডেক্স স্থাপন : 
তিনি যোগ দেওয়ার পর থেকে নারী, শিশু, প্রতিবন্ধি ও বয়স্কদের প্রতি বিশেষ নজর দিয়ে তাদের সমস্যা গুলো সমাধান করা হচ্ছে। এরই মাঝে প্রতিটি থানায় নারী, শিশু, প্রতিবন্ধি ও বয়স্ক সহায়তা ডেক্স স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে তারা কোন রকম ঝামেলা ছাড়া অতিদ্রুত সেবা নিতে পারবে। 

'পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ' : 
প্রায় ২০ লাখ মানুষের (২০১১ সালের আদমশুমারী অনযায়ী) নিরাপত্তায় মাত্র ১৩৬৩ জন পুলিশ পর্যাপ্ত নয়। নানা সীমাবদ্ধতা ভাবনায় রেখে জেলার নয়টি উপজেলা ও পাচঁটি পৌরসভাসহ ৮১টি ইউনিয়নে গঠন করা হয়েছে কমিউনিটি পুলিশিংয়ে স্থানীয় কমিটি। কমিউনিটি পুলিশিং এবং গ্রাম পুলিশিং কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে দিনরাত কাজ করেছেন পুলিশ সুপার। এসব প্রচেষ্টার কারণে কমিউনিটি পুলিশিং ও গ্রাম পুলিশিং কার্যক্রম আগের চেয়ে অনেক বেশী গতিশীল বলে মনে করে সচেতনমহল এই ফরিদপুরে।

নাগরিক তথ্য সংগ্রহ ব্যবস্থা : 
তিনি কাজ করে চলছেন জেলার বাসিন্দাদের সকল নাগরিক তথ্য তৈরির কাজে। যাতে তাদের সকল বিষয় একটি অনলাইন ডাটাবেজে থাকে। এতে সামনের দিনে যেকোন পুলিশি তথ্য আর খুজঁতে বেশি সময় না লাগে। এতে একজন মানুষ সমন্ধে জানতে ও বুঝতে পারবে পুলিশ। অপরাধ নিয়ন্ত্রনে আনার এটি একটি বড় গঠন মূলক ব্যবস্থা বলে ধরছেন বিশিষ্টজনেরা। 

অভিযোগ ও সাধারণ ডাইরী সহয়তা ব্যবস্থা : 
এখন থানায় এসে একটি অভিযোগ ও সাধারন ডাইরী করতে কোন ঘুষ বা প্রভাব খাটাতে হয় না। এখন যেকোন সাধারন মানুষ থানায় এসে অভিযোগ ও সাধারন ডাইরী করতে পারনে যেকোন বিষয়ে। থানাতে কোন রকম অর্থ লেনদেন করার চিরচারিত সেই ব্যবস্থা তিনি যোগদানের পর থেকে আর নেই। এই ব্যবস্থা এখন সবচেয়ে সহজ করার পিছনে তিনি নিরলস ছুটছেন। সচেতন মহল মনে করছেন অভিযোগ ও সাধারন ডাইরীর করার সেই ঘুরা-ঘুরির দিন শেষ তার সময়ে। 


         
মাদক ও জঙ্গিবাদ বিরোধী সমাবেশ : 
জেলার ৮১টি ইউনিয়ন ও ৫টি পৌরসভায় দায়িত্বরত এলাকার প্রতিটি থানার আয়োজনে চলছে মাদক ও জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকার আহ্বান নিয়ে মতবিনিময় ও সভা। এসব মতবিনিময় ও সভা থেকে মাদক ও জঙ্গিবাদ থেকে পাড়া-মহল্লায়, গ্রামগঞ্জে, স্কুল-কলেজে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জঙ্গিবাদ, মাদক, যৌন হয়রানিসহ সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে জেলা পুলিশ টিম। 

রক্তে বাঁচে একটি জীবন : 
জেলার প্রায় ২০ লাখ বেশি মানুষের জন্য চিকিৎসকের পাশাপাশি এখানে রয়েছে জরুরি রক্তের সংকট। নিভৃত গ্রাম থেকে আসা বেশির ভাগ রোগীকে চিকিৎসাসেবা পেতে হাসপাতালে যেসব সংকটে পড়তে হয় তার একটি রক্ত। গ্রামাঞ্চল থেকে আসা দরিদ্র পরিবারের রোগীদের জরুরি রক্তের প্রয়োজনে পুলিশ সুপার নির্দেশে জেলা পুলিশ এসব বিপদকালীন সময়ে রক্ত দিয়ে ভূমিকা রাখছেন প্রতিদিন। এখন কাজ চলছে সকল পুলিশসদস্যদের রক্তের গ্রুপের একটি ডাটাবেজ তৈরি করে তা জেলার বাসিন্দাদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া। এতে অনেক ক্ষেত্রে মানববতায় জেলা পুলিশ টিম ভূমিকা রাখতে পারবে। পুলিশ সুপার বলেন, আমাদের একটি নিজেদের হাসপাতাল রয়েছে। এখান থেকে সামনের দিনে সাধারন মানুষের রক্ত দিয়ে সহয়তা করা হবে।   

জেলার সংঘর্ষেকে নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা : 
ফরিদপুরের বিশেষ করে দুটি উপজেলা নগরকান্দা ও সালথা থানায় প্রায় প্রতিদিন ঘটতো রাজনৈতিক কেন্দ্রিক গ্রাম্য সংঘর্ষ। আর এ দুটি উপজেলায় এই সংঘর্ষকে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসার কাজে সব চেয়ে বড় ভূমিকা তিনি রেখেছেন। এখন এসব এলাকা অনেকটা শান্ত অবস্থা বিরাজ করছে।    

এ ছাড়া পেশাগত দায়িত্ব পালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় ২০১৮ সালে বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম সেবা) এবং ২০১৭ ও ২০১৯ সালে দুবার তিনি অর্জন করেন আইজি ব্যাচ। ২০১৯ সালের ৭ জুলাই ফরিদপুর যোগ দেওয়ার পর থেকেই তিনি শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি। ফরিদপুরের বাসিন্দাদের একটি নিঘূম রাত কাটানোর এখন সবচেয়ে বড় বন্ধু পুলিশ সুপার মোঃ আলিমুজ্জামান।