Opu Hasnat

আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার ২০২৪,

পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে শঙ্কা কাটলো যৌনকর্মীদের, দ্বিতীয় জানাযায় সরব অংশ গ্রহন রাজবাড়ী

পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে শঙ্কা কাটলো যৌনকর্মীদের, দ্বিতীয় জানাযায় সরব অংশ গ্রহন

প্রশাসনিক কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ হাজারো মানুষের সরব উপস্থিতিতে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় যৌনকর্মীর দ্বিতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম জানাযার চেয়ে তিনগুন মানুষের অংশ গ্রহনে জানাযা অনুষ্ঠিত হওয়ায় শঙ্কা কেটেছে এই পল্লীর বাসিন্দাদের। আর পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন এতে মানুষের মধ্যে জনমত সৃষ্টি হবে। সেই জনমতই জানাযার এই প্রথাকে যুগ যুগ বাঁচিয়ে রাখবে। 

এক সময় অনিয়মই ছিলো এখানকার নিয়ম। পল্লীর কোন বাসিন্দা মারা গেলে দেওয়া হতো না কবর। হতো না সৎকার। চাপা মাটি অথবা নদী ফেলে দেওয়াই ছিলো এখানকার নিয়ম। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে দৌলতদিয়ায় হামিদা বেগম নামে একজন যৌনকর্মী মারা গেলে সেই প্রথা ভেঙ্গে জানাযা পরিয়ে কবর দেওয়া হয়। ওই সময় জানাযা অংশ নিয়েছিলো দুই শত মানুষ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রিনা বেগম নামে আর একজন যৌনকর্মী মারা যাওয়া খবর ছরিয়ে পরলে মুহুর্তেই জড়ো হতে থাকে মানুষ। রাত নয়টায় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ হাজার খানেক মানুষ জরো হয়। এই পল্লীর মানুষের সাথে জানাযার মাঠ প্রস্তুুত করতে অংশ নেয় এলাকাবাসী। এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিদের এমন সরব অংশ গ্রহনে জানাযার শংকা কেটেছে বলছেন যৌনকর্মীরা।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশিকুর রহমান জানান, প্রথম প্রথম আমিও একটি শংকার মধ্যে ছিলাম।  তবে আজ মনে হচ্ছে আমিও যেন একটি স্বীকৃতি পেলাম। আজ আমার মনে হচ্ছে মানুষ হিসেবে সমাজের অন্যএকদল মানুষের পাশে দাড়াতে পেরেছি।

জানাযায় অংশ নিতে এসে রাজবাড়ী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকির আব্দুল জব্বার জানান, আজ আমাদের একটি স্বপ্ন পূরন হলো। এটি যাতে চলমান থাকে সেজন্য এলাকার প্রতিটি মানুষ সহযোগিতা করবে।
 
রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান পিপিএম বলেন, যে যাত্রা আমরা শুরু করেছি এখানকার মানুষই এটিকে চালিয়ে যাবে। সহযোগিতা করবে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাও।  এতে মানুষের মধ্যে জনমত সৃষ্টি হবে। সেই জনমতই জানাযার এই প্রথাকে যুগ যুগ বাচিয়ে রাখবে। 

যৌনকর্মীর জানাযার মধ্য দিয়ে রচিত এ অধ্যয় যেন কোন ফতোয়ার কারনে হারিয়ে না যায় এমন দাবী করেছেন দেশের সবচেয়ে বড় যৌনপল্লী দৌলতদিয়ার বাসিন্দারা।