বিশ্বকাপ জয়ী অরন্যকে নিয়ে আনন্দে ভাসছে নড়াইলবাসি খেলাধুলা /  নড়াইল / 
নড়াইলের অভিষেক দাস অরন্যকে নিয়ে নড়াইলবাসির আনন্দের শেষ নেই। তিনি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ফাইনালে ৩ উইকেট নেয়া অন্যতম বোলার। সকলেই তার মাঝে মাশরাফিকে খুঁজে ফিরছেন। বৃহস্পতিবার মোটর শোভাযাত্রা সহকারে তিনি নড়াইল শহরের কুড়িগ্রামে নিজ বাড়িতে আসেন। যশোর বিমান বন্দরে পৌঁছালে নড়াইলের ইয়ং বয়েজ ক্লাবের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন খান ডালু’র নেতৃত্বে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। এরপর নড়াইলের কৃতি সন্তান জেলা আওয়ামী লীগ নেতা হাফিজ খান মিলনের নেতৃত্বে বিশাল মোটর শোভাযাত্রা সহকারে তাকে নড়াইলে নিয়ে আসা হয়। ফুলের মালা আর ফুলে তাকে বহনকারি গাড়ি ঢেকে যায়।
নড়াইল শহরের কুড়িগ্রামে বাধাঘাট এলাকার চিত্রা পাড়ে জন্ম নেয়া অভিষেক অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্ব ক্রিকেটের একজন গর্বিত সদস্য। ছোট থেকেই ভীষণ ডানপিটে ছিল অভিষেক দাস অরণ্য। দল বেঁধে খেলাধুলা আর বাড়ির পাশে চিত্রা নদীতে সাঁতার কাটা ছিল নিত্যদিনের কাজ। তাই প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনার মুখোমুখি হতো। এ নিয়ে পরিবারের শাসনেরও কোন কমতি ছিল না। বাবা মা বেশি রাগ করলে চলে যেত পাশে জ্যেঠুর বাড়ি। আর নয়তো কোনও বন্ধুর বাড়িতে। তার গর্বিত পিতা অসিত দাস বলেন বাংলাদেশ জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলে তার ছেলে খেলবে স্বপ্নেও ভাবেননি। খুলনা স্টেডিয়ামে যখন ট্রায়াল হয় তখনও ভাবেননি অরণ্য ট্রায়ালে টিকে যাবে। ঈশ্বরের কৃপায় চূড়ান্ত পর্যায়ের অনুশীলনে যখন ঢাকায় যাবার সুযোগ পেয়েছে তখন মনে মনে ভাবতে শুরু করেন ও একটা কিছু করে ফেলবে। অরণ্যকে কাছে পেয়ে তার বাবা-মা সহ নড়াইলবাসি বেজায় খুশি। বিশেষ করে নড়াইল শহরের কুড়িগ্রাম বাঁধাঘাট এলাকায় আনন্দের বইন্যা বইছে। অরণ্যের মা করুনা দাসের মুখের হাসি যেন ফুরাচ্ছে না। তিনি ছেলের সাফল্যে, বাংলাদেশের সাফল্যে অনাবিল আনন্দিত. উদ্বেলিত, আবেগ আপ্লুত। তিনি বলেন, এত আনন্দ জীবনে কোনোদিন পাননি। তিনি আরোও বলেন আমাদের সন্তান সমগ্র বাংলাদেশের মানুষের সন্তান। বাংলাদেশ জয়ী হওয়ায় আমরা গর্বিত।
অরণ্য বাড়িতে ফিরলে পরিবারের পক্ষ থেকে পূজার আয়োজন করা হয়। কুড়িগ্রাম বাঁধাঘাট এলাকার বাসিন্দা হাফিজ খান মিলন জানান, রোববার শেষ অবধি বন্ধুদের নিয়ে দলের খেলা দেখেছেন। বাড়ির পাশে বাধাঘাট চত্বরে বড় পর্দায় অনেক মানুষ এক সাথে বাংলাদেশের খেলা উপভোগ করেছেন। বাংলাদেশ বিজয়ী হলে শহরে বিশাল মিছিল বের করেন। আতশবাজির ফুয়ারা ছোটে। শহরের সমস্ত মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। মিছিলটি মাশরাফির বাড়ি পর্যন্ত যায়। সেখানেও মিছিলে অংশ নেওয়া সাধারণ মানুষ, আতশবাজি পোড়ায়। অভিষেক দাস অরন্য নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজে থেকে এবার এইচ,এস,সি পরীক্ষা দেবে। অরণ্যের সাফল্যে গোটা নড়াইল শহরের আনন্দের বইন্যা বইছে। শহরের কুড়িগ্রামে প্রত্যেকটি বাড়িতে ঘরে ঘরে চলছে বিজয়ের উল্লাস।