মুন্সীগঞ্জে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন: ক্ষমতাসীনরা জড়িত মুন্সিগঞ্জ / 
ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে মুন্সীগঞ্জের তালতলা-ডহুরী খালের বালু উত্তোলনের সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর বালু কাটা বন্ধ হয়ে যায় এবং ড্রেজার সরিয়ে ফেলা হয়।
সংবাদ প্রকাশের পর গত ২ সপ্তাহ এই বালু কাটা বন্ধ থাকার পর গত ২-৩ দিন যাবত ফের শুরু হয়েছে আবার বালু কাটা। কাউকে তোয়াক্ক না করে ছাত্রলীগের নেতাসহ ক্ষমতাসীন দলের একটি সিন্ডিকেট অবৈধভাবে বালু কেটে নিয়ে বিক্রি করছে। এ ব্যাপারে গ্রামবাসীরা অভিযোগ করলেও প্রশাসন কাজের কাজ কিছুই করছে না।
জেলার পুলিশ-প্রশাসনকে ম্যানেজ করে কাউকে তোয়াক্ক না করে ছাত্রলীগের নেতাসহ ক্ষমতাসীন দলের একটি সিন্ডিকেট অবৈধভাবে বালু কেটে নিয়ে বিক্রি করছে।
এ ব্যাপারে গ্রামবাসীরা অভিযোগ করলেও প্রশাসন কাজের কাজ কিছুই করছে না।
যত্রতত্র বালু কাটার ফলে খালের ওপর দিয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি ও লৌহজং উপজেলার সড়ক সংযোগের গুরুত্বপূর্ণ বেইলি ব্রিজ এবং মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কাজীরগাঁও এলাকায় একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, গোরস্তান, যোগাযোগের প্রধান সড়ক, কয়েকশত বসত ঘর, বিস্তীর্ণ ফসলী জমি হুমকির মুখে রয়েছে। এরমধ্যে সবচে ঝুকির মুখে রয়েছে কাজীরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোরস্থান এবং এর অদূরেই আরেকটি বেইলি ব্রিজ।
ইতিপূর্বে বসতবাড়ি, ফসলী জমিন, পারিবারিক গোরস্তান এই খালে বিলীন হয়ে গেছে এ যত্রতত্র বালু কাটার ফলে।
সরেজমিনে জানা গেছে, বালু কাটার আগে এখানকার গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে গ্রামরক্ষা কমিটির আহŸায়ক মো. সাহাবুদ্দিন স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। ইতিপূর্বে গ্রামবাসী খালের পাড়ে ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় বিক্ষোভমিছিল ও মানববন্ধন কর্মসুচী পালন করেছে।
গ্রামরক্ষা কমিটির আহŸায়ক মো. সাহাবুদ্দিন জানান, ঐতিহ্যবাহী তালতলা-ডহুরী খালের অপর পাড়ে জেলার টঙ্গীবাড়ি উপজেলার আড়িয়ল বালিগাওয়ের সাবেক চেয়ারম্যান জুলহাস বেপারী, কায়ুম মাঝি, ছাত্র লীগের নেতা মিজান সিন্ডিকেট এই বালু উত্তোলণের মুল হোতা।
ড্রেজার দিয়ে যত্রতত্র মাটি কাটার ফলে কাজির গাঁওসহ পার্শ¦বর্তী ক্ষেতেরপাড়া, চাষি বালিগাও, ইসলামপুর, গোয়ারা হুমকির মুখে রয়েছে। এর মধ্যে কাজির গাওয়ের শিকদার বাড়ির অধিকাংশ খালের পানিতে তুলিয়ে গেছে। খালের ওপড়ে বালিগাও-লৌহজং সড়ক সংযোগের গুরুত্বপূর্ণ বেইলি ব্রিজটিও হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়াও বালিগাও বাজার থেকে সুবচনী বাজার পযর্ন্ত অবৈধ বালু উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত রয়েছে প্রভাবশালীদের আরো বেশ কয়েকটি ড্রেজার। এসব প্রভাবশালীরা কারো কথা না শুনে উত্তোলন করে চলছে বালু । এতে করে খালের আসপাশের অন্যগ্রাম গুলো রয়েছে হুমকির মুখে।
অচিরেই এসব অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ না করা হলে আসপাশের গ্রামগুলো বিলিন হয়ে খালটি পরিনিত হতে পারে একটি নদীতে ।
এ প্রসঙ্গে টঙ্গীবাড়ি থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ছাত্রলীগের ছেলেরা বালু কাটছে। এসব জমি-মাটি সংক্রান্ত বিষয় আমরা কী করতে পারি ? এ ব্যাপারে প্রশাসনের উর্দ্ধতন কতৃপক্ষ থেকে নির্দেশ না পেলে আমরা কিছু করতে পারবো না।
এদিকে, লৌহজং থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মোল্লা জাকির হোসেন জানান, তালতলা-ডহুরি খালের লৌহজং এলাকায় এখন বালু কাটা হচ্ছে বলে আমার জানা নেই। তবে শুনেছি বালু কাটা হচ্ছে টঙ্গীবাড়ি এলাকায়। তার পরও বিষয়টি আমি দেখছি।