Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

হার দিয়ে পাকিস্তান সফর শুরু বাংলাদেশের খেলাধুলা

হার দিয়ে পাকিস্তান সফর শুরু বাংলাদেশের

প্রথম দফায় হার দিয়ে পাকিস্তান সফর শুরু হলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। শুক্রবার টি-২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ৫ উইকেটে হারলো মাহমুদুল্লাহর দল। এই জয়ে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল পাকিস্তান। প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৪১ রান করে সফরকারী বাংলাদেশ। জবাবে ৩ বল বাকী রেখে জয়ের স্বাদ নেয় পাকিস্তান।

লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। অধিনায়কের সিদ্বান্তে ব্যাট হাতে বাংলাদেশের ইনিংস শুরু করেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও মোহাম্মদ নাইম। পাকিস্তানের বাঁ-হাতি স্পিনার ইমাদ ওয়াসিমের পুরো ওভার মোকাবেলা করে মাত্র ২ করেন তামিম।

পরের ওভারে বাঁ-হাতি পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদিকে দু’টি বাউন্ডারি মারেন নাইম। ইমাদের করা তৃতীয় ওভারে প্রথম বাউন্ডারি হাকান তামিম।

চতুর্থ ওভারে পাকিস্তানের ডান-হাতি পেসার মোহাম্মদ হাসনাইনকে ১টি করে চার-ছক্কা হাঁকান নাইম। তবে পাওয়া প্লে’র শেষ ২ ওভার থেকে ১টির বেশি বাউন্ডারি মারদে না পারায় ৬ ওভারে বিনা উইকেটে ৩৫ রান পায় বাংলাদেশ।

পাওয়ার প্লে’র পরও সর্তকতার সাথে খেলছিলেন তামিম-নাইম। তাই অর্ধশতকে পৌঁছাতে ৮ ওভার লাগে বাংলাদেশের। আর ১০ ওভার শেষেও খুব বেশি রান তুলতে পারেননি তামিম-নাইম। বিনা উইকেটে ৬২ রান পায় বাংলাদেশ।

স্কোর বোর্ডে রান কম, হাতে পুরো ১০ উইকেট। রানের গতি বাড়াতে ১১তম ওভারে স্পিনার শাদাব খানের প্রথম ডেলিভারিতে সুইপ করে ছক্কা মারেন তামিম। কিন্তু ঐ ওভারের শেষ বলে রান আউট হন তামিম। ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৪ বলে ৩৯ রান করেন তামিম। দলীয় ৭১ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

এরপর উইকেটরক্ষক লিটন দাসকে নিয়ে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন নাইম। কিন্তু জুটিটি বড় হতে পারেনি। ২১ বলে ২৭ রান যোগ হয় নাইম-লিটন জুটিতে। ১৩ বলে ২টি চারে ১২ রান করে রান আউট হয়ে বিদায় নেন লিটনও। বিদায়ের পরের বলে শাদাবের বলে আউট হওয়া নাইম ৪১ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৩ রান করেন। নাইমের বিদায়ে দলীয় ৯৮ রানেই ২ উইকেটের পতন হয় বাংলাদেশের।

১৫ ওভার শেষে স্কোর বোর্ডে মাত্র ১০০ রান বাংলাদেশের। এ অবস্থায় হাতে ৭ উইকেট নিয়ে শেষ ৫ ওভারে সংগ্রহকে কতটা বড় করতে পারে বাংলাদেশ, সেটিই দেখার বিষয় ছিলো। কিন্তু আফিফ হোসেন ৯ ও সৌম্য সরকার ৭ রানে থামলে, বাংলাদেশের বড় স্কোর গড়ার পথ শেষ হয়ে যায়। আফিফকে শিকার করেন অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা পাকিস্তানের পেসার হারিস রউফ। সৌম্য বিদায় নেন আফ্রিদির বলে।

তারপরও অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহর ১৪ বলে দুই বাউন্ডারিতে অপরাজিত ১৯ রানে সম্মানজনক স্কোর পায় টাইগাররা। অধিনায়কের সঙ্গে মোহাম্মদ মিঠুনের অপরাজিত ৫ রানে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
জয়ের জন্য ১৪২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা পাকিস্তানকে দ্বিতীয় বলেই ধাক্কা দেন বাংলাদেশের পেসার শফিউল ইসলাম। ফর্মের তুঙ্গে থাকা অধিনায়ক বাবর আজমকে শুন্য রানে বিদায় দেন তিনি।

শুরুতেই উইকেট হারানোর পর, ঘুড়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে পাকিস্তানের আরেক ওপেনার আহসান আলি ও মোহাম্মদ হাফিজ। দেখেশুনে খেলে ৫ ওভারে দলকে ৩৫ রান এনে দেন তারা। পঞ্চম ওভারের শেষ বলে এই জুটিতে ভাঙ্গন ধরান বাংলাদেশের কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। ১৬ বলে ১৭ রান করা হাফিজকে শিকার করেন ফিজ।

হাফিজের সাথে ৩৫ রানের জুটির পর আরেক অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক নিয়ে দলের রানের চাকা ঘুড়ান আহসান। তৃতীয় উইকেটে দু’জনের ৪১ বলে ৪৬ রানের সুবাদে জয়ের পথে থাকে পাকিস্তান। বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তোলা আহসানকে ব্যক্তিগত ৩৬ রানে বিদায় দেন বাংলাদেশের লেগ-স্পিনার আমিনুল ইসলাম। ৪টি চারে ৩২ বল মোকাবেলা করেন তিনি।

দলীয় ৮১ রানে আহসানের আউটে ক্রিজে মালিকের সঙ্গী হন ইফতেখার আহমেদ। দলের আস্কিং রেট বেড়ে যাওয়ায় এই জুটি রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন। তাতে সফলও হন তারা। তাই ১৬ ওভার শেষে দলের স্কোর ৩ উইকেটে ১১৬ রানে পৌঁছে দেন মালিক ও ইফতেখার। জয়ের জন্য শেষ ২৪ বলে ২৬ রান দরকার পড়ে পাকিস্তানের।

তবে ১৭তম ওভারে ১৩ বলে ১৬ রান করা ইফতেখারকে শিকার করে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরার পথ দেখান শফিউল। এরপর ইমাদকে ৬ রানের বেশি করতে দেননি বাংলাদেশের আরেক পেসার আল-আমিন। কিন্তু এই দু’উইকেট পতনে চাপে পড়েনি পাকিস্তান। কারন অন্যপ্রান্ত দিয়ে রান তোলার কাজটা ভালোভাবেই করছিলেন ‘বঙ্গবন্ধু’ বিপিএলে রাজশাহী রয়্যালসের হয়ে ১৫ ইনিংসে ৪৫৫ রান করা মালিক।

শেষ ওভারে ৫ রান দরকার পড়ে পাকিস্তানের। সৌম্যর করা প্রথম দু’বল থেকে ৩ রান নেন মালিক। আর তৃতীয় বলে ডিপ মিড উইকেটে মালিকের ক্যাচ ফেলেন মিঠুন। ঐ ডেলিভারি থেকে ২ রান নিয়ে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন মালিক। ৪৫ বলে ৫টি চারে অপরাজিত ৫৮ রান করেন মালিক। ৫ রান নিয়ে অপরপ্রান্তে অপরাজিত ছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। বাংলাদেশের শফিউল ২টি, মুস্তাফিজুর-আল আমিন-আমিনুল ১টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন পাকিস্তানের মালিক।

আগামীকাল একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের দ্বিতীয় টি-২০।