Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

হাজী মশিউর স্মরণে বেনাপোলে নাগরিক শোক সভা যশোর

হাজী মশিউর স্মরণে বেনাপোলে নাগরিক শোক সভা

বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী মশিউর রহমান ছিলেন বেনাপোলের অহংকার। তিনি একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশ মাতৃকার মুক্তি লড়াইয়ে যেমন অকুতভয় ছিলেন পরবর্তী জীবনে গোটা সময় তিনি যোদ্ধার মত কর্মকান্ড পরিচালনা করেছেন। বিশেষ করে এই জনপদের নারী শিক্ষা সু-প্রসারিত করার জন্য তিনি বিরামহীম যুদ্ধ চালিয়েছেন। সফলও হয়েছেন। আজ এই নামটি এই জনপদের এক গর্বিত অনুসরনীয় ব্যাক্তিত্ব। 

হাজী মশিউর স্মরণে বেনাপোলে পৌরসভা আয়োজিত নাগরীক শোক সভায় কথা গুলো বলেন, যশোর জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন।

বেনাপোল এর ঐতিহ্যবাহি খেলার (বল ফিল্ড খ্যাত ) মাঠ সংলগ্ন পৌর কমিউনিটি সেন্টার ‘বিয়ে বাড়িতে’ শনিবার সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত এই স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব  করেন মেয়র আশরাফুল আলম লিটন। প্রধান বক্তা ছিলেন শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আনোয়ার আলী আনু, বিশেষ বক্তা হিসাবে হাজী মশিউর রহমানের উপর নানা বিধ স্মৃতিচারণ মুলক বক্তব্য রাখেন সর্বোজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষাবিধ আলহাজ্ব আহসান উল্লাহ মাষ্টার, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রবীন সাংবাদিক কবি আলতাফ চৌধুরী, মরিয়ম মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হাছিনারা বেগম, বেনাপোল হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক মোখলেছুর রহমান, বিশিষ্ট সমাজ সেবক মোখলেছুর রহমান মুকুল, শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক আজিবর রহমান, বেনাপোল মাদ্রাসার প্রিন্সিপ্যাল আব্দুল ওয়াহেদ দুদু, ও হাজী মশিয়ূর রহমানের একমাত্র সন্তান শাহিদা রহমান সেতু । অনুষ্ঠানটি উপস্থান করেন এমদাদুল হক বকুল।

স্মরণ সভায় বক্তব্যর শুরুতেই মেয়র আশরাফুল আলম লিটনের অনুরোধে উপস্থিত নাগরিক বৃন্দ প্রয়াত ব্যাক্তিত্বের স্মরণে এক মিটিট নিরাবতা পালন করেন। এরপর মেয়র লিটন তার বক্তব্যে বলেন, নোবেল জয়ী সাহিত্যতিক গার্ডিয়াক মার্গেজ এর উদাহরন টেনে বলেন মানুষের কাছে মানুষ আসে, যে মানুষের হৃদয়ে প্রেম আছে, ভক্তি আছে, দরদ আছে সেই হলো সফল মানুষ। আর এসকল গুনাবলীর সবটাই ছিল হাজী মশিউর রহমানের চরিত্রের মধ্যে। আসলে তিনি ছিলেন একজন সমাজ দরদী মানুষ। আমাকে তিনি স্নেহের আশির্বাদে কাছে টেনে নিয়ে দায়িত্ব দিয়েছিলেন তারই হাতে গড়া  বেনাপোল মরিয়ম বালিকা বিদ্যালয়ের শ্রীবৃদ্ধির  জন্য।  আমি কতটুুকু সফল হয়েছে জানি না তবে তার আদর্শ অনুসরণ করেই সমন্তিভাবে আমাদেরকে অগ্রসর হতে হবে। এই স্মরণ সভা থেকে আমি বেনাপোলবাসীর সকলকেই সেই উদাত্য আহবান রেখে বলছি হাজি সাহেব চেয়েছিলেন এই জনপদে একটি গার্লস কলেজ প্রতিষ্ঠিত হোক। তার সেই স্বপ্ন সফল করার জন্য আপনাদের সকলের সাথে আমিও আছি। অর্থ সহ প্রশাসনিক যতরকমের সহযোগিতার দরকার আমি দিব। তবে আপনাদেরকে শুধু কলেজটি প্রতিষ্ঠিত করা ও পরিচালনার দায়িত্ব বহন করতে হবে। 

আওয়ামীলীগ নেতা আানোয়ার আলী আনু বলেন, হাজী মশিউর রহমান যে সব কর্মকান্ড করেছেন তা এই বেনাপোলের মানুষের কাছে মাইলফলক হয়ে থাকবে। আহসান উল্লাহ মাষ্টার বলেন, আমার অগ্রজ মশি ভাই ছিলেন আমার বন্ধুর মত । তার নানা বিধ সমাজ কর্মকান্ডে তিনি আমাকে কমবেশী প্রায়ই তার সাথে রাখতেন। তার মত নিরহংকার মানুষ এই সমাজে পাওয়া দুস্কর। 

বীর মুক্তযোদ্ধা কবি আলতাফ চৌধুরী বলেন, হাজী মশিয়ূর রহমান মাইকেল মধুসুধন মহাবিদ্যালয়ে আমাদের অগ্রজ ছিলেন। পেশাগত কাজে অনেকবার গিয়েছি তার কাছে। অনেক স্মৃতি আছে । তবে তিনি বলতেন এই জনপদে শিক্ষা বিস্তার এর মুল লক্ষ হচ্ছে জ্ঞানের প্রসার ঘটানো। তার এই স্বপ্ন আমাদেরকেই বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। 

স্মরণ সভায় আলোচনা শেষে প্রয়াত হাজী মশিয়ূর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করা হয় হাফেজ বিন আমিন।