Opu Hasnat

আজ ২৭ এপ্রিল শনিবার ২০২৪,

খালেদা জিয়া সন্ত্রাসের ‘গডমাদার’ : প্রধানমন্ত্রী রাজনীতি

খালেদা জিয়া সন্ত্রাসের ‘গডমাদার’ : প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে সন্ত্রাসের গডমাদার হচ্ছে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।   জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে।   এর চেয়ে বড় সন্ত্রাস আর কী হতে পারে? খালেদা জিয়া জেলে আছে তিনি সেখানে বেশ ভালো আছেন।  খালেদা জিয়া হরতাল-অবরোধ দিয়ে খালেদা জিয়া মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে।   সেই অবরোধ-হরতাল মানুষ এখনও ভোলেনি।  তার হুকুমে কত মায়ের কোল খালি হয়েছে, কত বোন বিধবা হয়েছে, সেতো জেলে আছে, বেশ ভালো আছে।   তার জন্য আবার কারও কারও মায়া কান্নাও দেখি।  

বুধবার সন্ধ‌্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির বৈঠকের শুরুতে এ কথা বলেন তিনি। দলের ২১তম জাতীয় সম্মেলন সফল করতে এ বৈঠক করা হয়।

তিনি বলেন, ‘আমাদের ভেতরে কোনো প্রতিহিংসাপরায়ণতা নেই। কিন্তু পৃথিবীর কোন দেশ এই দৃষ্টান্ত দেখাতে পারবে যে, জেলে সাজাপ্রাপ্ত আসামির সেবার জন্য কোনো কাজের বুয়া যায়। সেটাও কিন্তু সে পাচ্ছে। তার অসুস্থতা, সেটা তো পুরনো। ১৯৯১ সালে সরকারে এসে তার নি রিপ্লেস করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সৌদি আরবে আবার অপারেশন করা হয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশে যাওয়ার পরে সে যখন শপিং করে, তখন হুইল চেয়ারে শপিং করত। ফালু ঠেলত আর সে গিয়ে শপিং করত। সে যখন হজ করে, সেখানেও ফালু হুইল চেয়ার ঠেলে, সে হজ করে। হুইলে চেয়ারে বসা, সেটা নতুন কিছু হয়। এটা তো বহু যুগ ধরে দেখে আসছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীনতার পরপর আমরা দেখেছি, সেই সময়েও এমন কিছু ঘটনা ঘটেছিল যা স্বাধীনতার স্বপক্ষের ঘটনা না। যার ফলাফল এই দাঁড়ায় যে, সারা দেশে একটা অস্থিরতা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা আমরা দেখেছি। বাংলাদেশকে স্বাধীন করে সেই বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাবে, সেটা আমাদের স্বাধীনতাবিরোধী এবং দেশি-বিদেশি যারাই হোক, তারা কখনো তা মেনে নিতে পারেনি। যে কারণে বাংলাদেশ যখনই সুষ্ঠুভাবে চলতে শুরু করেছে তখনই আসলো ১৫ আগস্ট। ১৫ আগস্টে যে জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলেন, সেটা খুনি রশিদ ও ফারুকের বক্তব্যেই প্রমাণিত।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবির প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচন, যে নির্বাচন নিয়ে অনেক কথা বলতে চায় বিএনপি। এটা তারা ভুলে যায় যে, এক-একটা সিটের পিছনে তারা দুই-তিনজনকে মনোনয়ন দিয়েছিল। যে যখন যার কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে তাকেই মনোনয়ন দিচ্ছে।’

‘একভাগ দিতে হচ্ছে লন্ডনে আর দুই ভাগ দিতে হচ্ছে বাংলাদেশে। গুলশানের অফিসকেও সন্তুষ্ট করতে হয়েছে, পুরনো পল্টনের অফিসকেও। যে টাকা দিতে পারছে না সে মনোনয়ন পাচ্ছে না। একজন মনোনয়ন জমার দেয়ার দুই-তিন ঘণ্টা পরে আরেকজন জমা দেয়। একটা সিটের জন্য দুই-তিনজনকে যারা মনোনয়ন দেয়, তারা নির্বাচনে জেতার জন্য না। মনে হয়, এটাকে একটা বাণিজ্য হিসেবে নিয়েছিল তারা। আসলে আন্তর্জাতিকভাবে যে সার্ভেটা হয়েছিল, তাতে সবাই দেখতে পেয়ছিল যে, বিএনপি সিট পাবে না। সেজন্য নির্বাচনটাকে তারা ব্যবসা-বাণিজ্য হিসেবে নিয়ে নেয়। সেখানে সিট না পেয়ে অন্যদের দোষারোপ করার কোনো মানে হয় না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ পর্যন্ত আমরা বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলাম। স্বাক্ষরতার হার, বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়িয়েছিলাম। বিদেশি বিনিয়োগ এসেছিল। আমরা প্রতিটি সেক্টরকে বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করে দিয়েছিলাম। এতে আমাদের অর্থনীতির চাকা আরো সচল হয়।’

‘একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আসার পরেই দেশের উন্নতি হচ্ছে। এটাকে অনেকেই অন‌্য কিছু বলতে পারে। এই এটা করেছে, ও এনজিও করেছে, অনেকেই অনেক কিছু করেছেন, তার জন্য দেশের উন্নতি হয়েছে। তাই যদি হতো, দারিদ্র‌্যরে হার কমেনি কেন? প্রবৃদ্ধির হার বাড়েনি কেন? আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়নি কেন?  একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকার যখনই ক্ষমতায় এসেছে, তখনই দেশের উন্নতি হয়েছে। আজকে আমরা ৮ দশমিক ১৩ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে’, বলেন তিনি।

অগ্নিসন্ত্রাসীরা যেন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে, সে আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি- ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে কোথায় নিয়ে যাব। ২০৪১ সালের মধ্যে দেশ উন্নত সমৃদ্ধ হবে। ২১০০ সাল পর্যন্ত আমরা একটা ছক তৈরি করার পরিকল্পনা করেছি।’