Opu Hasnat

আজ ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার ২০২৪,

নাব্য সংকটে দৌলতদিয়ায় আটকা পড়েছে ৩৮ টি মালবাহী জাহাজ রাজবাড়ী

নাব্য সংকটে দৌলতদিয়ায় আটকা পড়েছে ৩৮ টি মালবাহী জাহাজ

পদ্মা নদীর রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া অংশে অসংখ্য ডুবচর ও নাব্যতা সংকট প্রকট আকার ধারন করেছে। পণ্য পরিবহনের গুরুত্বপূর্ণ রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া দিয়ে নগরবাড়ী-বাঘাবাড়ী নৌরুটে মালবাহী জাহাজ চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

বিভিন্ন নৌবন্দর থেকে ছেড়ে আসা মাল বোঝাই অন্তত ৩৮ টি জাহাজ গন্তব্যে পৌছাতে না পেরে পদ্মা নদীর দৌলতদিয়া ৬ নম্বর ফেরিঘাট এলাকায় আটকা পড়েছে।

সরেজমিন রবিবার দুপুরে দেখাযায়, রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাট থেকে অন্তত এক কিলোমিটার ভাটিতে পদ্মা নদীর বাহিরচর দৌলতদিয়া এলাকায় নোঙর করে আছে, লাকী এন্টারপ্রাইজ, এমভি হাসান-আল আবরা, এমভি পূর্নিমা, এমভি আবাবিল, এমভি সবুস, এমভি রোদেলা, এমভি জুবায়ের আহাদ, এমভি কাজল দিঘি, এমভি মালা, এমভি মিহি কনিকা, এমভি সারিফ-বাধন, এমভি সোহান-রিয়াদসহ অন্তত ৩৮ টি জাহাজ। আটকে থাকা জাহাজগুলো থেকে মাঝ নদীতেই শ্রমিকরা মালামাল খালাস করে সেগুলো বোলগেট ও ছোট ট্রলারে বোঝাই করছে। ওই সব জাহাজগুলো থেকে সার, সিমেন্ট তৈরীর কাঁচামাল ‘ক্লিংটার’, পোট্রিখাদ্য, গম, কয়লা, পাথরসহ বিভিন্ন মালামাল নামিয়ে সেগুলো বোলগেট ও ট্রলারে বোঝাই করে তা গন্তেব্য নিয়ে যাচ্ছে। 

আটকে থাকা জাহাজ লাকী এন্টার প্রাইজের মাষ্টার (চালক) তোতা শুকানি জানান, নগরবাড়ী- বাঘাবাড়ী নৌপথের কাজীরহাট, নগরবাড়ী, বেড়া ও নাকালিয়া এলাকায় নাব্যতা সংকটের পাশাপাশি নৌপথের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ডুবোচর সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে তাদের জাহাজগুলো দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় এসে আটকা পড়ে আছে। প্রয়োজনীয় নাব্যতা না থাকায় জাহাজগুলো গন্তব্যে পৌছাতে পারছে না। একটি জাহাজ অন্তত ১৫ দিন করে নদীতে আটকে থাকায় তারা চরম দূর্ভোগে শিকার হচ্ছেন। তিনি আরো জানান, জাহাজ গুলো থেকে আংশিক মালামাল আনলোড করে জাহাজের ড্রাফট কমিয়ে তারপর বাঘাবাড়ি ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়া হবে।

আটকে থাকা জাহাজ এমভি ইস্ট বাংলার মাস্টার (চালক) খায়রুল বাসার জানান, চট্টগ্রাম থেকে টিএসপি সার বোঝাই করে জাহাজ নিয়ে তিনি সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী বন্দরে যাচ্ছিলেন। ৮ দিন আগে দৌলতদিয়া এলাকায় এসে তাদের জাহাজটি নাব্যতা সংকটের কারণে আটকা পড়েছে। দু’এক দিনের মধ্যে জাহাজ থেকে মাল খালাস করতে না পারলে কোম্পানীর প্রতিদিন জাহাজ প্রতি ১০ হাজার টাকা করে ভর্তুকি দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ২২ দিন পার হলে জাহাজ ভাড়া দ্বিগুণ পরিশোধ করতে হবে। তাই জাহাজ থেকে মালামাল দ্রুত খালাস করা হচ্ছে। এতেও অতিরিক্ত টাকা গচ্ছা যাচ্ছে। 

এদিকে নদী খনন ও নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রাখার দায়িত্বরত সংস্থা বিআইডব্লিটিএ’র দৌলতদিয়ায় কোন স্থায়ী কার্যালয় নেই। একটি অস্থায়ী কার্যালয় থাকলেও সেখানে কোন কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। তবে দৌলতদিয়ায়        জাহাজ আটকে থাকা এলাকায় একটি বন্ধ ড্রেজিং মেশিন দেখা গেছে।

এ ব্যপারে বিআইডব্লিটিএ’র ড্রেজিং শাখা দৌলতদিয়ায় কর্র্মরত সহকারী প্রকৌশলী আক্কাছ আলী জানান, নাব্যতা সংকটে জাহাজ আটকে আছে বিষয়টি শুনেছি। নদীতে বর্তমানে বড় জাহাজ চলাচলের মত পানি নেই। এর থেকে বিস্তারিত জানতে হলে উদ্ধতন কর্তৃপক্ষ আমাদের বিআইডব্লিউটিএ’র আরিচা অঞ্চলের উপপরিচালক আব্দুর রহিমের সাথে কথা বলেন।    

এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ’র আরিচা অঞ্চলের উপপরিচালক আব্দুর রহিম জানান, দৌলতদিয়া-নগরবাড়ী-বাঘাবাড়ী নৌরুটে খনন কাজের ব্যপারে জানতে হলে আপনি ড্রেজিং সেক্টরের প্রকৌশলী সুলতান সাহেবের সাথে কথা বলেন আমি ব্যস্ত আছি।

বিআইডব্লিটিএ’র ড্রেজিং সেক্টরের প্রকৌশলী সুলতান আহম্মেদকে তার মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি। তবে বিআইডব্লিটিএ আরিচা সেক্টরের জিএম নিজাম উদ্দিন পাঠান জানান, বর্তমানে পদ্মা নদীর ওই এলাকায় ৮ ফুট ড্রাফটের নৌযান চলাচল করতে পারছে। যে জাহাজগুলো দৌলতদিয়া এলাকায় আটকা পড়েছে সে গুলোর ড্রাফট ১৮ থেকে ২০ ফুট। তাই আটকে পড়া জাহাজগুলো আংশিক মাল আনলোড করে ড্রাফট ৮ ফুটের নিচে এনে চলাচল করছে। এ ব্যপারে বিআইডব্লিটিএ প্রধান কার্যালয় থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।