Opu Hasnat

আজ ২৬ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

নবগ্রাম জেবুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয়

প্রধান শিক্ষকের ভুলে ১ বছর পেছালো ছাত্রীর শিক্ষাজীবন ঝালকাঠি

প্রধান শিক্ষকের ভুলে ১ বছর পেছালো ছাত্রীর শিক্ষাজীবন

ঝালকাঠি সদর উপজেলার জেবুন্নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে চলতি বছরে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সৈয়দ জাকির হোসেন’র কন্যা রাকিবা আক্তার। পরীক্ষার ফলাফলে ইংরেজি বিষয়ে অকৃতকার্য আসে। পরীক্ষা ভালো হওয়ায় অকৃতকার্য হতে পারে না এমন বিশ্বাসে পুনরায় খাতা দেখার জন্য নির্ধারিত বোর্ড ফি দিয়ে আবেদন করে। আবেদনের প্রেক্ষিতে পরীক্ষার পুনরায় নিরীক্ষণ করার পরে ওই ছাত্রীর ইংরেজি বিষয়ে পাশ আসে। এসএসসি পরীক্ষার নম্বরফর্দ বিদ্যালয়ে আসলেও প্রধান শিক্ষক সে বিষয়ে গুরুত্ব দেয়নি। রাকিবা ফেল করেছে সেই বিষয়টিই প্রচলিত থাকে। ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার দিতে নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের জন্য রাকিবা’র পিতা সৈয়দ জাকির হোসেন’র কাছে ফোন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ। ১৫০ টাকা ফি দিয়ে ইংরেজি বিষয়ে নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করলে উত্তীর্ণ হওয়ায় ২হাজার টাকা ফরম ফিলাপের জন্য ধার্য্য করে। দরিদ্র পিতা ২ হাজার টাকা দিতে অসামার্থ্য হওয়ায় প্রধান শিক্ষককে দেড় হাজার টাকা দিলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। হতাশ হয়ে বাজারে এসে কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থাকার পর দপ্তরী দেলোয়ারের সাথে সাক্ষাত হলে তিনি ফরম ফিলাপ না করে সেই টাকার মিষ্টি নিয়ে স্কুলে যেতে বলে, কারণ আপনার মেয়ে তো পাশ করেছে ফরম ফিলাপ করতে হবে না। প্রধান শিক্ষকের গাফিলতিতে আমার মেয়ের শিক্ষাজীবন থেকে ১টি বছর হারিয়ে গেলো। সহপাঠিদের থেকে ১ ব্যাচ পিছনে পড়ে গেলো পড়াশুনায়। আবেগময়ী কান্নজড়িত কণ্ঠে এসব কথা বলেন ছাত্রী রাকিবা আক্তারের পিতা সৈয়দ জাকির হোসেন। 

ছাত্রী রাকিবা আক্তার জানায়, স্যারের (প্রধান শিক্ষকের) গাফিলতিতে আমার জীবন থেকে ১টি বছর নষ্ট হয়ে গেলো। এখনও কোথাও এইচএসসিতে ভর্তি হবার সুযোগ নেই। জীবনের তরে সহপাঠিদের কাছ থেকে পিছিয়ে গেলাম। স্যার এখন ভুল স্বীকার করলেও তিনি তো আমার জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া ১টি বছল ফেরত দিতে পারবেন না বলে কেঁদে ফেলে রাকিবা। 

প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ জানান, রি-এক্সামিন (পুননিরীক্ষণ) যদি আমার স্কুলের মাধ্যমে করতো তাহলে আমার মোবাইলে ম্যাসেজ আসতো। তারা নিজেরা পুননিরীক্ষণের কাজটি করলো, ম্যাসেজ তাদের মোবাইলে আসছে কিন্তু আমাকে তারা (রাকিবার অভিভাবক) কিছুই  জানায়নি। বোর্ড থেকে যখন মার্কশীট আসছে তখন সবগুলো যাচাই করা হয়নি। ফরমফিলাপের সময় অকৃতকার্যের তালিকা করার পর রাকিবার নাম না আসায় কাগজ যাচাই করায় পাশের বিষয়টি প্রকাশ পায়। তারা (রাকিবার অভিভাবক) চাইলে এখন বিনয়কাঠি কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি করা সম্ভব হবে। 

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও নবগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুল হক আকন্দ জানান, অনেক কাজের মধ্যে ২/১টি ভুল হতে পারে। এ ভুলটি প্রধান শিক্ষকের অনিচ্ছাকৃতভাবে হয়েছে। রাকিবার অভিভাবকরা চাইলে তাকে এইচএসসিতে ভর্তি করার সুযোগ এখনও আছে। আমরা ভর্তিতে সহযোগিতা করতে পারি।