Opu Hasnat

আজ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার ২০২৪,

নড়াইলে দুই সন্তানের বাবাকে পিটিয়ে হত্যা

পাঁচ মাস দশ দিনেও আটক হয়নি কেউ নড়াইল

পাঁচ মাস দশ দিনেও আটক হয়নি কেউ

নড়াইলের লোহাগড়ায় দুই সন্তানের বাবা নুর মোহাম্মদ শেখ খুন হওয়ার পাঁচ মাস দশ দিন পার হয়ে গেলেও পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। এ কারনে ন্যায় বিচার পাবার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নিহতের স্ত্রী মোছা. শারমিন বেগম ও তার পরিবার। নুর মোহাম্মদ উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের চর-শালনগর গ্রামের মৃত জহুর শেখের ছেলে। তাঁর দুইটি কন্যা সন্তান আছে। বড় কন্যার নাম মিতু খানম। বয়স সাত বছর। সে চর-শালনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেনীর ছাত্রী। ছোট মেয়ের বয়স দুই বছর ছয় মাস। 

নিহতের স্ত্রী শারমীন বেগম বলেন, “প্রায় ছয় মাস হতে গেল আমার স্বামী দিনে দুপুরে সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে গত ২৯ মে লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি”। শারমীনের অভিযোগ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আরও বেশি আন্তরিক হলে আসামীরা এত দিনে আইনের আওতায় আসত। এ বিষয়ে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সহযোগিতা চেয়েছেন এতিম দুই সন্তানের জননী শারমীন বেগম।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ মে বেলা অনুমান ১১টার সময় রড সিমেন্ট কেনার জন্য নগদ ৭৩ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় ৩২ বছর বয়সী যুবক নুর মোহাম্মদ শেখ। ওই দিন বিকালে শারমীন বেগম মোবাইল ফোনে জানতে পারে তাঁর স্বামী নুর মোহাম্মদ লোহাগড়া উপজেলায় মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। পরিবারের সদস্যদের সাথে হাসপাতালে এসে শারমীন আরও জানতে পারেন নুর মোহাম্মদ শলকা বেগম নামের এক মহিলার সাথে ২৪ মে বিকাল অনুমান ৩ টার দিকে উপজেলার স্বপ্নবিথী পিকনিক স্পটে ঘোরা ফেরা করার সময় পার্কের তিন কর্মচারী লক্ষীপাশা গ্রামের মৃত রুহুল আমিন মোল্যার ছেলে মুকুল মোল্যা (৪০), নড়াইল সদর উপজেলার তালতলা গ্রামের আইয়ুব মুন্সীর ছেলে তারিক মুন্সী (৩৬), লোহাগড়া উপজেলার কচুবাড়িয়া গ্রামের মৃত জলিল জমাদ্দারের ছেলে শামীম জমাদ্দার (৩৫)সহ চর শালনগর গ্রামের মৃত-সুর্য্য শেখের ছেলে সাহেব আলী ওরফে চেরাক আলী এবং লাহুড়িয়া ইউনিয়নের ডহরপাড়া গ্রামের আলম ফকিরের মেয়ে শলকা বেগমের(২৫) সাথে কথা কাটা কাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আসামীরা নুর মোহাম্মদকে মারপিট করে মৃতপ্রায় অবস্থায় লোহাগড়া হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎস্যক তঁকে মৃত ঘোষনা করেন। এ ঘটনায় ২৯ মে নিহতের স্ত্রী শারমীন বেগম বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ উপ-পরিদর্শক মো. আতিকুজ্জামান বলেন, লাশের ময়না তদন্তের রিপোর্টে জানা গেছে, নুর মোহাম্মদ হৃদযন্ত্র ক্রিয়া বন্ধ হয়ে (স্ট্রোক করে) মারা গেছে। অতি দ্রুত এই মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে দেব। 

তবে শালনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খান তছরুল ইসলাম বলেন, “নুর মোহাম্মদের দুইটি সন্তান আছে। তাদের নিজস্ব জমি না থাকায় আমার ইউনিয়নের আফিল গেট সংলগ্ন বেড়িবাধেঁর পাশে সরকারি জায়গায় কোন রকম ঘর তুলে বসবাস করত। তাঁর যে ভাবেই মৃত্যু হোক না কেন, যেহেতু হত্যার অভিযোগ এনে থানায় মামলা হয়েছে তাই বিষয়টি তদন্ত পূর্বক সঠিক কারন খুঁজে বের করার দায়িত্ব পুলিশের। তিনি আরও বলেন, এই মামলার বিষয়ে আমি পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে তেমন কোন তৎপরতা আমি দেখি নাই। আমি চাই অতিদ্রুত নুর মোহাম্মদের মৃত্যুর সঠিক কারণ খুঁজে বের করে দোষীদের আইনের আওতায় আনবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।