Opu Hasnat

আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার ২০২৪,

চলচ্চিত্রে নতুন নীতিমালা, না মানলে কঠোর ব্যবস্থা বিনোদন

চলচ্চিত্রে নতুন নীতিমালা, না মানলে কঠোর ব্যবস্থা

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নির্মাণে ৯ দফা নতুন নীতিমালা ঘোষণা করা হয়েছে। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট চলচ্চিত্রের ১৮টি সংগঠন এই নীতিমালা তৈরি করেছে। আগামী পহেলা নভেম্বর থেকে এই নতুন নীতিমালা কার্যকর হবে।

দীর্ঘ সাত বছর পর চলচ্চিত্রের শীর্ষ সংগঠনখ্যাত প্রযোজক পরিবেশক সমিতির নির্বাচন সম্পন্ন হয়। এই সমিতির নব নির্বাচিত কমিটি গত ২৪ শে আগস্ট পরিচালক সমিতির সঙ্গে এক বৈঠক করেন। এই সভায় বর্তমান চলচ্চিত্র নির্মাণে যে সকল প্রতিবন্ধকতা ও অনিয়ম আছে তা চিহিৃত করে এবং চলচ্চিত্র নির্মাণে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়ন করার জন্য একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে কমিটি বৈঠকে বসে নীতিমালা চূড়ান্ত করেন। সেই বিষয় নিয়ে সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে এফডিসির জহির রায়হান প্রজেকশন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রযোজক -পরিবেশক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু, সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলাম, চিত্রগ্রাহক সংস্থার সভাপতি আব্দুল লতিফ বাচ্চু, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, মহাসচিব বদিউল আলম খোকন, প্রযোজক পরিবেশক সমিতির ‘চলচ্চিত্র নির্মাণ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক কামাল মো: কিবরিয়া লিপু ও সদস্য আবু মুসা দেবু। 

এছাড়াও এসময় প্রযোজক, পরিচালকসহ অন্য সংশ্লিষ্ট সংগঠনের অনেকেই এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু বলেন, চলচ্চিত্র নির্মাণে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি একটি প্রোডাকশনের অতিরিক্ত খরচ কমানোর জন্য এই নীতিমালা গঠন করা হয়েছে। এটি সকল শিল্পী, পরিচালক এমনকি প্রযোজকের জন্যও সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হবে। 

প্রযোজক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম বলেন, এই কমিটিতে কামাল মো: কিবরিয়া লিপুকে আহ্বায়ক করে ১০ জনের একটি সদস্য কমিটি গঠন করা হয়। সদস্য হিসেবে রয়েছেন আব্দুল লতিফ বাচ্চু, বদিউল আলম খোকন, আবু মুসা দেবু, মো: ইকবাল, সোহানুর রহমান সোহান, এ.জে. রানা. মেহেদী হাসান সিদ্দিকী মনির, রশিদুল আমিন হলি, শাহীন খান (শাহীন সুমন) ও কবিরুল ইসলাম রানা।

এছাড়া নীতিমালা মনিটরিং এর জন্য রয়েছে একটি কমিটি। তারা কোন অভিযোগ পেলে তা যাচাই করে ব্যবস্থা নিবেন।

৯ দফা নীতিমালার মধ্যে রয়েছে, সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শুটিং টাইম নির্ধারণ, কোনো শিল্পী বা কুশলী যদি সময়মত না আসেন, তার জন্য শুটিং শুরু করা যদি না যায় তাহলে তার দায়-দায়িত্ব বা ক্ষতিপূরণ তাকেই বহন করতে হবে। 

এছাড়া কুশলী ও শিল্পীদের অবশ্যই প্রযোজকের সাথে চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করতে হবে। সেখানে প্রথম কিস্তিতে ২৫ ভাগ এবং পরবর্তীতে কাজের অগ্রগতির ভিত্তিতে ৭৫ ভাগ তিন কিস্তিতে পরিশোধ করার কথা উল্লেখ থাকবে। এছাড়া এক লক্ষ টাকার উপরে যাদের সম্মানী তারা কোনো প্রকার কনভেন্স (যাতায়াত ব্যবস্থা) পাবেন না এবং আউটডোরে অবস্থানকালীন শুটিং এর সহকারী পরিচালক ও সহকারী চিত্রগ্রাহকরা কনভেন্স এর অর্ধেক হাত খরচ বাবদ পাবেন। আর ড্রেস নির্মাণের জন্য কোনো শিল্পীকে টাকা প্রদান করা হবে না। গল্পের প্রয়োজন অনুযায়ি শিল্পীদের নিজের ড্রেস প্রোডাকশন থেকে তৈরী করে দেয়া হবে। এছাড়া ছবির প্রমোশনের জন্য প্রধান শিল্পীদেরকে ছবি মুক্তির পূর্বে ৫ দিন শিডিউল দেয়াসহ বেশকিছু বিষয় এই নীতিমালায় রয়েছে।

এছাড়া চলচ্চিত্র নির্মাণ সংক্রান্ত এসব নীতিমালা যথাযথভাবে পালন হচ্ছে কি-না তা মনিটরিং করতে কমিটিও করা হয়েছে।

প্রযোজক পরিবেশক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলমকে এখানে আহ্বায়ক করে আব্দুল লতিফ বাচ্চু, বদিউল আলম খোকন, জায়েদ খান, আবু মুসা দেবু, সোহানুর রহমান সোহান, মো: ইকবাল, আলিম উল্ল্যাহ খোকন, কবিরুল ইসলাম রানা, আসাদুজ্জামান মজনু ও সুব্রতকে সদস্য করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু ও পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার সমসুরে বলেন, মুখ দেখে নীতিমালা প্রয়োগ করা হবে না। সে প্রযোজক হউক বা পরিচালক হউক কিংবা শিল্পী হউক না মানলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ছাড় দেয়া হবে না।