Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

পানি নেই কালীগঞ্জের নদীগুলোতে, দেশী প্রজাতির মাছ সংকটে ঝিনাইদহ

পানি নেই কালীগঞ্জের নদীগুলোতে, দেশী প্রজাতির মাছ সংকটে

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নদী বিলগুলি ঘুরে দেখা যায়, মৌসুম হিসাবে কোথাও তেমন কোন পানি নেই। বৃষ্টি বা পানির অভাবে আমন ধানের লক্ষমাত্রা পূরন না হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। এ এলাকার মাঠে পানি নেই বললেই চলে। তবে নদীগুলোতে পানি আছে অতি সামান্য। যা একটু আধটু পানি আছে সেখানে দেখা গেছে নদীতে বাঁধ দিয়ে ছোট বড় মাছ ধরছে এক শ্রেনির মৎস্যজীবিরা। এদিকে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ভ্যাপসা গরমে জনজীবন অস্থির হয়ে পড়েছে। কোথাও যেন নেই স্বস্থির নিঃশ্বাস। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে গোটা ঝিনাইদহ এলাকায় একই অবস্থা বিরাজমান। 

কালীগঞ্জ উপজেলার বেগবতি নদীর পাড়ের বারোপাখিয় গ্রামের প্রবীণ কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, বদলে গেছে সবকিছু। আগে বর্ষাকালের শুরুতেই ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার চিত্রা, বেগবতি, ভৈরব বুড়িগাং, কাজুলির বিল, দিঘার বিলসহ বিভিন্ন বাওড় ও মাঠ ঘাট জুড়ে নতুন পানির আগমন ঘটতো। আকাশ ভেঙে যেন বৃষ্টির পানি পড়তো। সে সময় এ এলাকার মানুষেরা এসব জলাশয়গুলোতে খেয়া জালসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে নতুন পানিতে নানা প্রজাতির দেশী মাছ শিকার করা হতো। এখন পানিও নেই, মাছও নেই, বদলে গেছে সবই। এ কারণে এবার মাছ সংকট দেখা দিতে পারে। 

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল করিম বলেন, বর্ষাকালে তুলনামুলক বৃষ্টি হচ্ছে না ঠিকই তবে মাঝে মধ্যে যে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে আশা করি আমনে কোন সমস্যা হবে না। এখনো প্রখর খরা নেই কাজেই লক্ষমাত্রা পূরন না হওয়ার কোন কারন নেই। 

কালীগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ সাইদুর রহমান রেজা বলেন, পানি শুন্যতার কারণে মরুকরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সামগ্রিক অবস্থা বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা এমনটাই আশঙ্কা করছেন। মরুকরণের প্রধান দুটি বিষয় হচ্ছে একটি বিশাল এলাকা জুড়ে যদি সেখানকার মাটি অনুর্বর হতে থাকে এবং যদি নদী-নালা, খাল-বিল শুকিয়ে যেতে থাকে এবং বৃষ্টির অভাব ঘটে। বিগত কয়েক দশক ধরে এ লক্ষণগুলো খুব বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে বাংলাদেশে। প্রতিবছর কোনো না কোনো নদীর শাখা ধীরে ধীরে পলি পড়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো নদী দখল হয়ে যাচ্ছে ভূমিদস্যুদের হাতে। পর্যাপ্ত পরিমানে বৃষ্টি না হওয়ার কারনে ইতিমধ্যে অনেক দেশী প্রজাতির মাছ হারিয়ে গিয়েছে। নদী, খাল বিলে বর্ষা মৌসুমে মাছের প্রজনন সময় আর এই মৌসুমে যদি নদীতে পানি না থাকে তাহলে খুব শিঘ্রই দেশী প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশী। নদীতে পলি জমে ভরাট হওয়ার কারনে নদির নাব্যতা হারিয়ে স্রোত বাঁধাপ্রাপ্ত হয়ে নদীগুলো এখন মরা খালে পরিনত হয়েছে। এখন আমরা যা কিছুই করি না কেন মূল বিষয় হচ্ছে দেশী প্রজাতির মাছ রাখতে হলে নদী খননের বিকল্প নেই। নদীতে সারা বছর পানি থাকতে হবে তাহলে এই দেশী প্রজাতির মাছ যুগ যুগ ধরে থাকবে।