Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

ভাঙ্গায় বঙ্গবন্ধু মানমন্দির ও পর্যটনকেন্দ্র এলাকা পরিদর্শনে মন্ত্রনালয় টিম ফরিদপুর

ভাঙ্গায় বঙ্গবন্ধু মানমন্দির ও পর্যটনকেন্দ্র এলাকা পরিদর্শনে মন্ত্রনালয় টিম

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নূরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের ভাঙ্গারদিয়া ও বিলধোপা ডাঙ্গা গ্রামের মধ্যবর্তী অনন্য ভৌগোলিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বঙ্গবন্ধু মানমন্দির ও পর্যটনকেন্দ্র জমি এলাকা সরোজমিনে পরিদর্শন করেছেন জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের টিম সদস্যরা। 

শুক্রবার দুপুরে প্রবল ভারী বর্ষণকে উপেক্ষা করে একাডেমিক কিউরেটর সুকল্যান বাছারের নেতৃত্বে ৫ সদস্যর একটি টিম সাংবাদিক, ইউপি চেয়ারম্যান ও গ্রামের সাধারণ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রায় দুইঘণ্টা সময়ব্যাপী বঙ্গবন্ধু মানমন্দির ও পর্যটনকেন্দ্র এলাকার জমি এলাকাটি সরোজমিনে পরিদর্শন করেন। 

এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুকতাদিরুল আহমেদ, ভাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম হাবিবুর রহমান আল হাবিব, নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম তারেক, লিড-নিউজ ২৪ ডটকম সম্পাদক মামুনুর রশিদ, সাংবাদিক সরোয়ার হোসেনসহ প্রমুখ।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত লেখক, পদার্থবিদ ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘একটি স্বপ্ন’ প্রবন্ধে মানমন্দির নির্মাণের উদ্যোগের কথা জানা যায়। এ খবর জানার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙ্গারদিয়া গ্রামের স্থানটি দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন আসতে শুরু করেন। প্রবন্ধে জাফর ইকবাল আরও জানিয়েছেন, পৃথিবীতে তিনটি পূর্ব পশ্চিম বিস্তৃত রেখা আছে, সেগুলো হলো কর্কট ক্রান্তি, মকর ক্রান্তি ও বিষুব রেখা। ঠিক এ রকম চারটি উত্তর দক্ষিণ বিস্তৃত রেখা আছে, সেগুলো হলো শূন্য ডিগ্রি, ৯০ ডিগ্রি, ১৮০ ডিগ্রি এবং ২৭০ ডিগ্রি দ্রাঘিমা।

চারটি উত্তর দক্ষিণ রেখা এবং তিনটি পূর্ব পশ্চিম রেখা, সব মিলিয়ে বারো জায়গায় ছেদ করেছে। ১২টি বিন্দুর ১০টি বিন্দুই পড়েছে সাগর মহাসাগরে। এর মধ্যে শুধু দুইটি ছেদবিন্দু পড়েছে স্থলভাগে। এর একটি পড়েছে সাহারা মরুভূমিতে যেখানে মানুষ যেতে পারেনা। আর অন্য বিন্দুটি পড়েছে বাংলাদেশে। আরো নির্দিষ্ট করে বললে কর্কট ক্রান্তি এবং ৯০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমার ছেদবিন্দুটি পড়েছে ভাঙ্গা উপজেলায়। আর ঠিক সেখানেই বঙ্গবন্ধুর নামে মানমন্দির নির্মাণের প্রস্তাব উঠেছে।

সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেন জাফর ইকবাল। প্রবন্ধে অধ্যাপক জাফর ইকবাল আরও জানিয়েছেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানমন্দির’ স্থাপন করার জন্য একটা প্রকল্পের কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। কারিগরি কমিটি তৈরি করে এরইমধ্যে একটি সভাও হয়ে গেছে।

গুগল ম্যাপে খুব সহজেই ছেদবিন্দুটি দেখা যাবে। ফরিদপুরের কাছে ভাঙ্গা গুগল ম্যাপে গিয়ে ২৩.৫ঘ ৯০ঊ লিখলে সেটি কর্কট ক্রান্তি এবং ৯০ ডিগ্রি দ্রাঘিমা কোথায় ছেদ করেছে সেটা দেখিয়ে দেবে।

মানমন্দির তৈরি করার জন্য ভাঙ্গাকে একেবারে আদর্শতম জায়গা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কেননা ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার পথ হচ্ছে দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে এবং এশিয়ান হাইওয়ের করিডোর-১ এর অংশ। বঙ্গবন্ধুর নামে মানমন্দির নির্মিত হলে তা হয়ে উঠবে অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। এটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে শুধু দেশের পর্যটকসহ সারা বিশ্ব থেকে মানুষ আসবে ভৌগোলিক এ গুরুত্বপূর্ণ স্থানটি দেখতে। 

জাফর ইকবাল তার লেখায় বলেছেন, আমি নিশ্চিত জমি চাষ করার সময় অনেক মানুষ এই বিন্দুটির উপর দিয়ে হেঁটে গেছে কিন্তু এই জায়গাটির অচিন্ত্যনীয় ভৌগোলিক গুরুত্ব অনুভব করে সম্ভবত আর কেউ এখানে পা দেয়নি।  প্রতি বছর জুন মাসের ২১ তারিখ (অর্থাৎ ঠিক এক সপ্তাহ আগে) দুপুর ১২টার সময় কেউ যদি বাইরে দাঁড়ায় এবং আকাশে মেঘ না থাকে তাহলে আবিষ্কার করবে সূর্য ঠিক মাথার উপর এবং সেজন্য সেখানে তার কোনো ছায়া পড়ছে না। কর্কট ক্রান্তি এবং ৯০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমার সেই ছেদ বিন্দুতে সেটি একেবারে পুরোপুরি আক্ষরিকভাবে সত্যি।