Opu Hasnat

আজ ২০ এপ্রিল শনিবার ২০২৪,

সুনামগঞ্জের নৌ-পথে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি, দেখার কেউ নেই! সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জের নৌ-পথে টোল আদায়ের নামে  চাঁদাবাজি, দেখার কেউ নেই!

সংবাদ প্রকাশের পরও থামছে না সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার ফাজিলপুর নদী ও বিশ্বম্ভরপুর অংশে রক্তি নদীতে চাঁদাবাজি। তাহিরপুরের বাদাঘাট ইউনিয়নের যাদুকাটা নদীর তীরবর্তী ফাজিলপুর এলাকার আনোায়ারপুর ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় এক কিলোঃ নদীপথে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি এখন প্রতিযোগীতা মুলক হয়ে উঠেছে। ওই নৌপথে চাদাঁবাজ চক্র প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সরকারের নির্ধারিত টোল আদায়ের পরিবর্তে অতিরিক্ত টোল আদায়ের নামে রীতিমতো চাদাঁ আদায় করে আসলেও দেখার যেন কেউ নেই।

এই নদী পথে চলাচলকারী ভলগেট নৌকার মালিক ও মাঝিরা রীতিমতো চাঁদাবাজ চক্রের অত্যাচার নির্যাতন আর জুলমে অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন। জানা যায়, একটি চাঁদাবাজ চক্র এই নদীতে প্রতিটি ভলগেট (নৌকা) থেকে সরকারের নির্ধারিত আড়াই শত টাকা থেকে তিনশত টাকা হারে  রয়েলিটি (ঢোল) আদায়ের কথা থাকলেও চাঁদাবাজরা আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা চাদাঁ দাবি করেন। তাদের চাহিদা মতো টাকা না দিলে বালু ও পাথর বোঝাই নৌকা আটকিয়ে রাখা, মাঝিদের ভয়ভীতি প্রদর্শন সহ তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করারও অভিযোগ করেন নৌকার মাঝিরা। এই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ছোটবড় ৬ থেকে ২০ হাজার ফুটের অধিক বহনকারী ২ থেকে ৩ শতাধিক নৌকা বালু ও পাথর বোঝাই করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করে থাকে। বাংলা সনের চৈত্র মাসের শেষের দিকে প্রশাসন থেকে ৪৮ লাখ টাকায় এই ফাজিলুর ঘাটটি এক বছরের জন্য ইজারা নেন, ফাজিলুপুর গ্রামের মুর্তুজ আলী (রাজাহাঁস) এর ছেলে মোঃ কাশেম মিয়া ও মোঃ ফয়সল মিয়া।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় এই ঘাটে সরকারের নির্ধারিত টোল আদায়ে প্রতি বলগেট থেকে ২৫০ থেকে ৩০০ শত টাকার মধ্যে রয়েলিটি (টোল) আদায়ের শর্ত থাকলেও ফাজিলুপুর হতে আনোয়ারপুর পর্যন্ত এই এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ইজারাদার মোঃ কাশেম মিয়া, তার সহোদর মোঃ ফয়সল আহমেদ, বালিজুরী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দক্ষিণকূল  গ্রামের নবাব মিয়ার ছেলে চিহিৃত চাদাঁবাজ মোঃ বাবুল মিয়া (মেম্বার) এর নেতৃত্বে  রহম মিয়া, সেলিম মিয়া ও দক্ষিণকূল গ্রামের নবার মিয়ার ছেলে সারোয়ার মিয়ার ও তার সহোদর জাকারিন মিয়া গংরা বিআইডাব্লিটির এর নাম ভাঙ্গিলে প্রতিদিন সরকারের নির্দেশ অমান্য করে ফাজিরপুর এলাকায় নদীতে চাদাঁবাজি করছেন বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। 

অপরদিকে, উপজেলার বিন্নাকুলি দূর্লভপুর এলাকার রক্তিনদী হতে টোল আদায়ের নামে বাক্কির নেতৃত্বে চলছে বলগেট নৌকায় ব্যাপক চাদাঁবাজি এবং রক্তিনদীর আরেকটি পয়েন্টে প্রশাসনের কঠোর নজরদারী ও তদারকি না থাকার কারণে এই টোল আাদয়ের নামে প্রতিদিন এই চক্রটি হতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। প্রায় সময় টোল আদায়ের নামে নৌকার মাঝিদের নৌকা কিংবা বলগেট আটকিয়ে তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করার ঘটনাও প্রতিনিয়ত ঘটছে। অপর দিকে তাহিরপুরের যাদুকাটা নদীতে ছড়া পাঠানপাড়া এলাকায় বাদাঘাট ইউনিয়নের ছড়াগ্রামের গোলাপ মিয়ার পুত্র খোকন মিয়ার নেতৃত্বে রয়েলেটির নামে চলছে চাঁদাবাজি। অবশ্য খোকন  মিয়া এ বিশষে অস্বীকার করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন ভলগেট নৌকার মাঝি জানান, নৌকায় বালু বোঝাই করে কুমিল্লার দাউদকান্তি যাওয়ার সময় রয়েলিটি ঘাটে আসামাত্র ফাজিলপুরের ইজারাদার বালিজুরী ইউনিয়নের ফাজিলপুর গ্রামের রাজাহাসের ছেলে মোঃ কাশেম মিয়ার লোকজন তার ভলগেট আটকিয়ে করে ৩ হাজার টাকা টোল দাবী করেন। কিন্তু মাঝি ৮০ টাকার পরিবর্তে এত টাকা চাদা দাবী পূরণ করতে অপরাগতা করলে কাশেম মিয়ার নেতৃত্বে ১০-১২ জন মিলে তাকে ৩ হাজার টাকা দিতে চাপ প্রয়োগ করে। তা না হলে নৌকা আটক রেখে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার হুমকি দেয়া হয়। তারা প্রাণের ভয়ে এক হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে মুক্তি নেন বলে গণমাধ্যমকর্মীদের জানান।

এ ব্যাপারে ইজারাাদারের মোঠো ফোন বন্ধ পেয়ে তার ছোট ভাই মোঃ ফয়সল আহমদ এর সাথে মোবাইল ফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় জেনে লাইনটি কেটে দেয়ায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। 

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসিফ ইনতেয়াজের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রতিটি ভলগেট নৌকা হতে আড়াই শত থেকে তিনশত টাকা টোল আদায়ের নির্দেশ দেয়া আছে। তবে যারা অতিরিক্ত টোল আদায় করছেন তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

এই বিভাগের অন্যান্য খবর