Opu Hasnat

আজ ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ২০২৪,

সিরাজদিখানে স্বামীর নির্যাতনে গৃহবধূ হাসপাতালে নারী ও শিশুমুন্সিগঞ্জ

সিরাজদিখানে স্বামীর নির্যাতনে গৃহবধূ হাসপাতালে

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের অমানবিক নির্যাতনের কারণে ৪ দিন ধরে এক গৃহবধূ কাকালী আক্তার মাসুমা (২১) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ছিল। উপজেলার বয়রাগাদী ইউনিয়নের উত্তর বাহের ঘাটা গ্রামে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। কাকলী বাহের ঘাটা গ্রামের ফজল শেখের ছেলে মো. হাসান শেখের (৩৫) স্ত্রী ও উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের কাজীরবাগ গ্রামের মো. শাহালম কাজীর মেয়ে।  

গৃহবধূ কাকলী আক্তার মাসুমা জানায়, গত শনিবার দুপুরে মাদক সেবী স্বামী হাসান শেখ, শ্বশুর ফজল শেখ, শ্বাশুরী মাসু বেগম ও মেঝো ভাসুর কামাল শেখ মিলে তাকে অমানবিক ভাবে মারধর করেছে। অসুস্থ হলেও হাসপাতালে নেয়নি তারা। পরদিন রোববার তার বাবা খবর পেয়ে বেলা ১১ নিয়ে মেয়ের বাড়ি যায়। এরপর মেয়েকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। মাসুমা আরো জানায় স্বামী রাজ মিস্ত্রির কাজ করত। এখন সাপ্তাহে দু’একদিন কাজে যায়। বাড়িতে ও এলাকার বিভিন্ন জায়গায় বসে ইয়াবা খায়। আর টাকা ফুরিয়ে গেলে আমাকে মারধর করে। বলে তোর বাবার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আয়। আমার বাবা মা গরীব আমি টাকা দিব কোথা থেকে। শ্বাশুরীকে নেশা খাওয়ার কথা বললে তিনি আমাকে আরো বকা ঝকা করেন এবং চুলে ধরে মারধর করেন। আবার বলেন আমার ছেলে বাবা-গাঁজা খাইব তোর কি। একটু কিছু হলেই আগে পরে সবাই কমবেশি মারধর করত। আমি যেন তাদের কাছে মানুষ না। শনিবার স্বামী নিজে রাজ মিস্ত্রী কাজের গজ (স্টীলের) দিয়া আমার শরীর পিটাইয়া নিলা ফুলা করছে। শাশুরী চুলে ধইরা মারছে। দেখেন শরীরে দাগের কি অবস্থা। মহিলা নার্সরা দেখছে কত জায়গায় আঘাত আছে। ৩ বছর ধইরা বিয়ে হইছে, দুই বছরের বাচ্চা আছে নাম আবু বকর সিদ্দিক। বাচ্চাটার মুখের দিকে চাইয়া সহ্য কইরা রইছি। শ্বশুর-শ্বাশুরীর কাছে বিচার পাইনা, তারাও মারধর করে। আমি একটু সুস্থ্য হয়ে থানায় গিয়া তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব।

কাকলীর মা পারভীন বেগম সন্ধ্যায় জানান হাসপাতালে তারা এসে ভয় দেখিয়েছে। তাই আমরা ভয়ে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি চলে এসেছি। রাতে থানায় যাব, অভিযোগ করব। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বদিউজ্জামান জানান, ৪ দিন ধরে মহিলা ভর্তি আছে। সিট খালি না থাকায় সিজার রুমের একটি সিটে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সারা শরীরে নিলা ফুলা জখমের চিহ্ন আছে। ভয় আতঙ্কে বুধবার দিবাগত গভীর রাতে (বৃহস্পতিবার-২০জুন) তারা না বলে চলে গেছে।  

এ প্রসঙ্গে সিরাজদিখান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফরিদ উদ্দিন জানান বিষয়টি আমাদের কাছে কেউ জানায় নি। কোন অভিযোগ পাই নি। এখন জানতে পারলাম। আমি অফিসার পাঠিয়ে খবর নেবো। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেব।