Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

বড় ব্যবধানে হারলো বাংলাদেশ খেলাধুলা

বড় ব্যবধানে হারলো বাংলাদেশ

সাকিব আল হাসানের দুর্দান্ত সেঞ্চুরীর পরও বড় ব্যবধানে হেরে গেলো বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ১০৬ রানের বিশাল ব্যবধানে হারে টিম টাইগার।

নতুন বলে বাংলাদেশকে দারুণ ভোগানো জফরা আর্চার বোলিংয়ে ফিরে জোড়া আঘাতে মেহেদী হাসান মিরাজ ও মুস্তাফিজুর রহমানকে বিদায় করে ২৮০ রানে থামিয়ে দিলেন বাংলাদেশকে। রানের পাহাড় গড়া ইংল্যান্ড জিতল ১০৬ রানে।

টস হেরে ইংল্যান্ড ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৮৬ রানের পাহাড় গড়ে তোলেন। সেই রান তারা করতে নেমে বাংলাদেশ ৪৮.৫ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২৮০ রান করতে সক্ষম হয়।

৩৮৭ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে শুরুতেই হার্ডহিটিং ওপেনার সৌম্য সরকারের (২) বিদায়ে হোঁচট খায় বাংলাদেশ। জোফরা আর্চারের দ্বিতীয় ওভারে সরাসরি বোল্ড হন এই বাঁহাতি। রান পাহাড়ে চাপা পড়ে দ্বিতীয় উইকেটও হারায় বাংলাদেশ। মার্ক উডের করা দলীয় ১২তম ওভারের শেষ বলে মারতে গিয়ে শর্টে থাকা ইয়ন মরগানকে ক্যাচ দেন তামিম ইকবাল। ২৯ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ১৯ রান।
 
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১০৬ রানের পার্টনারশিপ গড়েন মুশফিকুর রহিম। তবে দলীয় ১৬৯ রানে লিয়াম প্লাঙ্কেটের বলে ব্যাটের কানায় লেগে উঠে গেলে জেসন রয়ের ক্যাচে ৪৪ রানে বিদায় নেন মুশফিক। ৫০ বলে দুটি চার হাঁকান তিনি। আর পরের ওভারেই নতুন ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন শূন্য রানে আদিল রশিদের বলে উইকেটরক্ষক জনি বেয়ারস্টোকে ক্যাচ দেন।
 
কিন্তু মাহমদউল্লাহ রিয়াদের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বকাপে সেঞ্চুরির দেখা পান সাকিব। রিয়াদ ২০১৫ সালে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন। ৯৫ বলে ৯টি চার ও একটি ছক্কায় তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন সাকিব। এটি তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারে অষ্টম সেঞ্চুরি।
 
এর আগে জেসন রয়ের বিধ্বংসী সেঞ্চুরি ও অন্য ব্যাটসম্যানদের দাপুটে ব্যাটিংয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ফিল্ডিংয়ে নামা বাংলাদেশ ৩৮৭ রানের পাহাড়সম টার্গেট পায়। বাংলাদেশি বোলারদের তুলোধুনো করে এই আসরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রানের স্কোর গড়ে ইংলিশরা।
  
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা দারুণ করে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। যেখানে উইকেট পেতে রীতিমতো ঘাম ঝরাতে হচ্ছে বাংলাদেশি বোলারদের। জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টোর ব্যাটে দলীয় সেঞ্চুরির দেখা পায় ইংল্যান্ড। তবে শেষ পর্যন্ত দলীয় ১২৮ রানে বেয়ারস্টোকে ফেরান বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ব্যক্তিগত ৫১ রানে মাশরাফির বলে মেহেদি হাসান মিরাজের দুর্দান্ত এক ক্যাচে ফেরেন বেয়ারস্টো।
 
মাশরাফির পর সফলতা পেয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। জো রুটকে ইনসাইডেজ বোল্ড করে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান এই তরুণ অলরাউন্ডার। ২১ রান করেন রুট।
 
দলীয় ৩৫তম ওভারে মেহেদি হাসান মিরাজের করা প্রথম দিন বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে ব্যক্তিগত দেড়’শ পূরণ করেন জেসন রয়। তবে চতুর্থ বলে তিনি ফের উঠিয়ে মারলে মাশরাফির ক্যাচে ধরা পড়েন। ১২১ বলে ১৪টি চার ও ৫টি ছক্কায় ১৫৩ করেন এই ইংলিশ ওপেনার। ক্যারিয়ারে এটি তার নবম সেঞ্চুরি।

৪৬তম ওভারে ও ইংলিশদের দলীয় ৩৩০ রানের মাথায় জস বাটলারকে ফেরান মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। বাউন্ডারি লাইনে দারুণ এক ক্যাচ ধরে বাটলারকে প্যাভিলিয়নমূখী করান সৌম্য সরকার। ৪৪ বলে ২টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৬৪ করেন ভয়ঙ্কর বাটলার।
 
মিরাজের দ্বিতীয় শিকার হয়ে পরের ওভারেই ফেরেন ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ন মরগান (৩৫)। আর এ ম্যাচে বেশ খরুচে মোস্তাফিজুর রহমান বেন স্টোকসের (৬) আউট করে নিজের প্রথম উইকেট লাভ করেন। শেষ দিকে ক্রিস ওকস (১৮) ও লিয়াম প্লাঙ্কেট (২৭) অপরাজিত ঝড়ো ব্যাট চালিয়ে রানের গতি আরও বাড়িয়ে দেন।
 
মিরাজ ও সাইফউদ্দিন বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে দুটি করে উইকেট নেন। এছাড়া মাশরাফি ও মোস্তাফিজুর একটি করে উইকেট ভাগ করেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

ইংল্যান্ড : ৫০ ওভারে ৩৮৬/৬ (রয় ১৫৩, বেয়ারস্টো ৫১, রুট ২১, বাটলার ৬৪, মর্গ্যান ৩৫, স্টোকস ৬, ওকস ১৮*, প্লানকেট ২৭*; সাকিব ১০-০-৭১-০, মাশরাফি ১০-০-৬৮-১, সাইফ ৯-০-৭৮-২, মুস্তাফিজ ৯-০-৭৫-১, মিরাজ ১০-০-৬৭-২, মোসাদ্দেক ২-০-২৪-০)

বাংলাদেশ : ৪৮.৫ ওভারে ২৮০ (তামিম ১৯, সৌম্য ২, সাকিব ১২১, মুশফিক ৪৪, মিঠুন ০, মাহমুদউল্লাহ ২৮, মোসাদ্দেক ২৬, সাইফ ৫, মিরাজ ১২, মাশরাফি ৪*, মুস্তাফিজ ০; ওকস ৮-০-৬৭-০, আর্চার ৮.৫-২-২৯-৩, প্লানকেট ৮-০-৩৬-১, উড ৮-০-৫২-২, রশিদ ১০-০-৬৪-১, স্টোকস ৬-১-২৩-৩)