Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

চট্টগ্রামে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে স্থাপিত হলো একখন্ড বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ মিনার চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে স্থাপিত হলো একখন্ড বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ মিনার

মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মৃতি অম্লান করে রাখার উদ্দেশ্যে স্থাপন করা হয়েছে  বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শীর্ষক নবনির্মিত স্থাপনা। চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কমপাউন্ডে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শীর্ষক এই স্থাপনার ফলক উম্মোচন করে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন। পরে মেয়র এ স্মৃতিসৌধে পুস্পার্ঘ অর্পন করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন। ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে আটশত বর্গফুট জায়গায় নিয়ে এই স্থাপনা করা হয়েছে। এই স্মৃতিসৌধ সকল দেশ প্রেমিক নাগরিক ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয়  ও সাফল্যের যুগলবন্দি রচনা করা হয়েছে। সাতটি ত্রিভুজ আকৃতি মিনারের শিখর দেশের মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের সাতটি পর্যায়ের প্রতিটি এক ভাবব্যঞ্জনাতে প্রবাহিত হচ্ছে। এই সাতটি পর্যায়ের প্রতিটি সূচিত হয় বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন এর মাধ্যমে। পরবর্তীতে চুয়ান্ন, ছাপান্ন, বাষট্টি, ছেষট্টি ও উনসত্তরের গণ অভ্যুথুনের মাধ্যমে দিয়ে অগ্রসর হয়ে একাত্তরের স্বশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ এর মাধ্যমে স্বাধীনতা সংগ্রামের চুড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। 

এছাড়াও এই স্থাপনায় বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চ ভাষণ এবং বঙ্গবন্ধু জম্ম ও শাহাদাৎ বরণের ইতিহাস সন্নিবেশিত করা হয়েছে।এই স্থাপনার মুল পরিকল্পিনা ও বাস্তবায়নে মুল দায়িত্বে ছিলেন চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাবেক অধ্যক্ষ প্রকৌশলী নুরুল কবির। ঢাকা স্মৃতিসৌধের আদলে ছোট আকারে একখন্ড বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশে  মিনার স্থাপিত করা হয়েছে। এই স্মৃতিসৌধের উচ্চতা রয়েছে ১৬ ফুট। 

ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায়  মেয়র বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ  এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ কল্পনা করা যায় না । তার ত্যাগ আন্দোলন সংগ্রামের ফল আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ। মেয়র আরো বলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি পৃথিবীর মানচিত্রে  বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছে। এর পেছনে রয়েছে ৩০ লাখ শহীদদের আত্মদান,আড়াই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম হারানোর বেদনা। এদের আত্মত্যাগের বিনিময়ের পর ১৬ ডিসেম্বর বিজয়  অর্জিত হয়েছে। মহান এই দিনের স্মরণে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গনে স্থাপন করা হয়েছে স্মৃতি সৌধ। এই স্মৃতিসৌধের সম্মান মর্যাদা রক্ষায় ইনস্টিটিউট শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদেরকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান মেয়র। 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আবদুর রহমান। সভায় সাবেক অধ্যক্ষ নুরুল কবীর,বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ এম মহিউদ্দিন, চট্টগ্রাম চেম্বারে সাবেক পরিচালক  মাহফুজুল হক শাহ, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও অন্যান্যে মধ্যে আইডিইবি'র সাধারণ সম্পাদক মো জসিম উদ্দিন, ইলেকট্রিক্যাল বিভাগীয় প্রধান স্বপন কুমার নাথ, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগ সভাপতি একরামুল কবীর, কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক আরমান চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এই সময় আরো উপস্থিত ছিলেন আই এম সি’র সদস্য প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ,মুক্তিযোদ্ধা ও প্রাক্তণ ছাত্র দেওয়ান মাকসুদ,ইঞ্জিনিয়ার এম.এ রশিদ, মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিনসহ ইনস্টিটিউটের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। 

এদিকে, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন মানুষের সামগ্রিক দক্ষতা উন্নয়নের উপর সরকারের সফলতা নির্ভর করছে বলে উল্লেখ করে এসডিজি’র লক্ষ্য অর্জনে আমাদের তরুণ জনগোষ্ঠিকে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার আহবান জানান। 

রবিবার সকালে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও এসডিজি অর্জনে কারিগরি শিক্ষার ভূমিকা শীর্ষক এক সেমিনার সিটি মেয়র একথা বলেন।  ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আবদুর রহমান অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন।  এ সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন  আই এম সি’র সদস্য প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, মুক্তিযোদ্ধা ও প্রাক্তণ ছাত্র দেওয়ান মাকসুদ, ইঞ্জিনিয়ার এম.এ রশিদ, মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন।

সিটি মেয়র আরো বলেন ‘আমাদের রয়েছে বিপুল তরুণ জনগোষ্ঠী। তাদেরকে  দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। বর্তমানে যারা তরুণ, চিরকাল তারা তরুণ থাকবে না। এখনই তাদের দক্ষতা দিতে হবে। কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমেই তরুণদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা দেওয়া সম্ভব। এরা দেশে-বিদেশে কাজ করতে পারবে। কেননা, দক্ষ জনশক্তিই পারে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বৃদ্ধি করে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখতে। তিনি বলেন বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হলে আমাদের বিকাশমান প্রযু্িক্ত জ্ঞানে দক্ষ হবার কোনো বিকল্প নেই। তাই এসডিজি“র লক্ষ্য সাফল্যজনক ভাবে অর্জনের জন্য আমরা বিশ্ব পরিক্রমার বাইরে থাকতে পারিনা । এই ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে মানবসম্পদই মুখ্য ভুমিকা রাখবে বলে মেয়র উল্লেখ করেন। 

তিনি বলেন সরকার ভিশন ২০২১ অর্জনে  কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসার করানোর জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তাই দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করার যে লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে, তা অর্জনের জন্য কারিগরি শিক্ষা বিস্তারের কোনো বিকল্প নেই।দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে সরকার প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বলেন মেয়র উল্লেখ করেন।