Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

ভাঙ্গায় প্রেমিকের বাড়ীতে অবস্থান নিলো অন্তঃসত্তা এক কিশোরী ! নারী ও শিশুফরিদপুর

ভাঙ্গায় প্রেমিকের বাড়ীতে অবস্থান নিলো অন্তঃসত্তা এক কিশোরী !

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার পৌর সদরের চৌধুরীকান্দা গ্রামে নিজের অনাগত সন্তানের পিতৃপরিচয় পেতে প্রেমিকের বাড়ীতে অবস্থান নিয়েছে কিশোরী সাদিয়া আক্তার (১৭)। তার এই অনশনে একটুও মন গলছে না প্রেমিকের বাড়ীর লোকজনের উল্টো তাকে বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার করে বাড়ী থেকে বেড় করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন তারা। সাদিয়া ওই গ্রামের প্রেমিকের পাশের বাড়ী হতদরিদ্র ভ্যান চালক মোশারফ হোসেনের মেয়ে।

এদিকে রবিবার সকালে সাদিয়াকে ভাঙ্গা থানা পুলিশ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দেয়ার জন্য নেয়ার কথা রয়েছে।

জানাযায় শুক্রবার (১৭ মে) সকাল থেকে সাদিয়া তার প্রেমিক লুৎফর তালুকদারের বাড়িতে অবস্থান নেয়। গত দুইদিন ধরে অনশন অবস্থায় স্ত্রীর মর্যাদা ও অনাগত সন্তানের পিতৃপরিচয় ফিরে পেতে ঘরের মধ্যে আকুতি-মিনতি করে যাচ্ছে সাদিয়া। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) রবিউল ইসলাম ও থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাঈদুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন । এদিকে, ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য স্কুলছাত্রীর প্রাথমিকভাবে মেডিকেল চেকআপ করানো হয়। রির্পোটে সাদিয়া ৪০ সপ্তাহের অন্তঃসত্তা বলে জানা যায়। শনিবার সকালে প্রেমিক লুৎফর তালুকদারের বিরুদ্ধে ভাঙ্গা থানায় একটি মামলা করে সাদিয়ার পরিবার। এতে আসামী করা হয়েছে প্রেমিক লুৎফর তালুকদারকে। মামলা নং-৫১। এদিকে প্রায় দশ মাস আগে লুৎফর তালুকদারকে তার পরিবার তার আপন মামাতো বোনের সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়। জানাগেছে সেই স্ত্রীও অন্তঃসত্তা।   

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশুতোষ বলেন, মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে স্কুলছাত্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের অভিনয় করে আসছিল ওই গ্রামের ছিদ্দিক তালুকদারের ছেলে লুৎফর তালুকদার (২৫)। লুৎফর তালুকদার বছর খানেক আগে ওই গ্রামের পাশের একটি মেয়েকে বিয়ে করে। বিয়ের পরও প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই স্কুলছাত্রীর সঙ্গে একাধিকবার দৈহিক সম্পর্ক করে লুৎফর। এতে করে স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্তা হয়ে যায়। বর্তমানে ৯ মাসের অন্তঃসত্তা স্কুলছাত্রী। বিষয়টি নিয়ে উভয় পরিবারের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হলেও কোনো সমাধানে পৌঁছাতে না পেরে স্কুলছাত্রী প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেয়। মামলা রেকর্ডের পর আমরা লুৎফরকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। স্কুলছাত্রীকে রোববার সকালে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দেয়ার জন্য নেয়া হবে। 

সাদিয়ার বাবা মোশারফ হোসেন বলেন, দিনমজুরি করে চার মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে কোনোরকম সংসার চলে আমার। নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় টাকার জন্য মেয়েটিকে করিম জুট মিলে কাজ করতে পাঠাই। প্রেমের সম্পর্ক গড়ে লুৎফর আমার মেয়ের এই সর্বনাশ করেছে। আমি আমার মেয়ের মর্যাদা রক্ষার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাই।

অনশনরত সাদিয়া জানায়, আমার সঙ্গে দীর্ঘ তিন বছর ধরে প্রেম করে আসছে লুৎফর। আমার গর্ভে সন্তান রয়েছে বিষয়টি লুৎফর জানার পর আমাকে ঘরে তুলে নেবে এবং স্ত্রীর মর্যদা দেবে বলে কয়েক মাস ধরে ঘোরাচ্ছে। আমার সন্তান প্রসবের সময় হয়ে যাওয়ায় বিষয়টি আমি পরিবারকে জানাই। আমার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে লুৎফর, আমি স্ত্রীর মযার্দা নিয়ে সমাজে বাঁচতে চাই।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত লুৎফরের পিতা সিদ্দিক তালুকদার বলেন আমার বাড়ীতে শুক্রবার থেকে অবস্থান নিয়েছে সাদিয়া। এদিকে আমার ছেলে বিবাহিত ও সেই স্ত্রীও অন্তসত্তা। তিনি এমন ঘটনাকে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন।

ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী সাইদুর রহমান বলেন, মামলায় নেয়া হয়েছে, মামলা নং ৫১। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম।  মামলা রেকর্ডের পর আমরা লুৎফরকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। তিনি বলেন এই ঘটনার ব্যাপারে কোর রকম ছাড় দেয়া হবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।