Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

ইট ভাটার বিষাক্ত ধোয়ায় পুড়ে গেছে কয়েকশ বিঘা জমির ফসল ও গাছপালা দিনাজপুর

ইট ভাটার বিষাক্ত ধোয়ায় পুড়ে গেছে কয়েকশ বিঘা জমির ফসল ও গাছপালা

দিনাজপুরের খানসামার দুটি ইট ভাটার বিষাক্ত ধোয়ায়  খানসামা ও চিরিরবন্দর উপজেলার ভাবকি ও নশরতপুর ইউনিয়নের কুমরিয়া গ্রামের শতাধিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ  হয়েছে। বিষাক্ত ধোয়ায় ওই কৃষক ও লোকজনদের প্রায় সাড়ে ৩শ বিঘা জমির ধানক্ষেত ক্ষতিগ্রস্থ হওয়াসহ পুড়ে গেছে আম, কাঠাল, ও বাঁশ ঝাড়। এতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় কোটি টাকা। ওই এলাকার এইচ এস এইচ এবং টু-স্টার  নামের দুটি ইট ভাটার বিষাক্ত ধোয়ায় এই ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয় কৃষকরা জানায়, বোরো ধান,ভুট্টাসহ অন্যান্য ক্ষেত খামার পুড়ে গেছে। ধোয়া বন্ধ হলেও বিষাক্ত রাসায়নিক বিষক্রিয়ায় এখনো নতুন ফসলের ক্ষেতসহ গাছপালা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

এলাকাবাসী জানায়, গত ২৮ ও ২৯শে এপ্রিল রাতে এ বছরের জন্য এইচ এস এইচ এবং টু-স্টার ইট ভাটার ইট তৈরি বন্ধ করতে কার্যক্রম চলছিল। বন্ধ করার সময় হঠাৎ ভাটার চিমনি দিয়ে বিষাক্ত ও দুর্গন্ধযুক্ত ধোয়া বের হতে থাকে। রাতে ক্ষয়ক্ষতি বোঝা না গেলেও সকালে কৃষকরা দেখতে পান তাদের ক্ষেত খামার ও রাস্তায় লাগনো গাছপালার পাতা কুকড়ে যাচ্ছে। দুপুরের দিকে তারা লক্ষ্য করেন তাদের ফসলের ক্ষেত পুড়ে যাওয়ার মতো হয়ে যাচ্ছে। 

গাছপালার পাতা ও ফল ঝড়ে পড়ছে। এই বিষাক্ত ধোয়ায় কুমরিয়া ও নশরতপুর গ্রামসহ আশে পাশের কয়েকটি গ্রামের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, এলাকার আম কাঠালের গাছের পাতা কুকড়ে গেছে। ফলগুলো ঝড়ে পড়ছে। জমির ধান পুড়ে গিয়ে পাতান হয়ে গেছে। তারা ক্ষতি পুরণের দাবি করে বলেন, আমাদের পুঁজি শেষ। ক্ষতিপুরণের টাকা না পেলে আমরা পথে বসে যাবো। এ দিকে কৃষি সম্প্রসারণের পক্ষ থেকে পুড়ে যাওয়া ফসলে সাদাপানি ও ছত্রাক নাশক ওষুধ স্প্রে করার পাশাপাশি সংক্রামক রাসায়নিক গ্যাস যাতে অন্যান্য ফসলের ক্ষতি করতে না পারে সে ব্যাপারে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

ভাবকি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জানান, ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকার কাজ চলছে। এ পর্যন্ত ১৫০ জন কৃষকের প্রায় দেড়শ বিঘা জমির ফসল নষ্ট হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ভাটার মালিকের সঙ্গে ক্ষতিপুরণের ব্যাপারে আলাপ আলোচনা চলছে। বন্ধের সময় বিষাক্ত ধোয়া নির্গমন হতে পারে এ সমন্ধে কোনো ধারণাও ছিলনা ভাটা কর্তৃপক্ষের।  

দুই ইট ভাটার মালিক মান্নান সরকার ও সাইফুর রহমান তাদের ভাটার ধোয়ায় পুড়ে গেছে ফসল বিষয়টি  স্বীকার করে জানান, যতখানি পারি ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবো।  

খানসামা-চিরিরবন্দর উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান ও আফজাল হোসেন জানান, কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করার পাশাপাশি আর যাতে ক্ষতি না হয় সে জন্য পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

খানসামা ও চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ মাহবুব-উল ইসলাম ও গোলাম রব্বানী জানান, “ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকার কাজ চলছে। শতাধিক কৃষকের প্রায় সাড়ে তিন’শ বিঘা জমির ফসল নষ্ট হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। ভাটা মালিকের সঙ্গে ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে আলোচনা চলছে।