Opu Hasnat

আজ ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ২০২৪,

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে স্কুল প্রাঙ্গনে পাকা সড়ক ! রাজবাড়ী

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে স্কুল প্রাঙ্গনে পাকা সড়ক !

বিদ্যালয় প্রাঙ্গনের ভিতর দিয়ে অপরিকল্পিত ভাবে সড়ক নির্মাণ করায় কয়েকশ কমলমতি শিশুর জীবন ঝুকিতে পড়েছে। প্রতিনিয়ত সড়কটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। এতেকরে যে কোন মুহুর্তে প্রাণহানির মতো দূর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। 

রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের ১৭ নং হাউলি কেউটিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠের ভিতর দিয়ে এই পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চারদিকে সীমানা প্রাচীর নির্মাণসহ বিকল্প সড়কের দাবী জানিয়েছেন।

সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, হাউলি কেউটিল এলাকায় গ্রামীণ অবকাঠামোর প্রায় ১২ কিলোমিটার অংশ। গোয়ালন্দ উপজেলার কাটাখালী থেকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার কুঠি পাঁচুরিয়া হয়ে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কে সংযুক্ত হয়েছে। এই সড়কের উত্তর দিকে হাউলি কেউটিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি টিনশেড ঘর এবং দক্ষিণে আরেকটি পাকা দ্বিতল ভবন। বিদ্যালয়ের মধ্যদিয়ে এভাবে পাকা সড়ক চলে যাওয়ায় প্রতিনিয়তি সড়ক অতিক্রম করে শিক্ষকগন শ্রেণীকক্ষে ঝুকি নিয়ে যাতায়াত করছে। সেই সঙ্গে সড়কের উপর দিয়ে গাদাগাদি করে সম্পন্ন করা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের সমাবেশ ও সড়কের ওপরেই চলছে শিশুদের খেলাধুলা। এরমধ্যে কোন যানবাহন আসলে শিক্ষার্থীরা কোন রকম জায়গা ছেড়ে পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। 

হাইলি কেউটিল এলাকার অটোরিক্সা চালক হারুন খান বলেন, বিকল্প সড়ক দিয়ে রাজবাড়ী যেতে হলে কয়েক কিলোমিটার ঘুরতে হয়। সহজ ও স্বল্প সময়ে গোয়ালন্দ থেকে রাজবাড়ী যাতায়াতের জন্য বা পাঁচুরিয়া রেলষ্টেশন যাতায়াতের জন্য এই সড়ক দিয়ে আসাযাওয়া করি। বিদ্যালয় চলাকালিন এখানে আসা মাত্র আমরাও আশঙ্কায় থাকি কখন জানি দুর্ঘটনা ঘটে।

বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক রফিকুল ইসলাম বলেন, দুই পাশে ভবন রেখে মধ্যদিয়ে এভাবে পাকা সড়ক নির্মাণ হওয়া কতটুকো যুক্তিসঙ্গত আমার বুঝে আসেনা। শুধু নিজের সন্তান নয়, সব সন্তানই এখানে ঝুকিতে থাকে। বুকের ভিতর ধুক ধুক করতে থাকে কখন যেন কোন দুর্ঘটনার সংবাদ আসে।

হাউলি কেউটিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোলাম ইয়াছিন বলেন, বাড়তি জায়গা না থাকায় বিদ্যালয়ের সমাবেশ (এ্যাসেম্বেলি) রাস্তার ওপর করতে হয়। এছাড়া টিফিন বা ছুটির সময় প্রায় ২৫০জন বাচ্চাকে সহজে ধরে রাখা যায়না। যে কারণে সব সময় শিশুরা ঝুকিতে থাকে। 

হাউলি কেউটিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আজু শিকদার বলেন, প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে সড়কটি ব্যাস্ত হয়ে উঠছে। বিদ্যালয়ের মাঠের মধ্যদিয়ে এভাবে সড়ক যাওয়ায় সব সময় একটা দূর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। বিকল্প সড়ক তৈরী করে শিশুদের নিরাপত্তায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণের দাবি জানান তিনি।

গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মালেক বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে স্থানীয়ভাবে জায়গা নিতে উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলেছি। কিন্তু তেমন সহযোগিতা পাননি বলে জানিয়েছেন। এজন্য বিদ্যালয়ের পিয়ন দিয়ে অন্তত ছেলে-মেয়েরা যাতায়াতকালে যাতে নির্বিঘ্নে পারাপার হতে পারে তা দেখভাল করতে বলেছি। এছাড়া বিষয়টি সকলের সম্বনিত উদ্যোগ প্রয়োজন। 

গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, ২০০৩-০৪ অর্থ বছরে গোয়ালন্দ-রাজবাড়ী শহর রক্ষা বাধের কাটাখালী সড়কটি নির্মিত হয়। স্থানীয়রা জায়গার ব্যবস্থা করে দিলে বিদ্যালয়ের পিছন দিয়ে সড়কটি করা সম্ভব। তবে তা অবশ্যই সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। 

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবায়েত হায়াত শিপলু বলেন, শিশুরা যাতে নিরাপদে পাঠদান করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এজন্য আগামী উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি গুরুত্বসহকারে উত্থাপন করে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।