চট্টগ্রামে মরদেহ গুম করতে যাওয়ার পথে আটক ৩ চট্টগ্রাম / 
চার যুবক মিলে সীতাকুন্ড থেকে চট্টগ্রাম শহরে আসার জন্য ১ হাজার ৫০০ টাকায় ভাড়া করে প্রাইভেট কার। গাড়িটি সীতাকুন্ডের হাতিলোড়া নামক স্থানে আসার পর চালককে গাড়ি থামাতে বলা হয়। পরক্ষণে গাড়ির পেছনের সিটে বসা রবিউল হোসেন ইমন তার কাছে থাকা রশি চালকের গলায় পেঁচিয়ে টান দেয় এবং অন্যরা তাকে চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
ঘটনার পর থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মূল হোতাসহ তিন আসামিকে গ্রেফতারের পর এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। খুন হওয়া ব্যক্তি সীতাকুন্ডের আমিরাবাদ এলাকার আবুল কালাম প্রকাশ আলমের ছেলে নুরুল গণি শিমুল (২২)। তিনি পেশায় একজন প্রাইভেট কার চালক।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- নোয়াখালীর চাটখিল এলাকার মাহফুজুর রহমানের পুত্র মীর হোসেন নিশান (২১), সীতাকুন্ডের রহমতনগর এলাকার মো. রফিকের পুত্র রবিউল হোসেন ইমন (২০), রাউজানের উরকিরচর এলাকার আবদুল সালামের পুত্র নেওয়াজ শরীফ (২৪)। এদের মধ্যে মীর হোসেন নিশান বেসরকারি পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় সেমিস্টারের ছাত্র।
ছিনতাই ও খুনের ঘটনায় জড়িত পলাতক জসিম উদ্দিনকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। জসিম উদ্দিন সীতাকুন্ডের গোলাবাড়িয়া এলাকার সাইফুল ইসলামের পুত্র।
আকবরশাহ থানার ওসি জসিম উদ্দিন বলেন, প্রাইভেট কার চালকের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর মরদেহ বেড়িবাঁধ এলাকায় ফেলে দিতে যাচ্ছিল ওরা চারজন। ঈশান মহাজন রোড হয়ে ঘোষ বাড়ির কাছে পৌঁছলে প্রাইভেটকারের চাকা ড্রেনে আটকে যায়। গাড়ি পেছনের দিকে তুলতে গিয়ে সবিতা রাণী বিশ্বাস নামে এক নারীর বাড়ির সামনে গ্যাস লাইনের পাইপে ধাক্কা লাগে। এতে সবিতা রানীর সঙ্গে চারজনের কথা কাটাকাটি হয়। পরে তারা গাড়ি ফেলে পালাতে গেলে নিশান ও ইমনকে মারধর করে লোকজন।
ওসি বলেন, পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। পরে গাড়ির ভেতর সিটে বসা অবস্থায় নুরুল গণির মরদেহ দেখতে পায় পুলিশ। তখন নিশান ও ইমনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে একপর্যায়ে তারা হত্যার ঘটনাটি স্বীকার করে। এরপর নগরের চান্দগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে নেওয়াজ শরীফকে গ্রেফতার করা হয়।
ওসি আরো বলেন, নিশানসহ চারজন মিলে সীতাকুন্ড থেকে চট্টগ্রাম শহরের দিকে আসার জন্য ১ হাজার ৫০০ টাকায় ভাড়া করে প্রাইভেট কার। গাড়িটি সীতাকুন্ডের হাতিলোড়া নামক স্থানে আসার পর চালককে হত্যা করা হয়। হত্যার পর তারা মরদেহ গুম করতে চেয়েছিল। গত শুক্রবার দিবাগত রাতে আকবরশাহ থানার ঘোষ বাড়ি এলাকা থেকে ঐ মরদেহ উদ্ধারের সময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রশি ও একটি ছুরি পাওয়া যায়।
নুরুল গণি শিমুল হত্যার ঘটনায় তার বাবা বাদি হয়ে আকবরশাহ থানায় মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান ওসি জসিম উদ্দিন।