Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

নৌকার প্রার্থী আনিছের বিরুদ্ধে কল্লোলের নানা অভিযোগ মুন্সিগঞ্জ

নৌকার প্রার্থী আনিছের বিরুদ্ধে কল্লোলের নানা অভিযোগ

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকা প্রার্থী আনিস-উজ-জামান আনিস এর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহতাব উদ্দিন কল্লোল (আনারস মার্কা)। তিনি রোববার বিকেলে নির্বাচন কেন্দ্রিক সাক্ষাৎকার পর্বে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। 

মাহতাব উদ্দিন কল্লোল এ সময় জেলার স্থানীয় ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন সাংবাদিকদের লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি জানান, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে পরাজয়ের ভয়ে আতংকগ্রস্থ আনিস উজ্জামান আনিস। আর সেই ভয় থেকেই নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে আনিছ পরিবার ও তাদের পোষ্য নেতাকর্মীরা। তিনি বলেন, বিভিন্ন এলাকায় তার ক্যাম্প ভাংচুর করা হয়েছে। আনারসের পক্ষে যেসব নেতা-কর্মীরা কাজ করছেন তাদের মৃত্যুর ভয় দেখানো হচ্ছে। পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার ও স্টিকার ছেঁড়া হচ্ছে। প্রচারণার মাইক ভাংচুর ও বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। সাধারণ ভোটার সমর্থকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও বাড়িঘর ছাড়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে। কাউকে আবার মারধর করা হচ্ছে, কাউকে আবার বাড়ি থেকে উঠিয়ে নেওয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে তারা এসব অপকর্ম করে যাচ্ছে। ফলে ৩১ শে তারিখে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ হবে বলা কঠিন। 

মাহতাব উদ্দিন কল্লোল আরো বলেন, গত সোমবার (১৮মার্চ) সকাল সাড়ে ১০ টায় আধারা ইউনিয়নের বেপারী বাড়ীর শামীম পিতা আফাজ উদ্দিন, আধারা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের আক্তার, আলমগীর, আনিছ মৃধা আমার আনারস মার্কার মাইক বন্ধ করে দেয়, ব্যানার ছিড়ে ফেলে। সাধারণ ভোটারদের মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে। হত্যা, গুম ও খুন করারও হুমকি প্রদান করে। নৌকা প্রতীকের সমর্থক জিয়াসমিন জুঁই গত সোমবার (১৯ মার্চ) বিকাল ৪ টায় চরকেওয়ার ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার ইমরান কবিরকে ফোনে এই বলে হুমকি প্রদান করে যে, “আপনার ওয়ার্ডে আনারস প্রতীকের ক্যাম্প করার দু:সাহস কে দিল। আপনি এখন ক্যাম্প ভেঙ্গে ফেলবেন অন্যথায় আমরা গিয়ে ভেঙ্গে দিব”। এরা এই সকল এলাকায় আনারস প্রতীকের সমর্থক, মাইক পোস্টার দেখলেই তাদের উপর হামলা করে পোস্টার ছিড়ে, মাইক বন্ধ করে দিয়ে আমার প্রচার প্রচারণায় চরমভাবে বাঁধা বিঘœ ঘটাচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, গত বুধবার (২০মার্চ) সকাল ১১টার সময় আধারা ইউনিয়নের যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো: সুমন পিতা মৃত: মোহাম্মদ আলী জাজিরা গ্রামের বশারচরের বালুর মাঠ ব্রীজের সামনে প্রত্যন্ত অঞ্চলের লোকজনকে আটক করে এবং এই বলে হুমকি প্রদান করে যে, আনারস প্রতীকের পোস্টার লাগালে তোদের গুলি করে খুন করে ফেলবো এবং সাথে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। মা বোন নিয়ে যা ভাষায় প্রকাশের অযোগ্য। উচ্চ স্বরে এও বলেন যে, আনারসের পোস্টার লাগাবে তাকেই গুলি করে মেরে ফেলব। আমার কর্মীরা অসহায় হয়ে যার যার মতো এলোপাথারি এদিক ওদিক পালিয়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে মহাকালি ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের নৈরপুকুর পাড় গ্রামের  আমার ক্যাম্প পরিচালক আমার কর্মী মো: সুমন দেওয়ান, পিতা-আব্দুল আউয়াল দেওয়ান সাং নৈরপুকুরপাড়- কে মোবা: ০১৯৯৯৫৩২৩৪৫ নম্বর দিয়ে ও ০১৭০১২৫৭৬৭০ নম্বর দিয়ে হুমকি প্রদান করা হয়। হুমকি দিয়ে বলা হয়-এখানের ক্যাম্প বন্ধ করে দেয়া হবে এবং আমাকে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দেয়া হবে। একই দিন স্বশরীরে সকাল ১০টার সময় ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার আমিন মাদবর হুমকি দিয়ে বলেন, ক্যাম্প ভেঙ্গে ফেল নতুবা দেশ ছাড়া করা হবে। একই দিন ঐ এলাকার ব্রিনের ও 

আলমগীরের নেতৃত্বে শামীম ও মো: নিরু রাত সাড়ে ৭টার সময় হুমকি দিয়ে বলেন, তুমি সকল ক্যাম্প বন্ধ করে কার্যক্রম বন্ধ করে দেও নতুবা ২/৪ দিনের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যাবে না।  রামপাল ইউনিয়নের কাজী কসবার শাকিল মাদবর, জালাল উদ্দিন জনি, মনির শেখসহ আরো লোকজন একই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় আমার ক্যাম্পের উপর দিয়ে নৌকা প্রতীকের পোস্টার সাটিয়ে দিয়েছে। আমার আনারস প্রতীকের দড়ি দিয়ে সাটানো লাইনের পোস্টার সাথে লাগিয়ে গায়ে গায়ে  দেয়। বিকাল আনুমানিক ৪-৫টার সময় কাঁঠালতলা এলাকার শাকিল মাদবর ও তার দলবল আমার কাঁঠালতলা নির্বাচনী ক্যাম্প এর খুটি, বাঁশসহ সকল কিছু ভেঙ্গে ফেলে।


এদিকে, উত্তর চরমশুরা এলাকার সোহাগ ভুইয়া, শাহজাহান ভুইয়া ও তার দলবল একই দিন বিকাল আনুমানিক ৫টার সময় উত্তর চরমশুরা ও আলীর টেক বাজারের  সকল পোস্টার ছিড়ে ফেলেছে। হত্যা, খুন ও গুমের হুমকি দিয়ে আসছে। এই বলে হুমকি প্রদান করছে যে, নির্বাচনের পরে আনারস প্রতীকের সমর্থকদের বাড়ী ঘর হতে বিতাড়িত করে দেয়া হবে। চরকেওয়ার ইউনিয়নের উত্তর চরমশুরা, দক্ষিন চরমশুরা ও আলিরটেক বাজারে প্রতিপক্ষ নৌকা প্রতীকের সমর্থকগণ এই সকল এলাকায় আনারস প্রতীকের সমর্থক, মাইক পোস্টার দেখলেই তাদের উপর হামলা করে পোস্টার ছিড়ে, মাইক বন্ধ করে দিয়ে আমার প্রচার প্রচারণায় চরমভাবে বাঁধা সৃষ্টি করছে। বিকাল সাড়ে ৩টার সময় আলীর টেক বাজারের সকল পোস্টার ছিড়ে ফেলেছে। হত্যা, খুন ও গুমের হুমকি দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে নৌকা মার্কার সন্ত্রাসীরা। এই বলে হুমকি প্রদান করছে যে, নির্বাচনের পরে আনারস প্রতীকের সমর্থকদের বাড়ী ঘর হতে বিতাড়িত করে দেয়া হবে। একই তারিখে শাকিল মাদবর ও মনির শেখসহ তার দলবল বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিটের সময় রামপাল ইউনিয়নের কাঠালতলা ক্যাম্প এর খুটি, বাঁশসহ সকল কিছু ভেঙ্গে ফেলে। এ সময় উপস্থিত কর্মী সমর্থকদের হুমকি প্রদান করে বলেন এখানে কোন কিছু করতে পারবি না। ফলে সাধারণ ভোটারদের মাঝে চরম আতংক ছড়িয়ে পড়ে। তারা এই কাজটি শুরু থেকে অদ্যাবদি করে যাচ্ছে। এর থেকে পরিত্রান চাই। 

ছাত্রলীগের সদর উপজেলা সভাপতি মো: সুরুজ মেম্বারের নির্দেশে বাদশা ও তার দলবল প্রতিদিন রাত ১১টার পরে ক্যাম্পের আসপাশের সমস্ত পোস্টার কেটে ফেলে দেয়। পরেরদিন আমার পোস্টার সাটানো হলে রাতে আবার সে ছিড়ে ফেলে। এভাবে পোস্টার লাগানো আর ছিড়ে ফেলা কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে তারা। মুন্সীগঞ্জ শহরের রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি ভবনের পিছনের ও আধারা ইউনিয়নের কিছু এলাকার আনারস প্রতীকের অনেকগুলো পোস্টার ছিড়ে ফেলেছে। আধারা ইউনিয়নেরও অনেকগুলো পোস্টার ছিড়ে ফেলেছে প্রতিপক্ষ নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা। এমতাবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়ার জন্য তারা যা যা করার তা তা করে যাচ্ছে। আমার প্রতিপক্ষ আনিছউজ্জামান আনিছের ছেলে রাজন, আধারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির মাস্টার ও হরগঙ্গা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসাইন আমার সমর্থকদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদর্শণ করে আসছে।

আধারা ইউনিয়নের ৭নং ও ৮নং ওয়ার্ডের নৌকা প্রতীক প্রার্থীর নেতাকর্মীরা ২২ মার্চ রাত ১টার সময় সকল পোস্টার ছিড়ে ফেলে এবং প্রচারে ব্যবহৃত মাইক বন্ধ করে দেয়। ইউনিয়নের শফিখান, মহসিন, রাসেল মুন্সী, নুর হোসেন মৃধা এরা প্রতিপক্ষ নৌকা প্রতীকের সমর্থক। বিকাল আনুমানিক সাড়ে ৪ টার সময় আধারা ইউনিয়নের এস. আর মিলন ও তার দলবল, ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন আনারস প্রতীকের মাইক চালাতে বাধা দেয়। অত্র অঞ্চলের পোস্টার, ব্যানার ছিড়ে ফেলেছে। আনারস প্রতীকের কর্মী সমর্থকদের প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করেন। যাতে তারা কোনভাবেই আনারস প্রতীকের পক্ষে কাজ না করেন।

এদিকে, শনিবার (২৩ মার্চ) সকাল ১১টায় আধারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির মাস্টারের নেতৃত্বে মিনাবাজারের ক্যাম্প বন্ধ করে দিয়েছেন। তিনি স্থানীয় লোকাল রাত প্রহরী গ্রাম পুলিশ মো: মোজাফ্ফরকে হুমকি প্রদান করে যে, যদি আনারসের পোস্টার লাগাছ, তাহলে তোর চাকুরী থাকবে না বলেও প্রতিনিয়ত হুমকি প্রদান করে আসছে। মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের এরা প্রতিপক্ষ নৌকা প্রতীকের সমর্থক। একই দিন বিকাল আনুমানিক ৬টার সময় চেয়ারম্যান প্রার্থী (নৌকা প্রতীক) আনিস-উজ-জামান আনিসের সন্ত্রাসী বাহিনী মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহসিনা হক কল্পনাকে ওভার ফোনে প্রতিনিয়ত হুমকি প্রদান করছেন।