Opu Hasnat

আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার ২০২৪,

তাহিরপুর শিশুর আঙ্গুল কাঁটার দায়ে যুবলীগ নেতা জেল হাজতে সুনামগঞ্জ

তাহিরপুর শিশুর আঙ্গুল কাঁটার দায়ে যুবলীগ নেতা জেল হাজতে


সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে  বোরো ফসলরক্ষা বাঁধে উঠার অপরাধে তাহিরপুরের মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ইয়ামিন মিয়ার (৭) ডান হাতের চারটি আঙ্গুল কেটে দেয়ার ঘটনায় সেই বিতর্কিত যুবলীগ নেতা অদুদ মিয়া (৩৩) কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে শিশু নির্যাতনকারী যুবলীগ নেতা অদুদ মিয়াকে উপজেলার সোলেমানপুর বাজার থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর বিকালে আদালতে হাজির করলেও তার জামিন শুনানি না হওয়ায় জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তবে অভিযুক্ত অদুদ মিয়া যুবলীগের কেউ নয় বলে জানিয়েছেন তাহিরপুর উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক হাফিজ উদ্দিন।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ১৭ মার্চ শনিবার বিকালে সুলেমানপুর গ্রামের শাহানুর মিয়ার ছেলে শিশু ইয়ামিন গর“র ঘাস কাটার জন্য এলাকার মহালিয়া হাওরে যায়। বাধের উপর দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় পা পিছলে গড়িয়ে নিচে পড়ে যায় সে। এতে নির্মাণাধীন বাঁধের ড্রেজিং করা কাজের সামান্য ক্ষতি হয়। সে সময় (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) পিআইসির সভাপতি  স্থানীয় ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি অদুদ মিয়া বিষয়টি দেখতে পেলে ইয়ামিনের হাতে থাকা কাস্তে কেড়ে নিয়ে তার হাতের ৪টি আঙ্গুল কেটে দেন।

আহত ইয়ামিন মিয়াকে প্রথমে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে সুনামগঞ্জ সদর ও সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. বরকতুল­াহ খান তার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করেন।

যুবলীগ নেতা কর্তৃক শিশুর চার আঙ্গুল কেটে দেয়ার ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় শুর“ হয়। আহত শিশু ইয়ামিন মিয়ার চিকিৎসাসহ সার্বিক খোঁজখবর নিয়েছিলেন তৎকালীন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, স্থানীয় সংসদ সদস্য  মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, পুলিশের আইজিপি, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক তৎকালীন মো. সাবির“ল ইসলাম ও পুলিশ সুপার মো. বরকতুল্লাহ খান।

এ ঘটনায় ১৯ মার্চ আহত শিশু ইয়ামিনের বাবা শাহানুর মিয়া বাদী হয়ে ঘটনার মূল হোতা অদুদ মিয়া ও তার ছোট ভাই আলম মিয়াকে আসামি করে তাহিরপুর থানায় মামলা করেন। পুলিশ আলম মিয়াকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছিল। তবে উ”চ আদালত জামিন নিয়ে দীর্ঘদিন এলাকা ছাড়া ছিল ঘটনার মূল হোতা যুবলীগ নেতা অদুদ মিয়া। এ ঘটনায় পুলিশ অদুদ ও তার ভাই আলমকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আলম মিয়া আদালত থেকে জামিনে থাকলেও অদুদ মিয়া দীর্ঘদিন পলাতক ছিল। বুধবার অদুদ মিয়া এলাকায় আসলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাহিরপুর থানার এসআই আমির উদ্দিন বলেন, ‘শিশু ইয়ামিনের চার আঙ্গুল কেটে ঘটনার মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। পলাতক আসামি অদুদ মিয়া প্রায় এক বছর পলাতক থাকার পর বাড়ি ফিরে আসলে বুধবার দুপুরে সোলেমানপুর বাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং বিকালে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালতে তার জামিন হয়নি। তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।’ 

 

এই বিভাগের অন্যান্য খবর