Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

জুতা পায়ে শহীদ মিনারে চেয়ারম্যানের ফুল দেওয়া নিয়ে তোলপাড় ঝালকাঠি

জুতা পায়ে শহীদ মিনারে চেয়ারম্যানের ফুল দেওয়া নিয়ে তোলপাড়

 মহান একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাভারামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের স্থানীয় একটি স্কুলে কলাগাছ দিয়ে তৈরি শহীদ মিনারে পুস্পমাল্য অর্পণ করেন ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা মাসুম শেরওয়ানি। এসময় তার পায়ে চকলেট কালারের জুতা পরিহিত ছিলো। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরো তিনজন। তারাও সবাই জুতা পায়ে শহীদ মিনারে ফুলের মালা দেয়। ফুল দেওয়ার একটি ছবি শুক্রবার সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এক মুক্তিযোদ্ধা তাঁর ফেজবুক আইডিতে ছবিসহ একটি স্ট্যাটাস দিলে তোলপাড় শুরু হয়। এ ঘটনার সমালোচনা করে মন্তব্য করেছেন অনেকেই।

জানা যায়, গাভারামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের বেড়মহল হাসান মেমোরিয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভাষাশহীদদের স্মরণ করতে কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে। বিদ্যালয়ের পাশেই শহীদ মিনারে একুশের প্রথম প্রহরে শিশুরা ফুল দিয়ে শহদীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সকালে ওই শহীদ মিনারে এসে ফুল দেন গাভারামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মাওলা মাসুম শেরওয়ানি। তাঁর সঙ্গে আরো ছিলেন তিনজন। প্রত্যেকেই শহীদ মিনারে জুতা পায়ে দেয়া অবস্থায় শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ফুল দেওয়ার এই ছবিটি প্রথমে ফেসবুকে আপলোড করেন তাঁর সমর্থকরা। মুহ‚র্তের মধ্যেই ছবিটি ছড়িয়ে পড়ে। ছবিটি দিয়ে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার দুলাল সাহা একটি স্ট্যাটাস দেন। তিনি লেখেন ‘বিবেক কি জাগ্রত হবে’। এতে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ জুতা পায়ে গোলাম মাওলা মাসুম শেরওয়ানির ফুল দেওয়ার সমালোচনা করেন। ওই স্ট্যাটাসে ঝালকাঠির বিশিষ্ট আইনজীবী নাসির উদ্দিন কবির কমেন্টে লিখেছেন, তাঁর (মাসুম শেরওয়ানি) পরিচয়ের সাথে কাজের মিল আছে।

নাজিব নাঈম নামে একজন লিখেছেন, এটা খুবই দুঃখজনক। এই লোক জনপ্রতিনিধি হয় কি করে ? বুঝাই যাচ্ছে উক্ত কাজ শদীদের স্মরণে নয়, ছবি তোলার জন্য করেছেন।

কবির হুমায়ুন নামে একজন লিখেছেন, শহীদ মিনারের বেদীতে যে জুতা পায়ে ওঠে না, এটাও তিনি জানে না সে (মাসুম শেরওয়ানি)।

মুক্তিযোদ্ধা দুলাল সাহা বলেন, বঙ্গবন্ধুর কোট পরে একজন ইউপি চেয়ারম্যান জুতা পায়ে শহীদ মিনারে ফুল দিচ্ছে, এটাও আমাদের দেখতে হচ্ছে। এটা অত্যন্ত নিন্দনিয়, যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। তিনি শুধু শহীদদের সম্মানহানি করেনি, গোটা সমাজকে হেয় করেছেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি এ ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

গাভারামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা মাসুম শেরওয়ানি বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে কয়েকটি স্থানেই শহীদ মিনারে ফুল দিয়েছি। জুতা পড়া ছিল কিনা মনে নেই। যদি হয়ে থাকে এটা ভুলে হয়েছে।