Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

রাজবাড়ীতে ‘ডেইরি ফার্ম’ গ্লানি মুছে নীজের পায়ে দাড়াবে ওরা রাজবাড়ী

রাজবাড়ীতে ‘ডেইরি ফার্ম’ গ্লানি মুছে নীজের পায়ে দাড়াবে ওরা

ওরা নারীও নয় আবার পুরুষও নয়। সমাজে আর দশ জনের সাথে একত্রে চলতে পারে না। এমনকি পরিবারও  মেনে নেয় না ওদের। বলছি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের কথা। রাজবাড়ীতে এমন তৃতীয় লিঙ্গের কমপক্ষে একশত মানুষ বসবাস করে। যারা দিন পার করে রেলস্টেশন, দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় মানুষের থেকে টাকা চেয়ে ও অন্যের সন্তান নাচিয়ে। এবার ওদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটনাতে এগিয়ে এসেছে পুলিশ প্রশাসন। কর্মসংস্থানের জন্য তৈরি করা হয়েছে একটি গরুর ঘর, দেওয়া হয়েছে চারটি গরু। এ থেকে ঘটবে ওদের ভাগ্যের পরিবর্তন । 

জানাগেছে, ২০১৮ সালের শুরুর দিকে হিজরা ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের কর্মসংস্থান ও ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে রাজবাড়ী জেলার মাধব লক্ষীকোল এলাকায় ১৭ জন সদস্য নিয়ে গড়ে তোলা হয় স্বপ্ন হিজড়া উন্নয়ন সংঘ। সংগঠনের উন্নয়নে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ঘুরে যখন ওরা ক্লান্ত এমন সময় ওদের পাশে দাড়ায় রাজবাড়ীর পুলিশ প্রসাশন। পরবর্তীতে বিষয়টি জানার পর এগিয়ে আসেন বাংলাদেশ পুলিশের ডিআইজি ও উত্তরন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান। তার উদ্যোগে মাধব লক্ষীকোলে তৈরি করে দেওয়া হয়েছে একটি ঘর ও প্রদান করা হয়েছে চারটি গরু। যার আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা হয় শুক্রবার থেকে। 

শুক্রবার সকালে রাজবাড়ী জেলার মাধব লক্ষীকোল এলাকায় ডেইরি ফার্মের উদ্বোধন করা হয়েছে। এ সময় রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলির সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পুলিশের ডিআইজি এ্যাডমিনিষ্ট্রেশন এন্ড ডিসিপ্লেন ও উত্তরন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান পিপিএম (বার) বিপিএম (বার)। 

বিশেষ অতিথি হিসেবেবক্তৃতা করেন রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী, যুগ্ন কর কমিশনার আয়শা সিদ্দিকা সেলি, উত্তরন ফাউন্ডেশনের পরিচালক মাহফুজুর রহমান পিন্স, রাজবাড়ী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ফকির আব্দুল জব্বার, পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী প্রমুখ।

স্বপ্ন হিজড়া উন্নয়ন সংঘের সভানেত্রী তানিশা ইয়াসমিন চৈতি জানান, এই লিঙ্গের মানুষদের জন্ম থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত যুদ্ধ করে চলতে হয়। পেটের তাগিদে করতে হয় বিভিন্ন অপকর্ম। এখন আমরা স্বপ্ন দেখছি ভালো ভাবে বাচার। আমরা মানুষের কাছ থেকে হাত পেতে নয় কাজ করে খেতে চাই। আমরা কর্মসংস্থান চাই। চাই ভালো ভাবে বাঁচতে।

রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি জানান, মানুষ হিসেবে সব ধরনের মানবিক অধিকার পাওয়া অধিকার তাদের আছে। ওদের সমাজের মানুষের সাথে মিশার উদ্দিপনা তৈরি করার চেষ্টা করছি। কোন প্রকার হাত পেতে নয় ওরাই হবে স্বাবলম্বী।

রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী জানান, শুধু গরু দিয়ে হবে না। সুযোগ পেলে ওদের চাকুরী দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। তাছারা জেলার তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে খাসজমি বন্দোবস্ত দেওয়া হবে। 

বাংলাদেশ পুলিশের ডিআইজি ও উত্তরন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, জন্মের পর থেকেই ওরা অবহেলিত। সমাজ ওদের ভালোভাবে নেয় না। ওরা যাতে ওদের নীজেদের পায়ে দাড়াতে পারে সেজন্যই এমন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সারাদেশে চারটি বিউটি পার্লার করা হয়েছে। তিনটি ডেইরি ফার্ম করা হয়েছে।