Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

গোপালগঞ্জে ৬ মাস পর কবর থেকে গৃহবধূর লাশ উত্তোলণ গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জে ৬ মাস পর কবর থেকে গৃহবধূর লাশ উত্তোলণ

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে দাফনের ছয় মাস পর এক গৃহবধূর মৃতদেহ কবর থেকে তোলা হয়েছে ময়না তদন্তের জন্য। পরিবারের অভিযোগ, যৌতুকের দাবিতে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনে জ্যোতি হীরা সোহাগী নামের ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে।

সোহাগী মুকসুদপুর উপজেলার কলিগ্রামের জ্যাকব হীরার মেয়ে। একই গ্রামের আদিত্য রায়ের ছেলে অচিন্ত্য রায়ের সঙ্গে ২০১৮ সালের আগস্টে তার বিয়ে হয়। দুটি পরিবারই খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী।

গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সোহাগীর মৃত্যু হলে নভেম্বরে গোপালগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন তার বাবা জ্যাকব হীরা। সেখানেই যৌতুকের জন্য সোহাগীর ওপর নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয় তার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুকসুদপুর থানার এস আই নব কুমার ঘোষ জানান, আদালত ময়না তদন্তের নির্দেশ দিলে রোববার বিকালে গোপালগঞ্জের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত রায়ের উপস্থিতিতে কবর থেকে সোহাগীর মৃতদেহ তোলা হয়। পরে মৃতদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ময়না তদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। 

মামলার বিবরণে বলা হয়, বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে ঢাকার মিরপুরে বসবাস শুরু করেন সোহাগী। কিছু দিন পর স্বামী অচিন্ত্য রায় পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে তার ওপর নির্যাতন চালানো শুরু করেন। স্বামীর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে সোহাগী ঢাকা থেকে বাবার বাড়ি চলে আসেন। তখন অচিন্ত্য ও তার পরিবারের লোকজন মুকসুদপুরে সোহাগীর বাবার বাড়িতে গিয়ে যৌতুকের টাকা দাবি করেন। সোহাগীর বাবা টাকা দিতে অস্বীকার করলে অচিন্ত্য ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং সেখানেই সোহাগীকে মারধর করেন। আহত অবস্থায় সেদিনই সোহাগীকে জোর করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটে। সোহাগীকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যু হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে মামলার আর্জিতে।

সোহাগীর স্বামীর পরিবার তার লাশ গ্রামে এনে দাফন করার পর দুই পরিবারের মধ্যে সালিশে বসার কথা হয়। কিন্তু সোহাগীর স্বামীর পরিবার টালবাহানা শুরু করলে গত বছর ২৮ নভেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করেন জ্যাকব হীরা। আদালত তার অভিযোগ আমলে নিয়ে মুকসুদপুর থানার ওসিকে তা মামলা হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। পরে তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনে গোপালঞ্জের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট লাশ তুলে ময়না তদন্তের অনুমতি দেন।

তদন্ত কর্মকর্তা নব কুমার ঘোষ জানান, ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর তারা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করবে।

এই বিভাগের অন্যান্য খবর