Opu Hasnat

আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ২০২৪,

চট্টগ্রামে এডুকেশন এক্স-পো ফর স্কুল’স মেলা

শিক্ষার্থীরা এই মেলার মাধ্যমে সব ধরনের দিক নিদের্শনা ও তথ্য লাভ করবে : মেয়র চট্টগ্রাম

শিক্ষার্থীরা এই মেলার মাধ্যমে সব ধরনের দিক নিদের্শনা ও তথ্য লাভ করবে : মেয়র

চট্টগ্রামে স্বনামধন্য স্কুলগুলো নিয়ে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো শিক্ষা বিষয়ক মেলা এডুকেশন এক্স-পো ফর স্কুল’স । নগরীর রেডিসন ব্লু’র মেজবান হলে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম.নাছির উদ্দীন। এ সময় সিটি মেয়র ছাড়াও অংশগ্রহনকারী শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।  

ইস্টার্ন ব্যাংক ও কেওয়াই স্টীল এর পৃষ্ঠপোষকতায় এই শিক্ষা বিষয়ক মেলায় নগরী খ্যাতনামা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহের মধ্যে ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক কলেজ,চট্টগ্রাম গ্রামার স্কুল, চট্টগ্রাম গ্রামার স্কুল (এনসি), সাইডার ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ফ্রোবেল একাডেমী, ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশ, ক্রান্স মনটানা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, প্লেজ হার্বার ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, কোয়েস্ট ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, বে-ভিউ স্কুল, দি অক্সফোর্ড ইনস্টিটিউট, ড্যাফোডিল ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন এন্ড টেকনোলজি,অলিঁয়াস ফ্রঁসেজ দি চিটাগাং অংশ গ্রহন করে। এ শিক্ষা মেলার অভিভাবকদের পাশাপাশি অনেক শিশু শিক্ষার্থীরও সমগম ঘটে। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম শহরের সেরা সেরা বিদ্যাপীঠ সমূহের উপস্থিতিতে এক মিলন মেলার রূপ ধারণ করে। যা সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যার ৬ পর্যন্ত অভিভাবক ও দর্শণার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। 

উদ্বোধনকালে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, চট্টগ্রাম নগরে বেসরকারি পর্যায়ে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। যাদের লেখাপড়ার গুনগতমান অনেক উঁচু। এ সমস্ত প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা এই মেলার মাধ্যমে সব ধরনের দিক নিদের্শনা ও তথ্য লাভ করবে। দেশের অনেক শিক্ষার্থী এসব নামিদামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার আগ্রহী হলেও সঠিক তথ্য উপাত্ত ও দিকনির্দেশনা না পাওয়ার কারণে তাদের লালিত স্বপ্ন ব্যর্থ হচ্ছে। ইস্টার্ন ব্যাংক ও কেওয়াই স্টীল এর উদ্যোগে চট্টগ্রামের এই মেলার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এ ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা লাভ করবে। এই জন্য মেলার আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান মেয়র। 

তিনি বলেন, সরকারের বাস্তবমুখী পরিকল্পনার ফলে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক দুর এগিয়ে গেছে। বর্তমানে আমাদের সরকারি ও বেসরকারিসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদেশী শিক্ষার্থীরাও লেখাপড়া করছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এক সময় গরীব দেশ ছিল। এখন স্বল্প উন্নত দেশ হয়েছে। আমরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। ২০৪১ সালে উন্নয়নশীল ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিত লাভ করবে। তখন বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রের মানুষ জীবন জীবিকার জন্য বাংলাদেশে ছুটে আসবে। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে মেয়র বলেন, আমাদের শিক্ষার হার উর্ধ্বমুখী, এটা খুবই সন্তোষজনক। সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে শিক্ষারহারকে শতভাগে উন্নিত করা। সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই ব্যাপারে নিরন্তন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, ফলে গত ১০ বছরে বাংলাদেশে সঠিক স্বাক্ষরতার হার ২৬.২৪ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৭৩ শতাংশে উন্নিত হয়েছে। সরকারের এই আমলে বাংলাদেশের শিক্ষার হার শতভাগে পৌছবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন। মেলা আয়োজক প্রতিষ্ঠান এমএনএম বিজনেস কনসালটেন্সি এর পক্ষ হতে মাঞ্জুমা মোর্শেদ ও মোনা মাসুদ বলেন, চট্টগ্রামের এ ধরনের শিক্ষা মেলা প্রথম বারের মত হওয়ার পরও ব্যাপক সাড়া পেলে প্রতি বছর এমন মেলা আয়োজন করার জন্য তার আশাবাদি।

অপরদিকে, শ্রমিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রথম ব্যাচের সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, দক্ষ জনশক্তির সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনীতিতে। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও সমানতালে এগিয়ে চলেছে। তাই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে প্রশিক্ষিত নারীর বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নারীরা গার্মেন্টস কারখানায় চাকরি নিয়ে কিংবা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জ্ঞান দিয়ে উদ্যোক্তা হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে।  

বিকেএমইএর সার্বিক সহযোগিতায় দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির লক্ষ্যে জামালাখান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন ও বিকেএমইএর পরিচালক রাজীব দাশ সুজয়ের ব্যবস্থাপনায় ১ম ব্যাচে ৩০ নারী মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ নেন। সিটি করপোরেশনের কেবি আবদুছ ছাত্তার মিলনায়তনে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, বিকেএমইএর পরিচালক রাজীব দাশ সুজয় ও সাবেক পরিচালক শওকত ওসমান।

শৈবাল দাশ সুমন বলেন, পোশাক শিল্পের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন দক্ষ জনশক্তি। এরই আলোকে বিকেএমইএর সার্বিক সহযোগিতায় স্টিচ টোন অ্যাপারেলস লিমিটেড ধারাবাহিকভাবে শ্রমিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে দক্ষ নারী শ্রমিক তৈরিতে কাজ করবে।

রাজীব দাশ সুজয় বলেন, রফতানি আয়ের বেশির ভাগই অর্জিত হয় পোশাক খাত থেকে। আন্তর্জাতিক বাজারে দ্বিতীয় অবস্থান থেকে শীর্ষ স্থান দখল করতে দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।

শওকত ওসমান বলেন, দক্ষ জনশক্তি দেশের সম্পদ। শ্রমিকের দক্ষতা বৃদ্ধিকল্পে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ওপর গুরুত্বারোপ করা এখন সময়ের দাবি। 

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিকেএমইএর সিনিয়র যুগ্ম সচিব আলতাফ উদ্দিন।