Opu Hasnat

আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার ২০২৪,

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় লোকবল সংকটে ঢালাই কাজ ব্যাহত নীলফামারী

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় লোকবল সংকটে ঢালাই কাজ ব্যাহত


দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার লোকবল সংকটে ঢালাই শপে (উপ-কারখানা) উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ওই শপে লৌহজাত, অ্যালুমিনিয়াম ও পিতলের যন্ত্রাংশ তৈরি হয়ে থাকে। রেলযানে মাসে কমপক্ষে ১০ হাজারটি ঢালাই যন্ত্রাংশের চাহিদা থাকলেও এখানে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র পাঁচ হাজার। ফলে উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রেলওয়ে। 

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ১৮৭০ সালে তৎকালীন আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের প্রধানতম রেলওয়ে কারখানা সৈয়দপুরে স্থাপিত হয়। এ কারখানায় ব্রডগেজ (বড়), মিটার গেজ (ছোট) লাইনের যাত্রীবাহী রেলকোচ, তেলবাহী যান (বিটিও) ও মালবাহী যান (ওয়াগন) মেরামত করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি ২৮টি উপ-কারখানায় এক হাজার ২০০ প্রকার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরি হয় সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায়। যা দিয়ে সৈয়দপুর ও চট্টগ্রাম রেলওয়ে কারখানার চাহিদা পূরণ হচ্ছে।

সূত্রটি জানায়, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ঢালাই শপে ফেরাস (লৌহজাত) ও ননফেরাস (অ্যালুমিনিয়াম, পিতল) ধাতব ঢালাই করা হয়। ১২ থেকে দুই হাজার ফারেনহাইট তাপমাত্রার ফার্নেসে (চুল্লি) ওই ধাতব গলিয়ে ছাঁচে (ফর্মা) ফেলে তৈরি হয় ব্রেকব্লক, সাপোর্ট বিয়ারিং, এক্সেল লাইনিং, পিতলের বার, অ্যালুমিনিয়াম ব্রাকেট, ব্রাকেট হ্যাঙ্গার ইত্যাদি।

সরেজমিনে গেলে ঢালাই শপের ইনচার্জ উর্দ্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল খায়ের সরকারের সাথে কথা হয়। তিনি জানান, কারখানার অন্যান্য শপের মতো এ শপটিতেও দেখা দিয়েছে চরম লোকবল সংকট। অতীতে এ শপে ২১৬ জন কর্মী নিয়োজিত ছিলেন। বর্তমানে এখানে রয়েছে ১২৮টি পদ। কিন্ত দীর্ঘদিন নিয়োগ বন্ধ থাকায় এর বিপরীতে নিয়োজিত আছেন মাত্র ৩৩ জন কর্মী।

সপ্তাহে দুদিন ওই শপে ঢালাই কাজ হয়ে থাকে। কর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তৈরি করছেন মূল্যবান যন্ত্রাংশ। অথচ তারা ঝুঁকি ভাতাও পাননা। লোকবল সংকট নিরসন হলে দেশের রেল যন্ত্রাংশের চাহিদা পূরণ হবে এসব থেকে। বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে না ঢালাই যন্ত্রাংশ। ফলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। তিনি বলেন, মাসে দেশের রেল কারখানাগুলো ১০ হাজারটি রেলের ঢালাই যন্ত্রাংশ প্রয়োজন। কিন্ত সৈয়দপুর কারখানায় আমরা উৎপাদন করছি মাত্র পাঁচ হাজারটি। বাকিগুলো বিদেশ থেকে আমদানি করতে হচ্ছে।

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত¡াবধায়ক (ডিএস) মুহাম্মদ কুদরত-ই-খুদা জানান, কারখানার অন্যান্য শপের মতো ঢালাই শপেও চলছে লোকবল সংকট। ফলে ওই গুরুত্বপূর্ণ শপটিতে উৎপাদন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দ্রুত লোকবল সংকট নিরসন হবে বলে তিনি মনে করেন। বিষয়টি উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নজরে রয়েছে বলে তিনি জানান।