Opu Hasnat

আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার ২০২৪,

বিশ্ব ইজতেমা শুরু জাতীয়

বিশ্ব ইজতেমা শুরু

আজ শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে টঙ্গীর তুরাগতীরে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমা। ইতোমধ্যে দেশ-বিদেশের অগণিত ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ইজতেমা ময়দানে সমবেত হয়েছেন।

বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক কমিটির মুরব্বি মো. মাহফুজুর রহমান জানান, আজ বাদ ফজর উর্দুতে আমবয়ানের মধ্য দিয়ে এবারের বিশ্ব ইজতেমার কার্যক্রম শুরু হয়। পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক শূল বয়ান শুরু করেন। বাংলাদেশের মাওলানা নূরুর রহমান এ বয়ান বাংলায় তরজমা করেন। ইজতেমাস্থলের বয়ান মঞ্চ থেকে মূল বয়ান উর্দুতে হলেও তাৎক্ষণিকভাবে তা বাংলায় তরজমা করা হয়।

শনিবার মাওলানা জোবায়েরপন্থিদের আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। মোনাজাত শেষে জোবায়ের পন্থীরা ময়দান ছেড়ে চলে গেলে রোববার থেকে মাওলানা সাদপন্থিদের পরিচালনায় ইজতেমা ফের শুরু হবে। সোমবার মাওলানা সাদপন্থিদের আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে এ পর্বের চার দিনের বিশ্ব ইজতেমা।

শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে বৃহত্তর জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামতি করবেন কাকরাইলের মাওলানা মো. জোবায়ের। এবারে ৬৪ জেলার মুসল্লিদের জন্য পুরো ময়দানকে ৫০টি খিত্তায় (ভাগে) ভাগ করা হয়েছে। নির্দিষ্ট খিত্তা নির্দিষ্ট জেলার মুসল্লির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

৬৪টি জেলা থেকে মুসল্লিদের কাফেলা এখন টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানের দিকে। বৃহস্পতিবার থেকে আসতে থাকা মুসল্লিদের ঢল শুক্রবারও অব্যাহত থাকবে। শুক্রবার পবিত্র জুম্মার নামাজে লাখ লাখ মুসল্লি একসঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ছুটির দিন থাকায় গাজীপুরসহ আশপাশের অঞ্চলগুলো থেকেও বিপুলসংখ্যক মুসল্লি জুমার নামাজ আদায় করতে ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করবেন।

সকাল থেকে টঙ্গী ও এর আশপাশের লোকজন ইজতেমায় বৃহত্তর জুমার নামাজের জামাতে অংশ নিতে হেঁটে ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেছেন। শুক্রবার বাদ ফজর থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের জিকির আসকার ইবাদত বন্দেগিতে টঙ্গী এখন এক পবিত্র পুণ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে। হজের পর মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমাবেশ হলো এ বিশ্ব ইজতেমা।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর জানান, পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্যরা কয়েকটি স্তরে বিভক্ত হয়ে পোশাক ও সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া বাইনোকুলার, মেটাল ডিটেক্টর, নৌ-টহল, চেকপোস্টও রয়েছে। ইজতেমা মাঠের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশ ও র্যাব কন্ট্রোলরুম ও ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করেছে। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বিক নিরাপত্তা কন্ট্রোলরুম থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে। খিত্তায় খিত্তায় সাদা পোশাকে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছেন।

শুক্রবার ইজতেমা ময়দানে জুমার নামাজ আদায় করতে ঢাকা থেকে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক নেতৃবর্গসহ সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের ভিআইপি অতিথিরাও ইজতেমা ময়দানে আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

ইজতেমার মুরুব্বিদের দেয়া তথ্যমতে, ১৯৪৬ সালে প্রথম কাকরাইল মসজিদে ইজতেমার আয়োজন শুরু করা হয়। তারপর ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামের হাজী ক্যাম্পে ও ১৯৫৮ সালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর লোকসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ১৯৬৬ সালে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে বর্তমান স্থলে স্থানান্তর করা হয় বিশ্ব ইজতেমা। পরে সরকারিভাবে তুরাগ তীরের ১৬০ একর জমি স্থায়ীভাবে ইজতেমার জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়।

গত ডিসেম্বর মাসে ইজতেমার দুপক্ষের মুসল্লিদের মতবিরোধ ও সংঘর্ষের কারণে এ বছর দুটি পক্ষ পৃথকভাবে দুদিন করে চার দিন ইজতেমা পরিচালনা করবেন।