Opu Hasnat

আজ ২০ এপ্রিল শনিবার ২০২৪,

কাশ্মীরে জঙ্গী হামলায় সিআরপিএফ’র ৪০ সদস্য নিহত আন্তর্জাতিক

কাশ্মীরে জঙ্গী হামলায় সিআরপিএফ’র ৪০ সদস্য নিহত

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বিস্ফোরণে নিহত হয়েছে দেশটির বিশেষায়িত বাহিনী সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) ৪০ সদস্য। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৪০ জন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেন জানা গেছে। আহতদের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের শ্রীনগরে সেনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলওয়ামায় সিআরপিএফ-এর কনভয়ে ঢুকে পড়ে ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বোঝাই একটি গাড়ি। ওই গাড়িতে অন্তত ৩৫০ কেজি বিস্ফোরক ছিল যার বিষ্ফোরণে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র দফতর। 

জঙ্গি সংগঠন জৈশ-ই-মহম্মদ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ সূত্রে খবর। হামলাকারী আদিল আহমেদ দার পুলওয়ামারই কাকাপোরার বাসিন্দা বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। গত বছর সে জৈশ-এ যোগ দিয়েছিল।

ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঘটনার পর জরুরি বৈঠকে বসেছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী কালই পুলওয়ামা যাচ্ছেন রাজনাথ। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়— সকলেই হামলার নিন্দা করেছেন এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর লখনউতে এ দিন প্রথম সাংবাদিক বৈঠক করার কথা ছিল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর। সন্ধ্যা সওয়া সাতটা নাগাদ তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, জম্মু-কাশ্মীরের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই সময়ে রাজনীতির কথা বলা উচিত নয়। এর পর শহিদ জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করে তিনি বৈঠক শেষ করেন।   

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এ দিন পুলওয়ামা জেলার শ্রীনগর-অনন্তনাগ হাইওয়ের উপর দিয়ে জম্মু থেকে শ্রীনগর এগোচ্ছিল সিআরপিএফ-এর ৫০টি গাড়ির কনভয়। পথে গোরিপোরার কাছে আইইডি বোঝাই এসইউভি নিয়ে জওয়ানদের বাসে ধাক্কা মারে জঙ্গিরা। সঙ্গে সঙ্গে তীব্র বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের পর নিরাপত্তাবাহিনীকে লক্ষ্য করে জঙ্গিরা গুলিও চালায় বলে দাবি পুলিশের। আত্মঘাতী বিস্ফোরণের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না উপত্যকার পুলিশ প্রধান দিলবাগ সিংহ। সিআরপিএফের ডিজি বিজয় কুমার জানিয়েছেন, ওই কনভয়ের ৭০টি গাড়িতে সব মিলিয়ে আড়াই হাজার জওয়ান ছিলেন। যে গাড়িতে হামলা হয়েছে তাতে ৩৯ জন জওয়ান ছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

২০১৬-র ১৮ সেপ্টেম্বর উরির সেনা ছাউনিতে জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছিলেন ১৯ জন সেনাকর্মী। ৪ জন জঙ্গিও মারা গিয়েছিল ওই ঘটনায়। কিন্তু, এ দিনের এই হামলার ঘটনা উরির ভয়াবহতাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। গোয়েন্দা ব্যর্থতার কারণেই এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। প্রাক্তন সেনাপ্রধান শঙ্কর রায়চৌধুরীর মতে, এটা গোয়েন্দা ব্যর্থতার কারণেই হয়েছে। সূত্র : আনন্দবাজার