Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

জিয়া স্মৃতি জাদুঘরকে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তর করার দাবিতে মানববন্ধন চট্টগ্রাম

জিয়া স্মৃতি জাদুঘরকে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তর করার দাবিতে মানববন্ধন


চট্টগ্রাম নগরীর এম.এ আজিজ স্টেডিয়াম সম্মুখে মহান মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহ স্মৃতি বিজড়িত চট্টগ্রামে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলিত স্থান, বর্তমান ‘জিয়া স্মৃতি জাদুঘর’কে ‘মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর’ এ রূপান্তর করার দাবিতে এক মানববন্ধন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর কমিটির উদ্যোগে জাদুঘরের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম জেলা কমিটির আহয়ক ইঞ্জিনিয়ার মশিউজ্জামান সিদ্দিকী পাভেলের সভাপতিত্বে, সদস্য সচিব কামরুল হুদা পাভেল ও মহানগর কমিটির সিনিয়র সদস্য মো. সাজ্জাদ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার মোজাফফর আহমদ। প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আলহাজ্ব ফরিদ মাহমুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার শহীদুল হক চৌধুরী সৈয়দ, মরহুম জহুর আহমদ চৌধুরীর সন্তান শরফুদ্দিন চৌধুরী রাজু, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সদস্য মো. সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন মোরশেদ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহকারী কমান্ডার সাধন চন্দ্র বিশ্বাস, সহকারী কমান্ডার মো. খোরশেদ আলম (যুদ্ধাহত), সহকারী কমান্ডার সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু, সহকারী কমান্ডার এফএফ আকবর খান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড মহানগর কমিটির যুগ্ম আহ্বাবায়ক শাহেদ মুরাদ সাকু, সদস্য সচিব কাজী মুহাম্মদ রাজিশ ইমরান, সদস্য জুনায়েদ আহমদ, সন্তান কমান্ডের সদস্য বিবি গুল জান্নাত, ওয়াসিফুল হক চৌধুরী কৌশিক, মোশাররফ হোসেন, পুলক বড়ুয়া, আবদুল কাদের সবুজ, শেখ ফরিদ মিঠু, মো. ফরিদ উদ্দিন, মো. সামির হোসেন, মিস লিমা, শাহানাজ রীমা, পপি আকতার, সৌরভ রায়, দেলোয়ার হোসেন, মো. জাহির উদ্দিন, মোসলেম উদ্দিন নিলয়, রাজীব সিকদার জয়, তৌরাত রাফি, জয়নুদ্দিন জয়, মো. ফয়সাল প্রমুখ। সন্তান কমান্ডের নেতৃবৃন্দরা মানববন্ধন সমাবেশ থেকে বর্তমান ‘জিয়া স্মৃতি জাদুঘর’ এর মূলফটকে ‘মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর’ নামফলক লাগিয়ে দেন। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার মোজাফফর আহমদ বলেন, ১৯৭১ সালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসটি ছিল পাকিস্তানি সেনাদের সাময়িক নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র। এখান থেকে পশ্চিম পাকিস্তানি বর্বর বাহিনী সারা চট্টগ্রামে অত্যাচার ও নির্যাতন চালাতো। একটি বিশেষ কক্ষে মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিকামী জনতা ও নারীদের নির্যাতন করা হতো। হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় এ সার্কিট হাউস এলাকায়। এখানে অনেক গণকবর ও রয়েছে। এ ইতিহাস মুছে দিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে ‘জিয়া স্মৃতি জাদুঘর’ করা হয়েছিল। গত ১১ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে ‘জিয়া স্মৃতি জাদুঘর’-এর অন্য একটি নামকরণ করার প্রস্তাব করায় সরকারের শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি। 

প্রধান বক্তা মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আলহাজ্ব ফরিদ মাহমুদ বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ অংশ চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস। জিয়ার নামে এ জাদুঘর কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। এখানে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সরঞ্জাম রয়েছে। নতুন প্রজন্ম, শিশু শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের নিকট মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে অনতিবিলম্বে ‘জিয়া স্মৃতি জাদুঘর’-এর নাম পরিবর্তন করে ‘মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর’ নামকরণের আহবান জানান তিনি।