ভারতে অমুসলিমদের আশ্রয় দিতে বিল পাস আন্তর্জাতিক / 
ভারতে অমুসলিমদের আশ্রয় দিতে লোকসভায় নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল ২০১৬ পাস হয়েছে। বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সংখ্যলঘুদের (অমুসলিমদের) ভারতে আশ্রয় দিতে ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন বদলাতে চায় বর্তমান বিজেপি সরকার।
মঙ্গলবার সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের শেষ দিনে বিলটি পেশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। এরপর শুরু হয় আলোচনা, পরে বিরোধীদের বিরোধ-বিক্ষোভের মধ্যেই বিলটি পাস করেন মোদি সরকার। নাগরিকত্ব বিল উত্থাপন করে রাজনাথ সিং বলেন, ‘আমি পরিস্কার বলতে চাই যে, নাগারিকত্ব কেবলমাত্র আসাম কিংবা নির্দিষ্ট কয়েকটি রাষ্ট্র থেকে আসা উদ্বাস্তুদের কল্যাণের জন্য নয়। প্রতিবেশী রাষ্ট্র (পাকিস্তান) থেকে এসে পাঞ্জাব, দিল্লি এবং রাজস্থানে যারা বসবাস করছে এই বিল তাদেরও কল্যাণে আসবে। দীর্ঘদিন ধরেই আসাম অবৈধ অনুপ্রবেশ সমস্যায় জর্জরিত এবং আসামের এই বোঝা ভারতেরও বোঝা। এই সমস্যা মোবাবেলায় সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে।’
তৃণমূলের অভিযোগ, এই বিলের ফলে পশ্চিমবঙ্গের শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে।
বিলটিতে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে যেসব হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্শি ও খ্রিষ্টান ভারতে এসেছে তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। আর তা নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
দেশটির সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আসামে নাগরিকদের যে তালিকা (এনআরসি) তৈরির কাজ চলছে তাতে প্রায় ৪০ লাখ আসামবাসীর নাম বাদ পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালিদের উৎকণ্ঠার শেষ নেই। ১৯৭১ সালের নথি সংগ্রহ করতে না পেরে ১০ লক্ষাধিক মানুষ নতুন করে আবেদন করতে পারেননি। তবে তাদের মধ্যে যারা অমুসলিম তাদেরকে আশ্বস্ত করলেন নরেন্দ্র মোদি।
আসামের কাছাড় জেলার শিলচরে গত শুক্রবার তিনি বলেছেন, ‘সমস্যার বিষয়ে আমি অবগত। কিন্তু আশ্বাস দিচ্ছি একজন ভারতীয় নাগরিকও বিপদে পড়বেন না।’
নাগরিকত্ব আইন (সংশোধনী) বিলের প্রসঙ্গ তুলে মোদি বলেন, ‘এটা মানুষের জীবন এবং আবেগের সঙ্গে যুক্ত। বিশেষ কারও সুবিধার জন্য এটা করা হচ্ছে না। করা হচ্ছে, অতীতের বহু ভুল এবং অন্যায়ের প্রতিকার করার জন্য।’
মোদির ওই সভা ঘিরে গত কয়েকদিন ধরেই বিক্ষোভ করছিলেন শিলচরের মানুষ। সভায় না যাওয়ার আবেদন জানিয়ে একটি সংগঠন লিফলেটও বিলি করেছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার মাটি ছোঁয়ার আগেই রাস্তায় জনতার ঢল নামে। মোদি সেই সুযোগ কাজেও লাগান। বলেন, ‘বরাকের দু’টি আসনই আমাদের দিন। আমার উপর ভরসা রাখুন।’