ফল প্রত্যাখ্যান, পুনঃভোটের দাবি কামালের রাজনীতি / 
নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে তা বাতিল করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন কামাল হোসেন। রোববার একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা কামাল।
তিনি বলেন, “দেশের প্রায় সব আসন থেকেই একই রকম ভোট ডাকাতির খবর এসেছিল। এ পর্যন্ত আমাদের শতাধিক প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছে।
“এমতাবস্থায় আমরা নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, অবিলম্বে এই প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করা হোক। এই নির্বাচনের কথিত ফলাফল আমরা প্রত্যাখ্যান করছি এবং সেই সঙ্গে নির্দলীয় সরকারের অধীনে পুনঃনির্বাচন দাবি করছি।”
রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ঢাকাসহ সারা দেশের ২৯৯টি সংসদীয় আসনে একটানা ভোটগ্রহণ হয়। ভোটে বাধা দেওয়া, এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া এবং কারচুপির অভিযোগ তুলে বিএনপি-জামায়াত জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্তত ৩১ জন প্রার্থী দুপুরেই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।
দুর্নীতির মামলায় কারাবন্দি খালেদা জিয়ার অবর্তমানে তার দল বিএনপি এবার গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে নির্বাচনে অংশ নেয়।
বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের পাশাপাশি ঐক্যফ্রন্টে যুক্ত হওয়া নাগরিক ঐক্য, কৃষক-শ্রমিক-জনতা দল ও জেএসডির নেতারা ধানের শীষ প্রতীকে ভোটের লড়াইয়ে অংশ নেন।
‘শান্ত ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে’ ভোট দেখেছেন ভারতীয় পর্যবেক্ষকরা ভোট শেষে রাতে বেইলি রোডে কামাল হোসেনের বাসায় বৈঠক করেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। ওই বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলন আসেন কামাল হোসেন।
দাবি না মানলে আপনারা কী করবেন- প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন বলেন, “আগামীকাল আমরা বসে বিস্তারিত আলোচনা করে আমাদের করণীয় ঠিক করব এবং গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। বিস্তারিত দিকগুলো কাল আপনাদের জানাব।” সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও ঐক্যফ্রন্টে সক্রিয় জাফরুল্লাহ চৌধুরীও ছিলেন।
নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা বিজয়ী হলে কী করবেন প্রশ্ন করা বিএনপি মহাসচিব ফখরুল বলেন, “আমরা এই পুরো নির্বাচনটাকেই প্রত্যাখ্যান করছি। দিস ইজ নট অ্যান ইলেকশন, দি ইজ এ ক্রুয়েল মকারি উইথ ডেমোক্রেসি।
“আমরা কী করব, তা কালকে সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা জানাব।” ফখরুল বলেন, “অনেকে মনে করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে না যাওয়াটা ভুল ছিল, আজকের নির্বাচন প্রমাণ করল যে, সেটা ভুল ছিল না।”
এদিকে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে বলে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দিনে ঢাকার কয়েকটি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করে ভারতীয় পর্যবেক্ষকরা বলেছেন, ‘শান্ত ও শান্তিপূর্ণ’ পরিবেশে ভোটগ্রহণ হতে দেখেছেন তারা। ভোটকেন্দ্রগুলোতেও ছিল উৎসবের চেহারা।
সকালে কানাডার একজন পর্যবেক্ষকও নির্বিঘ্নে ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের চিত্র দেখার কথা জানিয়েছিলেন।