ঝালকাঠিতে শিল্পমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিজয় র্যালী, বিজয় দিবস উদযাপন ঝালকাঠি / 
আওয়ামীলীগের জ্যেষ্ঠ নেতা, ঝালকাঠি-২ (সদর-নলছিটি) আসনের মহাজোট মনোনীত প্রার্থী শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর নেতৃত্বে ঝালকাঠিতে বিজয় র্যালী অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ১১ টায় শহরের ফায়ারসার্ভিস মোড় থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালী বের হয়ে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
র্যালীর পূর্বে ফায়ারসার্ভিস মোড়ে এক পথ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। এসময় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হাজার বছরের পরাধীন বাঙালীকে স্বাধীন করেছেন। সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করেছে। তার যাদুর কাঠির ছোয়ায় বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশ রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে বাংলাদেশকে রূপান্তর করেছেন। বিশ্বসভায় মাথা উচু করে দাড়িয়েছে বাংলাদেশ। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এসময় জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার মোঃ শাহআলম, সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট খান সাইফুল্লাহ পনির, পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি ও পৌর মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার, সাধারন সম্পাদক ও জেলা পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যান মাহবুব হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
র্যালীতে সুসজ্জিত ব্যান্ড পার্টির বাদ্য-বাজনা এবং একটি খোলা অটোতে দাড়িয়ে শহরবাসীকে বিজয়ী শুভেচ্ছা জানান শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন। আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, যুব মহিলালীগসহ বিভিন্ন স্তরের কয়েকহাজার নেতাকর্মী র্যালিতে অংশ নেয়। নৌক প্রতিকের সমর্থনে নেতাকর্মীদের মুহুর্মুহু শ্লোগানে শহর মুখরিত হয়।
অপরদিকে পৃথক কর্মসূচীতে মহান বিজয় ও জাতীয় দিবস উদযাপন করেছে জেলা প্রশাসন। রোববার সকাল সাড়ে ৮ টায় ঝালকাঠি শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথির সালাম গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক মোঃ হামিদুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার মোঃ জোবায়েদুর রহমান। আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন জেলা ও দায়রা জজ মোঃ ইখতিয়ারুল ইসলাম মল্লিক, জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার মোঃ শাহআলম, পৌর মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার, সদর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খানসহ প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ ও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।
এর আগে সুর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা, মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ। সকাল সাড়ে ৯ টায় মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের ফুলের শুভেচ্ছা দিয়ে সম্মাননা প্রদান। কুচকাওয়াজে মুক্তিযোদ্ধা, পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি, বিএনসিসি, ফায়ারসার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী, রোভার স্কাউট, স্কাউট, গার্লস গাইড, প্রাক্তন সৈনিক কল্যাণ সংস্থা, গার্লস ইন স্কাউট, শিশু সদন (শিশু পরিবার), প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীরা অংশ নেয় এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মনোমুগ্ধকর ডিসপ্লে প্রদর্শন করে।
এছাড়াও ১২ ডিসেম্বর সকাল ১০ টায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, ১৩ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০ টায় সরকারী গ্রন্থাগারে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক রচনা প্রতিযোগিতা, বিকেল ৩ টায় শিল্পকলা একাডেমীতে শিশুদের চিত্রাঙ্কন, আবৃতি ও দেশাত্মবোধক সংগীত প্রতিযোগিতা, ১৫ ডিসেম্বর বিকেল ৩ টায় টেনিস মাঠে টেনিস প্রতিযোগিতা, সন্ধ্যা ৬ টায় পৌর মিনি পার্ক, প্রেসক্লাবের সামনে ও ফায়ারসার্ভিস মোড়ে জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ঝালকাঠির মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্রমাণ্য চলচিত্র প্রদর্শনি। বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী ভবনে লাল সবুজের বাতিতে আলোক সজ্জা করা হয়। পৌনে ১২ টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান, ১২ টায় হাসপাতাল, জেলখানা ও সরকারি শিশু সদনে (শিশু পরিবার) উন্নত মানের খাবার পরিবেশন। স্থানীয় মসজিদ সমূহে জোহর নামাজ বাদ এবং অন্যান্য প্রার্থনালয়ে সুবিধামত সময়ে জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ, আত্মদানকারী, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ প্রার্থনা।