মুন্সীগঞ্জে খাস জমিতে নির্বিরঘ্ন ইটভাটার ব্যবসা করে যাচ্ছে প্রভাবশালী চক্র মুন্সিগঞ্জ / 
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলাঘেঁষা ধলেশ্বরী নদীর তীরে ৪২টি ইটভাটা সরকারি তালিকাভুক্ত থাকলেও ইটভাটা রয়েছে ৫০টি। এর মধ্যে বেশির ভাগ ইটভাটারই পরিবেশ ছাড়পত্র ও বৈধ কাগজপত্র নেই। এমনকি সরকারি খাস জমি দখলে নিয়ে নির্বিঘ্নে ইটভাটার ব্যবসা করে যাচ্ছে প্রভাবশালী চক্র। পরিবেশ অধিদপ্তরের কিছু ঊর্ধ্বতন কর্তকর্তার সঙ্গে যোগসাজশ থাকায় জেলা অফিসের কর্মকর্তাদের তোয়াক্কা করে না ইটভাটার মালিকপক্ষ।
এ ছাড়া উচ্চ আদালতে ৪২টি ইটভাটার মধ্যে ২৮টির মালিকের দাখিলকৃত রিটের রায় ঘোষণা না হওয়ায় পরিবেশ অধিদপ্তর অবৈধ ইটভাটাগুলোর অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারছে না। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইটভাটার মালিকপক্ষ নির্বিঘ্নে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি বর্ষা মৌসুমের পানি নেমে যাওয়ার পর চলতি মৌসুমে একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি সরকারি খাস জমি দখলে নিয়ে ইটভাটার ব্যবসা শুরু করেছেন। এ খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন এক সপ্তাহ আগে একটি ইটভাটার মালিকপক্ষকে সরকারি খাস জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য নোটিশ দিয়েছে এবং আরও ৪-৫টি ইটভাটার মালিকপক্ষকে নোটিশ দেওয়ার পক্রিয়া চলছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
অন্যদিকে নির্বিঘ্নে অবৈধ ইটভাটার ব্যবসায় লিপ্ত হওয়ায় কালো ধোঁয়া এবং ইটভাটাগুলোতে ব্যবহার করা কয়লা থেকে মারাত্মক ক্ষতিকর কার্বন মনোক্সাইড নির্গত হওয়ায় ইটভাটা সংলগ্ন কৃষি জমি ও কৃষিকাজে ব্যাঘাতসহ আশপাশের গ্রামের হাজারো মানুষ সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলে গ্রামবাসী জানিয়েছে।
জানা গেছে, ইটভাটা নির্মাণে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পরিবেশ আইন বা ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন উপেক্ষা করেই সিরাজদীখানের ধলেশ্বরী নদীর তীরে ৫০টি ইটভাটায় ইট তৈরির কাজ চলছে। পরিবেশ ছাড়পত্র, বিএসটিআই ছাড়পত্রসহ সরকারি নির্দেশনার নিয়মাবলি অমান্য করেই প্রভাবশালী ব্যক্তিরা অবৈধভাবে ইটভাটার ব্যবসা করছে। উপজেলার কুচিয়ামোড়া থেকে ধলেশ্বরী নদীর সীমানা নির্ধারণকৃত পিলার থেকে আরও ভেতরে ইট-সুরকি ও বালু দিয়ে নদী ভরাট করে ইটভাটা নির্মাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয় গ্রামবাসী। এসব ইটভাটার মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় খাসজমির মাটি কেটে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
মুন্সীগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের সিনিয়র কেমিষ্ট মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সিরাজদিখানে ৪২টি ইটখোলার মধ্যে ২৮ টি ইটখোলা হাইকোর্টে রিট করা তাই এদের নিয়ন্ত্রন আমাদের নিকট নেই। ইটখোলা চালু করলে বাকীদের বিরুদ্ধে ব্যবন্থা নিব। আমরা সময়মত মোবাইল কোর্টের সাপোর্ট পাই না তাই অনেক ক্ষেত্রে কিছুই করার থাকে না। অনেকে উপরের অফিসের সাথে মিলতাল করে ইটখোলা চালু রাখেন।
এ প্রসঙ্গে সিরাজদীখানের ইউএনও তারবীর মোহাম্মদ আজিম বলেন, সরকারি খাস জমি দখলে জড়িত থাকায় গত বছর দুটি ইটভাটার মালিকপক্ষকে সাজা দেওয়া হয়। এবারও অবৈধ ইটভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।