Opu Hasnat

আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার ২০২৪,

এ সরকারের বিগত ১০ বছরে দেশে দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে : নৌ-পরিবহন মন্ত্রী চট্টগ্রাম

এ সরকারের বিগত ১০ বছরে দেশে দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে : নৌ-পরিবহন মন্ত্রী

নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, এ সরকারের বিগত ১০ বছরে দেশে দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে অনেকদুর এগিয়ে গেছে দেশ। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মান কাজ প্রায় সম্পন্নের পথে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মান, বন্দরের আধুনিকায়ন ও বে টার্মিনাল নির্মান কাজসহ অসংখ্য বড়-ছোট প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। দেশের প্রত্যেকটি উন্নয়ন সূচক আজ দৃশ্যমান। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। চট্টগ্রাম নগরীর এম.এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম মাঠে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মঞ্চে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, রাজাকার-আলবদর বাহিনীকে নিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসলে দেশের মানুষ কখনো নিরাপদ থাকবে না। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসলে রাষ্ট্র নিরাপদ থাকবে। তাই সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখাসহ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মানে একাদশ জাতীয় সংসদ  নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত ‘নৌকা’ প্রতীকের প্রার্থী ও মহাজোটের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, সিটি কর্পোরেশনের তিন বারের সাবেক মেয়র ও বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী পুত্র ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ চট্টগ্রাম অঞ্চলের সকল ‘নৌকা’ প্রতিক ও মহাজোটের মনোনীত প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে সকলকে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।  স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসে জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধগণ ও বুদ্ধিজীবীসহ অসংখ্য মানুষকে তারা হত্যা করেছে। যুদ্ধাপরাধী নিজামী, মোজাহিদ ও সাকা চৌধুরীসহ অনেক রাজাকারকে মন্ত্রী পরিষদ গঠন করে তাদের গাড়ীতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছেন বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এটা বাঙ্গালী জাতির জন্য চরম অপমান ও কলঙ্ক। বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসতে না পেরে দেশের উন্নয়ন বাধাঁগ্রস্ত করতে দেশে জঙ্গিবাদ কায়েম, অগ্নি সন্ত্রাস ও পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ পুড়িয়ে মারছে। জাতির জনকের কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর এদেশের মাটিতে যুদ্ধাপরাধীর বিচার কাজ শুরু করেন। কাদের মোল্লা, সাকা চৌধুরীসহ অনেক রাজাকারের ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে। অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীরাও আইনের আওতায় আসছে। 

তিনি আরো বলেন, সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আবারও ক্ষমতায় আসলে  মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রেও কোটা সুবিধা বহাল থাকবে। মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা আগামীতে দেশ গড়ার নেতৃত্ব দিবে এবং আমরা তাদের পাশে থাকব। আগামী নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বিজয়ী হলে রাজাকার ও স্বাধীনতা বিরোধীদের তালিকা করা হবে। তাদের সন্তানেরা যাতে কোন সরকারি চাকরিতে নিয়োগ না পায় সে বিষয়টিও দেখা হবে। এদেশের মাটিতে জামায়াত-শিবির ও যুদ্ধাপরাধীদের ঠাঁই হবে না। 

মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিজয় মঞ্চে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ মুুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের মহাসচিব নৌ কমান্ডো এমদাদ হোসেন মতিন। শাহাব উদ্দিন মজুমদার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিজয় মঞ্চে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী এবিএম সুলতান আহমেদ, সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মহাসচিব ও সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক ওসমান আলী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় শেখ আতিকুর বাবু, শ্রমিক কর্মচারী-পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব কামরুল আলম সবুজ, মেলা পরিষদের কো-চেয়ারম্যান কমান্ডার সাহাবউদ্দিন, কো-চেয়ারম্যান এম.এন ইসলাম, কো-চেয়ারম্যান শহীদুল হক চৌধুরী সৈয়দ, কো-চেয়ারম্যান এ.কে.এম সরোয়ার কামাল দুলু, কো-চেয়ারম্যান মোঃ নুর উদ্দিন, অর্থ সচিব সাধন চন্দ্র বিশ্বাস, শৃঙ্খলা উপ কমিটির আহ্বায়ক খোরশেদ আলম (যুদ্ধাহত), রাঙ্গামাটি জেলা কমান্ডার রবার্ট রোনাল্ড পিন্টু, মুক্তিযোদ্ধা জমায়েত কমিটির সদস্য আবদুর রাজ্জাক প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে নৌ পরিবহন মন্ত্রীর হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমদ। সমাবেশ শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা ইউনিট কমান্ড, উপজেলা ও থানা কমান্ডের নেতৃবৃন্দ, সর্বস্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের লোকজন, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, সাংস্কৃতিকসেবী এবং পেশাজীবীসহ সর্বস্তরের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার মঞ্চে বিপুল পাল ও সুরঞ্জনা চৌধুরীর সঞ্চালনায় দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন অবকাশ ধারা শিল্পী সংস্থা, সপ্তডিঙ্গা শিল্পাঙ্গন, সতীশ ললিতকলা একাডেমী, আবাহন শিল্পী গোষ্ঠী ও সুরধ্বনি সংগীত নিকেনতন। দলীয় নৃত্য বায়েজীদ কবি নজরুল একাডেমী ও চারুকা নৃত্যকলা একাডেমী। আবৃত্তি করেন শব্দ নোঙ্গর আবৃত্তি সংগঠন। একক সঙ্গীত পরিবেশ করেন  বেতার-টিভি শিল্পী পলি শারমিন, রায়হান সুলতানা নিহা, মো প্রিয়া দত্ত, ও বিপুল দে।