উন্নয়নের আকাঙ্খার শেষ নেই, তবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ কামনা তাঁদের ঝালকাঠি / 
ঝালকাঠি জেলায় বিগত ১০ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে তাতে সন্তুষ্ট দ্বিতীয় কলকাতা খ্যাত ব্যবসা কেন্দ্র ঝালকাঠির ব্যবসায়ীরা। তবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকলে দেশবাসীর শান্তির পাশাপাশি ব্যবসা পরিচালনা আরো সমৃদ্ধ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন ঝালকাঠির বিশিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ী খোকন লাল ব্র⊃2; জানান, বর্তমান সরকার বিগত ১০ বছরে যে উন্নয়ন করেছে এবং যে সব উন্নয়ন কাজ চলমান আছে তা দেশের জনসাধারনসহ সর্ব শ্রেণির মানুষের জন্য সন্তোষজনক। মৌল মানবিক চাহিদা যেমন খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ও চিত্তবিনোদন সব কয়টি ক্ষেত্রেই বর্তমান সরকার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ণ, পোশাকখাতে আধুনিকীকরণ, ভূমিহীনদের আশ্রয়ে আবাসন প্রকল্প, দেশের ৫৬০টি উপজেলায় কলেজ সরকারীকরণ এবং গ্রামীন জনপদে অবস্থিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো ও শিক্ষার মান উন্নয়ন, প্রতিটি বিভাগে পুর্ণাঙ্গ ও পৃথক মেডিকেল কলেজ নির্মাণ এবং দক্ষ জনবল তৈরীর উদ্যোগ, ডিজিটালাইজেশনের ফলে বিনোদনের সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের পরিবেশ শান্ত থাকলে ব্যবসা বাণিজ্য ভালো হবে। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ হবে। তিনি আরো জানান, বাংলার সুয়েজ খাল খ্যাত ঝালকাঠির গাবখান নদী ড্রেজার দিয়ে খননের বালু সুগন্ধা নদী থেকে বাসন্ডা খালের প্রবেশদ্বারে পড়ে চর জেগে উঠেছে। যার ফলে ঝালকাঠির ব্যবসায়ীদের মালবাহি জাহাজ প্রবেশ করতে জোয়ারের অপেক্ষায় বসে থাকতে হয়। মাঘ-ফাল্গুন, চৈত্র ও বৈশাখ মাসে এ সমস্যা আরো প্রকট হবে। তাতে ব্যবসায়ীদের মারাত্মক সমস্যা হবে এবং মাল গুদামজাত করণে অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হবে। খালের প্রবেশদ্বার দ্রæত খনন করে ব্যবসায়ীদের জাহাজ চলাচলে স্বাভাবিক করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় সুবিবেচনা করে সঠিকভাবে ভোট দেয়ার আহŸান জানান।
ঝালকাঠি বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি, জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগ সহসভাপতি সালাহউদ্দিন আহমেদ সালেক জানান, স্বাধীনতা পূর্ববর্তি এবং পরবর্তি সময়ে কলকাতার বড় জাহাজ (বার্জ) ঝালকাঠিতে এসে মালামাল উঠানামা করতো তাই ঝালকাঠিকে দ্বিতীয় কলকাতা বলা হতো। তখন সড়ক যোগাযোগের ব্যবস্থা উন্নত না থাকার কারণে নদী পথেই সকল মালামাল বহন করা হতো। বৃহত্তর ফরিদপুর ও বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলায় ঝালকাঠি থেকে মাল সরবরাহ করা হতো। ব্যবসায়ীরা মাল নিয়ে বিক্রি করে দাম পরিশোধ করতো। বর্তমানে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও ব্যাংকের ঋণের মাধ্যমে আর্থিক যোগান পাবার ফলে চট্টগ্রাম ও মংলা নৌ-বন্দর থেকে সরাসরি মালামাল নেয়। ঝালকাঠিসহ সারাদেশে গত ১০ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে তাতে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন অবহেলিত দক্ষিণ জনপদে গ্যাস আসছে। আরো বেশ কিছু উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান আছে। সেই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে নৌকায় ভোট দেয়ার বিকল্প নেই।
ঝালকাঠি জেলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি, জেলা পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মাহবুব হোসেন জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা যাকে ভোট দেবো তিনি যেন মন্ত্রী হতে পারেন। কারণ মন্ত্রী না হলে শুধু এমপি থাকলে তার দ্বারা বড় কোন উন্নয়ন সম্ভব না। এমপির বরাদ্দ থাকে শুধুমাত্র টিআর, জিআর, কাবিখা, কাবিটা এবং ছোট ছোট ব্রিজ-কালভার্ট ইত্যাদি। তিনি আরো জানান, আওয়ামীলীগ সরকার পুনরায় নির্বাচিত হলে মেঘা প্রকল্পগুলোর কাজ সমাপ্ত হবে। গ্রামীন জনপদের উন্নয়নে গ্রামকে শহরে রূপান্তর করবে। বিগত ১০ বছরের উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। নি¤œ আয়ের দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হয়ে আন্তর্জাতিকভাবে মাথা উচু করে দাড়িয়েছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় আওয়ামীলীগকে আরেক নির্বাচিত করা দরকার। তাই আগামী ৩০ তারিখে সব ব্যবসায়ীদের নিয়ে নৌকা প্রতিকে ভোট দেয়া আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ঝালকাঠি জেলা বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সরদার মোঃ শাহ আলম জানান, শান্তিপ্রিয় জনগোষ্ঠি শান্তিতে বসবাস ও ব্যবসা পরিচালনা করতে চাচ্ছেন। রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে যারা থাকে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় তারাই মূল চাবিকাঠি। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আওয়ামীলীগ সরকার টানা ১০টি বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছেন। এদেশে বিভিন্ন গোষ্ঠি জঙ্গি, সন্ত্রাসবাদ ও মৌলবাদ সৃষ্টির মাধ্যমে অরাজকতা করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার পায়তারা করছিলো। আওয়ামীলীগ সরকার সুষ্ঠপরিকল্পনার মাধ্যমে সেগুলোকে কঠোর হস্তে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়ে সর্বপ্রকার উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। যার ফল ভোগ করছেন দেশের শান্তিপ্রিয় প্রতিটি জনসাধারন। জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি থাকলে জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং শিল্পকারখানাও ভালো চলে। এ কারণে দেশের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়ে নি¤œ আয়ের দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ভালো কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ কয়েকটি সম্মাননা পেয়েছেন। পদ্মা সেতু, পায়রা বন্দরসহ দেশের মেঘা প্রকল্পগুলো (বড় বড় প্রকল্প) গ্রহণ করেছেন।
এ উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্য নৌকা প্রতিকে ভোট দেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। ঝালকাঠির ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা অত্যান্ত ভাগ্যবান ঝালকাঠির কৃতি সন্তান আমির হোসেন আমু’র মতো একজন জাতীয় নেতা পেয়েছি। যিনি আমাদের এমপি এবং বর্তমানে শিল্পমন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। সেই সুবাদে ঝালকাঠি জেলার সর্বস্তরের স্কুল, কলেজ মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দিরসহ সকল প্রতিষ্ঠানের সমানভাবে উন্নয়ন করেছেন। বেশ কিছু উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান আছে। পল্লী বিদ্যুৎ, যুব উন্নয়ন, টিটিসি, পিটিআই, নার্সিং ইন্সটিটিউট, ম্যাটস, সদর হাসপাতাল, শিল্পকলা, বিসিক এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে তার অবদান সীমাহীন। সুগন্ধা নদী থেকে প্রবেশদ্বার বাসন্ডা খালের মুখে গাবখান খননের বালুর চর পড়ায় ব্যবসায়ীদের মালামাল বহনে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বাসন্ডা খান খনন, গ্রামীণ জনপদের কিছু রাস্তাঘাট উন্নয়ন এবং এ এলাকায় শিল্প উদ্যোক্তারা এগিয়ে এসে বৃহদাকারের শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হলে কর্মসংস্থান সৃষ্টির ফলে বেকারত্ব করতে নৌকা প্রতিকে ভোট দেয়ার আহŸান জানান তিনি।