Opu Hasnat

আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ২০২৪,

চট্টগ্রামে পাঁচ জয়িতার সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান

নারী সমাজকে শিক্ষিত ও সচেতন করতে হবে : তিবরীজি চট্টগ্রাম

নারী সমাজকে শিক্ষিত ও সচেতন করতে হবে : তিবরীজি

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) ও উপসচিব ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেছেন, নারীদের বাদ দিয়ে দেশের কাক্সিক্ষত উন্নয়ন কখনো সম্ভব নয়। এ জন্য নারী সমাজকে শিক্ষিত ও সচেতন করতে হবে। অন্যথায় তাদের সন্তান ও পরিবার শিক্ষিত হবে না। একই সাথে স্বাস্থ্য, সমাজের অবক্ষয়, মাদক, জঙ্গি ও সন্ত্রাস সম্পর্কে ও নারীদের সচেতন থাকতে হবে। এতে করে দেশের প্রকৃত পরিবর্তন সাধিত হবে। 

রোববার সকাল ১১টায় নগরীর নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটিস্থ জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস- ২০১৮ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও জেলা পর্যায়ে নির্বাচিত জয়িতাদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সরকারের  মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উদ্যোগে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা একজন সফল নারী। তিনি ক্ষমতায় আসার পর নারীদের কল্যাণে নানামুখী অনেক কর্মসূচি ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করেছেন। আরো অনেক কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। দেশের সকল কর্মকান্ডে নারীদের সম্পৃক্ত করতে সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তা বাস্তবায়ন করতে হলে সকলের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।  জয়িতারা অনেক ক্ষেত্রে ত্যাগ ও প্রতিকুলতাকে পেছনে  ফেলে জীবন-সংগ্রাম করে এগিয়ে গেছে। সৎ মানসিকতা ও আত্মবিশ্বাস থাকার কারণে জয়িতারা  দেশে আজ স্বাবলম্বী হয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে দিন কাটাচ্ছে। সমাজ উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে অংশ দিয়ে তারা আজ জয়িতা হিসেবে সরকারিভাবে সম্মাননা পাচ্ছেন। অন্যান্য নারীরাও নিজ নিজ কর্ম দক্ষতার মাধ্যমে এগিয়ে আসলে তাঁরা সমাজে আর বোঝা হয়ে থাকবে না। এদেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক হচ্ছে নারী। এসব নারীদের অবহেলিত রেখে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নেয়া যাবে না। সরকারের প্রত্যেক কাজে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত হলে আগামী ২০২১ সালের আগে এদেশ একটি মধ্যম আয়ের, ২০৩০ সালে এসডিজি অর্জন ও ২০৪১ সালের মধ্যে এ দেশ একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। 

জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা অঞ্জনা ভট্টাচার্য বলেন, বেগম রোকেয়া নারী সমাজের জন্য সূর্য। নারী জাগরণের পথিকৃৎ হয়ে তিনি বিশ্বে স্বাক্ষর রেখেছেন। সমাজের নারীরা বেগম রোকেয়ার চরিত্র ধারণ করে দেশের উন্নয়নের এগিয়ে আসলে একদিকে নিজেরা স্বাবলম্বী হবে অন্যদিকে দেশও স্বাবলম্বী হবে। সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ার বিনির্মাণে জীবন যুদ্ধ করে প্রত্যেক নারীকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন এবং বাল্য বিবাহ রোধসহ প্রত্যেক অনৈতিক কর্মকান্ড সম্পর্কে নারীদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জয়িতারা তাদের কাজের অনুভূতি ও সাফল্যের কথা তুলে ধরেন।

জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা অঞ্জনা ভট্টাচার্যের  সভাপতিত্বে ও মো. জসিম উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও জয়িতাদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি  ছিলেন দৈনিক পূর্বকোণের সিনিয়র সহ-সম্পাদক ডেইজি মওদুদ, নারী উন্নয়ন সংস্থা ইলমা’র প্রধান নির্বাহী জেসমিন সুলতানা পারু, কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল সুপার রোকেয়া বেগম, লোহাগাড়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মেহের আফরোজ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রোগ্রাম অফিসার নীতা চাকমা।

অনুষ্ঠান শেষে জেলা পর্যায়ে  পাঁচ ক্যাটাগরিতে পাঁচ জন জয়িতাকে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি। সম্মাননা প্রাপ্ত জয়িতারা হচ্ছে অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট এলাকার আবুল কালামের স্ত্রী দৌলতুন্নেছা, শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী বাঁশখালী উপজেলার জলদী এলাকার স্বপনেন্দু দের কন্যা ডা. সুপর্ণা দে সিম্পু, সফল জননী ফটিকছড়ির ভুজপুর থানাধীন পূর্ব ফটিকছড়ির মরহুম সৈয়দুর রহমানের স্ত্রী বেগম আঞ্জুমা খাতুন, নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যোমে জীবন শুরু করা নারী লোহাগাড়ার আমিরাবাদস্থ সুখছড়ি এলাকার বাদল কান্তি চক্রবর্তীর স্ত্রী রত্না চক্রবর্তী এবং সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখা বোয়ালখালীর পশ্চিম গোমদন্ডী এলাকার মো. মোক্তার হোসেনের স্ত্রী পারভীন  আক্তার। জয়িতাদের সম্মানা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, এনজিও, নারী সংগঠন ও সুশীল সমাজের নারী নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।